এনএফবি, মালদাঃ
একেবারে দিনে দুপুরে চলছে গাছ চুরি। নদী বাঁধ থেকে বহুমূল্য গাছ কেটে উধাও করে দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা।
মালদহের ভুতনিতে চলছে অবাধে গাছ কাটা। নেপথ্যে রয়েছে শক্তিশালী চক্র।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, এভাবে গাছ কাটা চললে বিপন্ন হতে পারে নদী বাঁধ। ভুতনির শংকরটোলা এলাকায় রয়েছে সরকারি রিং বাঁধ। যার একদিকে ফুলাহার নদী, অন্যদিকে গঙ্গা।
মানিকচকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে বন্যা থেকে বাঁচাতে তৈরি হয় এই নদী বাঁধ। আর এই নদীবাঁধকে শক্তপোক্ত করতে প্রায় দু’দশক আগে তৎকালীন মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে বাঁধে বনসৃজন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সারি দিয়ে লাগানো হয় মেহগনি, শিশু, আকাশমনি প্রভৃতি গাছ। বর্তমানে এই গাছগুলি অনেকটাই বড় আর মোটা হয়েছে। এই গাছগুলিতেই নজর পড়েছে কাঠের চোরা কারবারিদের। যারা সুযোগ বুঝে গাছ কেটে উধাও করে দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই গত কয়েকদিনে ওই এলাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু গাছ।
বছরদুয়েক আগেও একবার ওই এলাকায় গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। সেইসময় প্রতিবাদ ও আন্দোলনে নামে একাধিক দল ও সংগঠন। থানায় গিয়ে বিক্ষোভ, স্মারকলিপি প্রদানের মতো কর্মসূচিও হয়। এরপর কিছুদিন বন্ধ ছিল গাছ কেটে নেওয়ার মতো ঘটনা।
কিন্তু, ফের নদী বাঁধ থেকে গাছ চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। ওই এলাকায় নদীবাঁধ বেশ কিছুটা নির্জন। এই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে দুষ্কৃতীরা।
এদিকে গাছ কাটা নিয়ে প্রতিবাদ করলে স্থানীয়দের বেশ কয়েকজনকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। গাছকাটার ঘটনার পেছনে শক্তিশালী চক্র জড়িত থাকার বিষয়টিও প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও ভয়ে আতঙ্কে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না এলাকার বাসিন্দারা।
ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধীরা। সিপিএম নেতা শ্যামল বসাক বলেন, শংকরটোলা বাঁধে যে গাছগুলি কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটছে সেগুলি সরকারি গাছ। পঞ্চায়েত সমিতির বনসৃজন প্রকল্পে ওই গাছ লাগানো হয়েছিল। অথচ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না ব্লক প্রশাসন বা পঞ্চায়েত সমিতি। পুলিশ বা শাসকদলের মদত ছাড়া এমন ঘটনা অসম্ভব। এই ইস্যুতে আন্দোলনের নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বামেরা।
গাছ কাটানোর ঘটনায় সরব হয়েছে বিজেপিও। বিজেপি নেতা গৌড়চন্দ্র মন্ডল বলেন, প্রশাসন ও বনদপ্তরের উচিত অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করা। শুধু তাই নয়, এর পেছনে যাঁরা আছে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
যদিও ঘটনার সঙ্গে দলের জড়িত থাকার অভিযোগ উড়িয়েছে তৃণমূল। মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি কবিতা মন্ডল বলেন, গাছকাটার বিষয়টি পঞ্চায়েত সমিতির জানা নেই। এবিষয়ে পুলিশ ও বনদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে দল দুষ্কৃতীদের কোনওরকম আড়াল বা মদত করবে না বলেও জানিয়েছেন সভাপতি।