স্থানীয়

বিশ্ব ভ্রমণে অক্ষয়

এনএফবি, ঝাড়গ্রামঃ

পুরুলিয়ার বাগমুন্ডি থানার বুড়দা গ্রামের ছেলেটির শখ সাইকেলে করে পুরো বিশ্ব ভ্রমণ করার। ছেলেটির নাম অক্ষয় ভকত। শনিবার রাত্রি ৯টা নাগাদ সাইকেলে করে ঝাড়গ্রামে এসে পৌঁছায় অক্ষয়। অক্ষয়কে সংবর্ধনা জানাতে হাজির হয় ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, ঝাড়গ্রাম সাইকেল রাইডার্সের সদস্যরা। ঝাড়গ্রাম রিপোর্টার্স ক্লাবের পক্ষ থেকেও অক্ষয়কে সংবর্ধনা জানানো হয়। অক্ষয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, “আমি এখন ঝাড়গ্রাম পৌঁছেছি। ঝাড়গ্রাম থেকে কলকাতা হয়ে দিল্লি যাব। দিল্লি থেকে সোজা চলে যাব ইজিপ্ট। আমার ইচ্ছে রয়েছে পুরো আফ্রিকা মহাদেশ ঘোরার পর ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়া মহাদেশ হয়ে বাড়ি ফেরার। প্রায় ৫ থেকে ৭ বছরের আমার এই জার্নি রয়েছে। আমার লক্ষ্য আছে যে সারা পৃথিবী জুড়ে পরিবেশ রক্ষার বার্তা দেওয়ার। তাছাড়াও আমার ইচ্ছে রয়েছে প্রতিটি দেশে একটি করে গাছ লাগাব। বিশ্ব শান্তির বার্তা এবং ভারতীয় সংস্কৃতিকে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরবো এটাই আমার লক্ষ্য, আমি এই লক্ষ্য ধরে এগিয়ে চলছি।” সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, “আমার ছোট থেকে একটা স্বপ্ন ছিল, স্বামী বিবেকানন্দের মত পায়ে হেঁটে বিশ্ব ভ্রমণ করার। যখন আমি পড়াশোনা করি তখন আরও ভালোভাবে বুঝতে পারি আমি মাত্র মাধ্যমিক পাস। কিন্তু আমি লাইব্রেরীতে অনেক বই পড়েছি। আমি যত বই পড়ি তত আমার মনের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস জাগে যে আমি পায়ে হেঁটে না হলেও সাইকেলে পুরো বিশ্ব ভ্রমণ করতে পারব। কারণ আমি পেপার ও লটারি বিক্রি করতাম সাইকেল নিয়ে। আমি সেই লক্ষ্য নিয়েই ২০১৮ সালে প্রথম বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ি বাল্যবিবাহ নিয়ে মানুষকে সচেতন করার জন্য। এ লক্ষ্য নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি, কাশ্মীর, পাঞ্জাব, হিমাচল, ছত্রিশগড়, কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ, গোয়া, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা ভারত জুড়ে ঘুরে বাড়ি পৌঁছায়। তারপরে আবার লকডাউনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ি। এখান থেকে চলে যায় বেনারস, দিল্লি, চণ্ডীগড়, শিমলা, কুলু, লে, লাদাখ, কাশ্মীর, জম্বু হয়ে বাড়ি ফিরি। লাদাখে একটি পাহাড় আছে যার নাম ওমিংলা। ওমিংলা হচ্ছে উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ। সেখানে বিশ্বের প্রথম নাগরিক হিসেবে আমি সাইকেলে পৌঁছাই। এতে আমি গ্রিনিজ বুকে নাম তুলেছি।” এরপরেই বিশ্বভ্রমণ করার ইচ্ছেটা পেয়ে বসে অক্ষয়ের মনে। বাড়িতে রয়েছেন মা-বাবা ও এক ছোট বোন। সকলের ভালোবাসাকে সঙ্গী করেই অক্ষয়ের সাইকেল এগিয়ে চলেছে বিশ্ব ভ্রমণের পথে।