স্থানীয়

পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে বধূ হত্যার অভিযোগ, চাঞ্চল্য

এনএফবি,পূর্ব মেদিনীপুরঃ

গৃহবধূকে বাড়ির মধ্যে আটকে রেখে খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্য মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা বলে চালানোর অভিযোগ উঠল পুলিশ কর্মী স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। এমনকি মৃত গৃহবধূকে হাসপাতালে রেখে পালালো শ্বশুর বাড়ির সদস্যরাও। মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি থানার হইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলতাবেড়িয়া গ্রামে।

অশোক মাইতি ৷ মৃতের আত্মীয়

পুলিশ জানিয়েছে মৃত গৃহবধূর নাম চামেলি সিংহ, যার বয়স আনুমানিক ২৬ বছর। মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর তদন্ত শুরু করেছে কাঁথি থানার পুলিশ। মৃত বধূর বাপের বাড়ির সদস্যরা খুনের অভিযোগে সরব হয়েছেন ইতিমধ্যেই। কাঁথি থানার পুলিশ মৃত দেহটিকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মহাকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত গৃহবধূর মা থেকে আত্মীয়- পরিজনরা। এমনকি হাসপাতালে ভর্তি করার সময় কোন নাম ঠিকানা ছাড়াই ভর্তি করে তার পরিবারের সদস্যরা বলে বাপের বাড়ির অভিযোগ।

শোকাহত পরিবার ৷ নিজস্ব চিত্র

সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর আগে কাঁথির আলালপুর গ্রামের চামেলি মাইতির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কাঁথি থানার হইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলতাবেড়িয়া গ্রামের পুলিশ কর্মী অজয় সিংহ। তিনি কলকাতা পুলিশে কর্মরত। পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রায়ই ওই গৃহবধূর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাও এমনটাই অভিযোগ বাপের বাড়ির সদস্যদের। তার মাঝেও একটি শিশু কন্যা জন্ম নেয় । ৫ বছরের শিশু কন্যার মুখের দিকে তাকিয়ে শ্বশুর বাড়ির অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছিলেন ওই বধূ ৷ বৃহস্পতিবার নেমে আসে চরম পরিণতি। বাড়ির দরজা বন্ধ করে বধূকে মারধর করে জোর করে মুখে বিষ ঢেলে দেয় শ্বশুরবাড়ি সদস্যরা বলে অভিযোগ। আর প্রতিবেশী থেকে বাপের বাড়ির সদস্যদের চোখে ধুলো দিতে অবশেষে হাসপাতালে নিয়ে আসে শ্বশুর বাড়ি সদস্যরা। ওই গৃহবধূকে ভর্তি করে শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা, সেখানেই ওই গৃহবধূকে মৃত বলে ঘোষণা করে চিকিৎসক ৷ এরপর হাসপাতাল থেকে চম্পট দেয় স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন মৃত গৃহবধূর বাপের বাড়ির সদস্যরা থেকে আত্মীয় পরিজনরা। আর খুনের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন মৃত বধূর বাপের বাড়ির সদস্যরা। মৃত বধূর বাবা গৌতম মাইতি অভিযোগ করে বলেন ” তার মেয়েকে খুন করে জোর করে প্রমাণ লোপাটের জন্য মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছে। হাসপাতালে রোগীকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা। যদি আত্মহত্যা করে থাকে তাহলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেলেন কেন ? মেয়ের মৃত্যুর প্রকৃত তদন্ত চাই। পুলিশকর্মী থাকার কারণে তদন্তে গাফিলতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি “। কাঁথি থানার পুলিশ আধিকারিক বলেন ” মৃত দেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” যদিও তদন্তের কারণে বেশি কিছু তথ্য জানাতে রাজি হননি তিনি ।

যদিও মৃতের শ্বশুর বাড়ি থেকে স্বামীর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। একাধিকবার পরিবারের সদস্যদের ফোন করা হলে ফোন বন্ধ থাকার কারণে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আর এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে।

নিউজ ফ্রন্ট বাংলার অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন টি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।