ফিচারস্থানীয়

শ্লীলতাহানির অভিযোগে অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরকে গ্রেফতারের দাবিতে মহিলাদের ডেপুটেশন

এনএফবি,পূর্ব মেদিনীপুরঃ

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে কাঁথির রাজপথে নামলো মহিলারা। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে পুরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলেম আলি খানের গ্রেফতারের দাবিতে পথে নামল নির্যাতিতা মহিলা। ওই নির্যাতিতা মহিলার পাশে দাঁড়াতে প্রায় শতাধিক মহিলারা মিছিলে অংশ নেন।

এদিন , কাঁথি শহরের কাঁথি আউটডোর মোড় থেকে মিছিল করে কাঁথি থানার সামনে জমায়েত করে নির্যাতিতা মহিলা সহ শতাধিক মহিলারা। এরপর কাঁথি পুরসভার ৪ নং কাউন্সিলর আলেম আলি খানের গ্রেফতারের দাবিতে থানার সামনে পথসভা করেন। এরপর কাঁথি থানায় ডেপুটেশন দিতে যান। কাঁথি থানা থেকে জানানো হয় কাঁথি মহিলা থানায় ডেপুটেশন দিতে হবে। পরে চার সদস্যের মহিলা প্রতিনিধি দল কাঁথি মহিলা থানায় ডেপুটেশন দিতে যান। কাঁথি মহিলা থানার ওসি রুমা মণ্ডল ডেপুটেশন গ্রহণ করেন৷

জানাগেছে ,দিন কয়েক আগে শ্লীলতাহানির মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে রাজপথে নামে কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধান সুবল মান্না, পটাশপুরে বিধায়ক উত্তম বারিক, শ্লীলতাহানি অভিযোগ ওঠা কাউন্সিলর আলেম আলী খান সহ বেশ কয়েক জন কাউন্সিলর কাঁথি থানার সামনে ঘেরাও করে ডেপুটেশন দেন৷ শ্লীলতাহানি অভিযোগে অভিযুক্ত আলেম আলী খান বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন , মিথ্যা অভিযোগে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। দোষ প্রমাণিত হলে কাঁথি শহরের বাসিন্দাদের কাছে নতমস্তকে ক্ষমা চাইবেন তিনি । এরপর কাঁথি থানার পুলিশের কাছে একটি ডেপুটেশন দেন তারা। তারই পাল্টা হিসেবে প্রচণ্ড বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে কাউন্সিলর আলেম আলি খানের গ্রেফতারের দাবিতে পথে নামে নির্যাতিতা মহিলা সহ কাঁথি শহরের এক ঝাঁক প্রতিবাদী মহিলা। হাতে প্ল্যাকার্ড, পোস্টার ও ফেস্টুন সহ শহরের রাজপথে মৌন মিছিল করে কাঁথি থানায় এসে হাজির হন। মৌন মিছিলের সময় মহিলাদের হাতে কাউন্সিলর আলেম আলি খাঁনের উত্তেজনার মুহূর্তের ছবি ছিল বলেও জানাগেছে । প্রত্যেকের মুখে কালো কাপড় বাঁধা ছিল। প্রথমে কাঁথি থানায় উপস্থিত হন তারা। সেখান থেকে কাঁথি মহিলা থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকজন মহিলা প্রতিনিধি কাঁথি মহিলা থানার ওসির কাছে ডেপুটেশন দেন।

আর ও জানা গেছে, গত ২৯ জুন কাঁথি পুরসভার জয়ী নির্দল প্রার্থী সুময় দাস বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে পুরপ্রধান সুবল মান্নার কাছে হাজির হন। সেখানে উপস্থিত হন ওই ওয়ার্ডের পরাজিত তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তরুণ কুমার বেরা সহ অনুগামীরা। সেখানেই প্রাক্তন ও বর্তমান কাউন্সিলরের মারধরের ঘটনা ঘটে। দুজনই একে অপরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কাউন্সিলরের উপর হামলার প্রতিবাদে কাঁথি পুরসভার পুর প্রধানের কাছে ডেপুটেশন দিতে আসেন মহিলারা। সেখানে পুরসভার মহিলাকর্মীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ ওঠে কাউন্সিলর আলেম আলি খানের বিরুদ্ধে। সুবিচার চেয়ে কাঁথি মহিলা থানার লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে আসেন৷ অভিযোগ না নিয়ে মহিলাকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এরপর মহিলা কিন্তু থেমে থাকেননি। ডাকযোগে কাঁথি মহিলা থানা, পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশ সুপার, রাজ্য মহিলা কমিশনে ভিডিও সহ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন৷ শ্লীলতাহানি শিকার নির্যাতিতা মহিলা তথা পুরকর্মী বলেন ” সুবিচার চেয়ে কাঁথি মহিলা থানার ওসির কাছে ডেপুটেশন দিলাম। ওসি আমাদের দাবি মেনে ডেপুটেশন গ্রহণ করেছেন। আগামী দিনে অভিযুক্তদের উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দেন “। ডেপুটেশন দিতে আসা এক মহিলা বলেন ” পুরপ্রধানের মদতে এমন ঘটনা ঘটেছে। তারপরেও পুরপ্রধান আমাদের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করছেন, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাচ্ছেন, জনসভায় বক্তব্য রাখছেন “।

কাঁথির বিজেপির মণ্ডলের সভাপতি তথা কাঁথি পুরসভার কাউন্সিলর সুশীল দাস বলেন ” আমরাও শ্লীলতাহানি শিকার মহিলার ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। আন্দোলনটা অনেক দেরি হয়ে গেল। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি মহিলাকে ধাক্কা মেরে রুম থেকে বের করে দিচ্ছে। এ জিনিস আগে পুরসভাতে আমরা দেখিনি। এরা কোন দিন শাস্তি পাবে না। কারণ এরা শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস করে”।

নিউজ ফ্রন্ট বাংলার অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন টি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।