তাপমাত্রা ও অনাবৃষ্টির ফলে কুমড়ো চাষিদের কপালে হাত
এনএফবি, বালুরঘাটঃ
আকাশে মেঘের দেখা নেই। চড়া রোদে ক্ষতি হচ্ছে সব্জি চাষের। তীব্র তাপপ্রবাহের জেরে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছের পাতা। বাড়ছে রোগ পোকার আক্রমণ। গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়ায় ফসলের উৎপাদনও কমার আশঙ্কা রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে দক্ষিন দিনাজপুর জেলায় সব্জি চাষিদের সঙ্কটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যদিও উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক সুমন কড়াল জানান, “সাম্প্রতিক তাপপ্রবাহের জন্য জেলা জুড়ে সব্জির ফলনের ক্ষেত্রে অসুবিধে হচ্ছে। প্রচণ্ড রোদে ফসলে রোগের উপদ্রবও বাড়ছে। তবে দফতরের কর্মীরা খবর পেয়ে এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি পরিদর্শন করছেন। প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে”- বলে তিনি জানান।
উদ্যান পালন দফতর সূত্রে খবর, জেলায় গত কয়েকদিন তাপমাত্রার পারদ ৪০-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্য ঘোরাফেরা করেছে। কয়েকদিন আগে জেলায় ৪৩ ডিগ্রি পর্যন্তও তাপমাত্রা উঠে গিয়েছিল। যদিও গ্রীষ্মকালীন সব্জি চাষে ৩৫-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় ফসলের কোনও ক্ষতি হয় না।কিন্তু এবার পরিস্থিতি অনন্যরকম হওয়ায় সবজি চাষে ক্ষতির আশংকা দেখা দিতে পারে।

ইতিমধ্যে এই অনাবৃষ্টির দরুন বালুরঘাট ব্লকের দুর্লভপুর, বোয়ালদার, খাসপুর এলাকায় কুমড়ো চাষে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে এলাকার চাষিদের। মাঠেই পচে যাচ্ছে ফসল।গাছের গোড়ায় পচন ধরছে।যার ফলে এবার কুমড়ো চাষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলে আশংকা।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের চকভৃগু, বোয়ালদাড় এবং বোল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকায় মিষ্টি কুমড়ো চাষ হয়। পলিমাটি হওয়ায় এই এলাকায় মরসুমি মিষ্টি কুমড়ো চাষ ব্যাপক হারে হয়। প্রত্যেক বছর কয়েক হাজার কৃষক এই মিষ্টি কুমড়োর চাষ করেন। এবারেও বালুরঘাট ব্লকে প্রায় ১৩০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়োর চাষ করেছেন কৃষকরা। একদিকে জমিতে মিষ্টি কুমড়ো চাষ করতে বিঘা প্রতি প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ভালোমতো ফসল হলে এক বিঘা জমিতে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কুইন্টাল মিষ্টি কুমড়ো হয়। আর বাজারে ঠিকমতো দাম থাকলে বিঘা প্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ হয়। কিন্তু এবার বৃষ্টির দেখা না মেলায় লাভ করা তো দুরের ব্যাপার আসল টাকাই উঠবে কিনা সন্দেহ দানা বেধেছে কুমড়ো চাষিদের মধ্যে।
অপরদিকে জেলার বহু চাষিই এখন থেকেই বর্ষার সব্জি চারা রোপণ করে থাকেন।আর এই সময়ই পাট চাষও শুরু হয়। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় সব্জি ছাড়াও পাট চাষেও ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।