স্টিফেনের ভুলেই ওড়িশা ম্যাচে ফের আটকে গেলো ইস্টবেঙ্গল
এনএফবি, স্পোর্টস ডেস্কঃ
জেতার মতো পারফরম্যান্স দেখানো সত্ত্বেও সুপার কাপের প্রথম ম্যাচে জিততে পারল না ইস্টবেঙ্গল। এ বারের আইএসএলে যারা জেতার জায়গায় গিয়েও ১৩ পয়েন্ট খুইয়েছে, সেই লাল-হলুদ ব্রিগেড হিরো সুপার কাপের প্রথম ম্যাচেও একই ভাবে ৭৩ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ১-১ ড্র করে মাঠ ছাড়ল। ম্যাচের ৩৮ মিনিটের মাথায় কাজের কাজটি করে ফেলেন ইস্টবেঙ্গলের মিডফিল্ডার মোবাশির রহমান। তিনিই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। ওডিশার বক্সের সামনে নরেন্দ্র গেহলটের পা থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে বক্সে ঢুকে কোণাকুনি শট নেন মোবাশির, যা দ্বিতীয় পোস্টে লেগে গোলে ঢুকে যায় (১-০)।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে কিরিয়াকুর জায়গায় ভিপি সুহেরকে নামায় ইস্টবেঙ্গল। আক্রমণের তীব্রতা বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেন তাদের কোচ স্টিফেন কনস্টান্টাইন। প্রথমার্ধে ডানদিক দিয়ে সে রকম আক্রমণ না হওয়ায় সম্ভবত সুহেরকে নামান তিনি। ৪৮ মিনিটের মাথায় উন্নিকৃষ্ণন ডানদিকের উইং থেকে যে ক্রস বাড়ান জেক জার্ভিসের উদ্দেশ্যে, তাতে মাথা ছোঁয়াতে পারলে হয়তো গোল পেয়ে যেতেন ব্রিটিশ ফরোয়ার্ড।
দু’মিনিট পরেই ক্লেটন সিলভার বাড়ানো বল নিয়ে বক্সে ঢুকে গোলের উদ্দেশ্যে কোণাকুনি শট নেন জার্ভিস। কিন্তু তা রুখে দেন ওডিশার গোলরক্ষক অমরিন্দর সিং। বিপক্ষের ওপর চাপ বজায় রাখে ইল্টবেঙ্গল। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া সুহেরের দূরপাল্লার শট বারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
৬০ মিনিটে আরও একটি গোলের সম্ভাবনা তৈরি করে ইস্টবেঙ্গল এফসি। সুহের ডানদিক থেকে ক্রস বাড়ান বক্সের মধ্যে। জার্ভিস নিজে গোল করতে না পেরে তা পিছন দিকে ক্লেটনের কাছে পাঠান। ক্লেটন প্রায় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গোলে শট নিলেও তা অমরিন্দরের হাতে আটকে যায়।
গোলশোধের জন্য মরিয়া ওডিশার দিয়েগো মরিসিও ৬৩ মিনিটের মাথায় গোলে শট নেন, যা বাঁচান কমলজিৎ। এর পরেই পরিবর্ত হিসেবে নামা ধনচন্দ্র মিতেইয়ের দূরপাল্লার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৭২ মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে ফ্রি কিক পেয়েও সেই সুযোগ হাতছাড়া করেন মরিসিও। তবে তার পরের মিনিটেই সুপরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোল শোধ করে দেন নন্দকুমার।
বাঁ দিক দিয়ে ইস্টবেঙ্গলের বক্সে ঢুকে মরিসিও একেবারে বাইলাইনের সামনে থেকে বক্সের মাঝখানে থাকা সম্পুর্ণ অরক্ষিত নন্দকুমারকে বল বাড়ান। মরিসিওকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি উন্নিকৃষ্ণন। প্রায় ফাঁকায় দাঁড়ানো নন্দ সোজা গোলে শট নেন (১-১)।
মাঝমাঠকে নতুন করে গোছানোর জন্য মোবাশিরের বদলে জর্ডন ও’ডোহার্টিকে নামান ইস্টবেঙ্গল কোচ। ৮৬ মিনিটের মাথায় ফের গোলের সুবর্ণ সুযোগ পান জেক জার্ভিস। ডানদিক দিয়ে উঠে প্রথমে বক্সের মধ্যে ক্লেটনকে বল দেন মহেশ। ক্লেটনের পা থেকে বল ছিটকে গিয়ে পড়ে বক্সের বাইরে সুহেরের পায়ে। সুহের বক্সের বাঁ দিকে বল দেন জার্ভিসকে। তিনি গোলে শট নেন। কিন্তু অমরিন্দরের হাতে লেগে পোস্টে ধাক্কা খেয়ে বল গোলের বাইরে বেরিয়ে যায়।
স্টপেজ টাইমে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে ফের গোলের অসাধারণ সুযোগ পায় ইস্টবেঙ্গল এফসি। বাঁ দিক থেকে মহেশের মাপা মাটি ঘেঁষা ক্রসে পা লাগাতে পারলেই গোল পেতেন জার্ভিস। কিন্তু তিনি বলে পৌঁছতেই পারেননি। খেলা শেষের বাঁশি বাজার ঠিক আগের মুহূর্তে ক্লেটনের মাপা কর্নার কিক থেকে গোল করার সুযোগ ফের হাতছাড়া করেন জার্ভিস। দ্বিতীয় পোস্টের সামনে তিনি বলে পা ছোঁয়ালেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। সারা ম্যাচে হাফ ডজন কর্নার পেয়েও একটিও কাজে লাগাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল।