ক্রীড়া

নিজের পরিকল্পনাতে কি বদল আনছেন হাবাস!

অঞ্জন চ্যাটার্জি, এনএফবিঃ

তুখোড় ফুটবল মস্তিষ্ক তাঁর। কোন ফুটবলারকে কোন পরিস্থিতিতে কী ভাবে ব্যবহার করলে সেই ফুটবলারের কাছ থেকে সেরাটা পাওয়া যাবে, তা হাবাসের চেয়ে ভাল কেউ বোঝেন না বোধহয়। তিনি আন্টেনিও লোপেজ হাবাস। যেমন ২০১৯-২০ আইএসএল মরশুমে সাইড ব্যাক হিসেবে খেলতে অভ্যস্ত প্রবীর দাসকে যে ভাবে রাইট উইং ব্যাক হিসেবে খেলিয়ে চমকে দিয়েছিলেন তিনি, তাতে তাঁর কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। বাঁ দিকের উইং দিয়ে মাইকেল সুসাইরাজ ও ডান দিক দিয়ে প্রবীরকে দিয়ে আক্রমণ তৈরির কৌশলে একের এক ম্যাচে বাজিমাত করেন তিনি।

কিন্তু গত মরশুমে সুসাইরাজ প্রথম ম্যাচেই ছিটকে যাওয়ায় তাঁর এই কৌশল আর কাজে লাগেনি। ফলে প্রবীরের ভূমিকাও অনেকটা গুরুত্বহীন হয়ে যায়। তবে তাঁর সেই কৌশল কিছুটা হলেও ফিরিয়ে এনেছিলেন মনবীর সিং ও শুভাশিস বসু। ডান দিক দিয়ে মনবীর ও বাঁ দিক দিয়ে শুভাশিস হানা দিয়েছেন ঘনঘন, যাতে বিপক্ষের রক্ষণে ফাঁক তৈরি হয় ও সেই ফাঁক দিয়ে ঢুকে গোল করে বেরিয়ে আসতে পারেন রয় কৃষ্ণা, ডেভিড উইলিয়ামসরা।

হাবাস একটা কথাই বারবার বলে থাকেন। দলের রক্ষণ ও আক্রমণের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় থাকা দরকার। অর্থাৎ নিজের ঘর সুরক্ষিত রেখে শত্রুপক্ষের ঘরে আক্রমণ করো, যাতে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে শত্রুপক্ষ তোমার জালে বল জড়িয়ে চলে যেতে না পারে। দলকে মূলত কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল খেলাতে পছন্দ করেন হাবাস, এমনই অভিযোগ উঠেছে বারবার। হাবাস তা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “ফুটবল এমনই। প্রতিপক্ষ যদি কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠার সুযোগ দেয় বা সে রকম পরিস্থিতি তৈরি করে দেয়, তা হলে কি আমরা কাউন্টার অ্যাটাকে যাব না? প্রতি আক্রমণে ওঠাটা আমাদের ওপর নির্ভর করে না, করে বিপক্ষের ওপর।“

শত্রুপক্ষকে ভাল করে মেপে নিয়ে তার পরে তাদের দূর্গে হানা দাও, এটাই হাবাসের ফুটবলের মূলমন্ত্র। যা তিনি বরাবরই মেনে এসেছেন। সে জন্য এবার এটিকে মোহনবাগান বেশির ভাগ গোলই করেছে দ্বিতীয়ার্ধে। প্রথম ৪৫ মিনিটে বিপক্ষের ফাঁক-ফোকরগুলো বুঝে নিয়ে বিরতিতে নতুন করে স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতে বসেন হাবাস। দ্বিতীয়ার্ধে বিপক্ষের সেই দুর্বলতাগুলোর ওপরই আঘাত করার রাস্তা বাতলে দেন দলের ফুটবলারদের। এটাই তাঁর কাজের পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে এবারেও মাঠে নামবেন। তাই তো বলছেন, আমি আমার কৌশল বদল করব না বিপক্ষ যা করুক না কেন। আমার নিজের প্লানিংয়ে আস্থা আছে। সেভাবেই দলকে চালাচ্ছি।