ক্রীড়া

তিরির চোটই সবশেষ করে দিলো বলছেন জুয়ান

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

বুধবার যুবভারতীতে এএফসি কাপের ম্যাচে আইলিগের দল গোকুলাম এফসির কাছে হার মানতে হলো এটিকে মোহনবাগানকে। ৪-২ গোলে হার, আরও বড়ো ব্যবধানে হারলেও অবাক হওয়ার কিছুই ছিল না। ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে এটিকে মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো জানাচ্ছেন তিরির চোট পেয়ে মাঠ ছাড়াই সব শেষ করে দিলো। তার কথায়,“তিরির চোট লাগার ফলে আমাদের পরিকল্পনা বদলাতে হয়। তবে তিরির চোটের জন্যই যে আমরা হেরেছি, এ কথা মানতে রাজি নই আমি। বিপক্ষও তাদের খেলা বদলে ফেলে। ওঠা-নামা অনেক দ্রুত শুরু করে। ঘন ঘন ক্রস দিতেও শুরু করে। এত উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে আমাদের উইলিয়ামস, কাউকোরাও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তবে কোনও অজুহাত দিতে চাই না। আমাদের ওঠা-নামা তেমন ভাল হয়নি। প্রথমার্ধে অনেকগুলো সুযোগ পেয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত গোল পাইনি। এই হার থেকে শিক্ষা নিতে হবে আমাদের। তবে এটা এখন অতীত”।
ম্যাচের প্রথমার্ধে আক্রমণাত্মক এটিকে মোহনবাগানকে আটকে রাখার পরে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই খেলার স্টাইল পাল্টে বিপক্ষকে চাপে ফেলে দেয় গোকুলম কেরালা। শুরুতেই গোল পেয়ে যান স্লোভেনিয়ান ফরোয়ার্ড লুকা মাজেন। দলের তৃতীয় গোলটিও তাঁর। এ ছাড়া নবাগত ও পরিবর্ত ফরোয়ার্ড রিশধ পুথানভিতিল ও পরিবর্ত হিসেবে নামা অপর ফরোয়ার্ড জিতিন সুব্রন গোল করে দলের জয় সুনিশ্চিত করেন। এটিকে মোহনবাগানের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার প্রীতম কোটাল ও লিস্টন কোলাসো ব্যবধান কমালেও শেষ পর্যন্ত কোনও লাভ হয়নি তাদের।
এই হারের মধ্যে এটিকে মোহনবাগান শিবিরে আরও খারাপ খবর, তিরির চোট বেশ গুরুতর এবং আগামী সাত-আট মাস হয়তো তাঁকে মাঠে দেখা যাবে না। অর্থাৎ আসন্ন আইএসএলে হয়তো অনিশ্চিত তিনি। এই ব্যাপারে ফেরান্দো সাংবাদিকদের বলেন, “দলের ডাক্তার, ফিজিওরা বললেন, তিরির চোটটা গুরুতর। খুব দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপারটা। সারা মরশুমেই চোট আঘাতের সমস্যায় ভুগেছি আমরা। কার্ল ম্যাকহিউকে হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছিল, হুগো বুমৌস, রয় কৃষ্ণার মতো একাধিক নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়েরও চোট লেগেছিল। আমাদের জানতে হবে, কেন এত চোট হচ্ছে”।

ম্যাচের সময় নিয়ে আগে থেকেই দ্বিধায় ছিল atk মোহনবাগান দল। আগে ঠিক ছিল দুপুর দুটোয় ম্যাচ হবে। কিন্তু ক্লাবের অনুরোধে তা পিছিয়ে বিকেলে করার সিদ্ধান্ত নেয় এএফসি। বুধবার ম্যাচ শুরুর সময় তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৩৫ ডিগ্রি। তবে আবহাওয়ার প্রভাব তাঁর দলের পারফরম্যান্সে পড়ে বলে মনে করেন না সবুজ-মেরুন কোচ। বলেন, “না, তা ঠিক নয়। আমাদের প্রতিপক্ষকেও তো একই আবহাওয়ায় ও একই সময়ে খেলতে নামতে হয়েছে। কোনও দল ৩-১-এ পিছিয়ে পড়লে সেই দলের মানসিকতা সমান থাকে না। যে দল ৩-১-এ এগিয়ে থাকে, যত গরমই হোক, তারা দৌড়বেই। কিন্তু যারা পিছিয়ে থাকে তাদের পক্ষে পরিস্থিতিটা কঠিন হয়ে পড়ে। আবহাওয়ার চেয়ে মানসিকতার প্রভাব আমাদের ওপর বেশি পড়েছে”।
প্রথম ম্যাচেই অপ্রত্যাশিত হারের পরে দলকে হতাশার অন্ধকার থেকে বার করে আনতে চান ফেরান্দো। জানান ফুটবলারদের মানসিকতায় আমূল পরিবর্তন আনাটাই এখন তাঁর প্রধান কাজ। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখন আমাদের বসুন্ধরার বিরুদ্ধে পরের ম্যাচ নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। হাতে দু’দিন রয়েছে। এই ৪৮ ঘণ্টায় দলের মানসিকতা বদলাতে হবে আমাকে। এখন দলের ছেলেদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আশা করি, বসুন্ধরার বিরুদ্ধে আমাদের দল আরও ভাল পারফরম্যান্স দেখাবে”।

নিউজ ফ্রন্ট বাংলার অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন টি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।