স্থানীয়

বাজারে নীল চা আনলো মাঝেরডাবরি চা বাগান

এনএফবি, আলিপুরদুয়ারঃ‌

গ্রীন টি, হোয়াইট টি ও মুনলিট টি সকলের কাছে খুব চেনা নাম। কিন্তু চায়ের রং যে নীল হতে পারে, সেটাই অদ্ভুত। সেরকমই নীল রঙের চা বাজারে এনে রাজ্যের চা উৎপাদনের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত তৈরি করলো আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরি চা বাগান। নাম ‘ব্লু পিয়া গ্রীন টি’। তবে এই চায়ের রংটি যেমন ভিন্ন, তৈরি করার পদ্ধতি টাও একেবারেই আলাদা।

নিজস্ব চিত্র

এই বিশেষ চা তৈরি করতে প্রয়োজন হয় চায়ের অত্যন্ত নরম কুঁড়ি ও অপরাজিতা ফুল। দুইয়ের মিশ্রনে তৈরি হয় এক অদ্ভুত এ্যারোমা যুক্ত নীল রঙের চা বা ‘ব্লু পিয়া গ্রীন টি’। বিশ্বের চায়ের বাজারে যার কদর আকাশ ছোঁয়া। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দাবি ‘ব্লু পিয়া গ্রীন টি’ রক্ত পরিষ্কার ও হার্টকে সতেজ রাখতে বিশেষ ভুমিকা পালন করে। এছাড়াও ত্বক সতেজ রাখা, চুল পড়া রোধ করার মতো আরও অনেক গুণাবলী রয়েছে এই নীল চায়ে। যেহেতু ছয় ঋতুর একটি বিশেষ সময়ে অপরাজিতা ফুল ফোটে, ফলে সারা বছর ঐ বিশেষ চা উৎপাদন করা কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। তাই এর মূল্যও অন্যান্য চায়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি। আপাতত খোলা বাজার অথবা অনলাইন শপিং সংস্থা গুলিতে নীল চা বিক্রি হচ্ছে ৬৫০০ টাকা কিলোগ্রাম দরে। ইতিপূর্বেও নানান ধরনের চা তৈরি করে চা-প্রেমীদের মনে দাগ কাটার অনবরত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরি চা বাগান। সম্প্রতি ‘ব্লু পিয়া গ্রীন টি’ বাজারে এনে, রাজ্যের সব চা বাগানকে টেক্কা দিয়েছে মাঝেরডাবরি কর্তৃপক্ষ। বাগানের এক কোনে চা গাছের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি করা হয়েছে অপরাজিতা ফুলের ঝোপ। সেখান থেকেই অত্যন্ত সাবধানে সংগ্রহ করা হচ্ছে অপরাজিতা ফুলের কুড়ি। তারপর বাগানের কারখানায় বিশেষ পর্যবেক্ষণে তৈরি হয় নীল চা।

চিন্ময় ধর, নিজস্ব চিত্র

চলতি বছরে পরীক্ষামূলক ভাবে যে পাঁচ কিলোগ্রাম ব্লু টি তৈরি করা হয়েছিল, তা এক লহমায় নিঃশেষিত হয়েছে বলে দাবি চা বাগান কর্তৃপক্ষের। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী আরও অনেক বেশি নীল চা উৎপাদন করা হচ্ছে বলে জানান বাগানের জেনারেল ম্যানেজার চিন্ময় ধর। চা-প্রেমীরা প্রতিদিনই চায়ের কাপে খোঁজেন নিত্যনতুন ফ্লেভার। আর সেই কথা মাথায় রেখেই এবার বাজারজাত করা হয়েছে ব্লু পিয়া গ্রিন টি। আর সেই চা-ই এখন ঝড় তুলছে চা-প্রেমীদের পেয়ালায়।

YouTube player
YouTube player