ক্রীড়া

ক্রোয়েশিয়ায় খেলতে না পেরে আক্ষেপ নেই সন্দেশের

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

প্রথম ভারতীয় ফুটবলার হিসেবে ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব ফুটবলে খেলতে গিয়েও মাঠে নামতে পারেননি তিনি। হঠাৎ চোট পেয়ে যাওয়ায় তাঁর খেলার সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে যায়। শুধু চোটই নয়, যে কোচের পছন্দে তাঁকে ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব সিবেনিক সন্দেশ ঝিঙ্গনকে নিয়ে যায়, সেই কোচও হঠাৎ দায়িত্ব ছেড়ে চলে যান। ফলে ইউরোপিয়ান ফুটবলে অভিজ্ঞতা অর্জনের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় ভারতীয় তারকা ডিফেন্ডারের। ক্রোয়েশিয়া থেকে ফিরে এটিকে মোহনবাগানে যোগ দিলেও এখনও মাঠে নামার সুযোগ পাননি তিনি । করোনা থেকে সেরে উঠলেও এখনও ম্যাচ ফিট নন সন্দেশ।
ফুটবল জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নিয়ে অবশ্য বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই পাঞ্জাবের এই ফুটবলারের। সন্দেশ জানাচ্ছেন, “ওখানে যা যা হয়েছে, সে জন্য আমার কোনও আক্ষেপ নেই। কারণ, আমি সবকিছুই দিয়েছিলাম। কিন্তু যেটা হওয়ার নয়, সেটা হয় না। সে যতই পরিশ্রম করো বা যত ভাল ভাবেই পরিকল্পনা করো।জীবনে সব কিছুই এক একটা অভিজ্ঞতা। ওখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই নিজের কমফর্ট জোন থেকে বেরোবার জন্য। তাই কোন দিকে যাচ্ছি, তা জেনেশুনেই ওখানে গিয়েছিলাম। ক্রোয়েশিয়ান খেলোয়াড়দের কাছ থেকে কী কী শেখা যেতে পারে এবং দলকে কী ভাবে সাহায্য করতে পারি, সেই নিয়ে কোচের সঙ্গে কথা বলেছিলাম । কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনই অপ্রত্যাশিত ভাবে চোট পেয়ে যাই। এখানে ফিরে আসতে পেরে আমি খুশি। সিবেনিকে যখন ম্যানেজমেন্ট বদলে গেল এবং কোচও দায়িত্ব ছেড়ে চলে গেল, তখন পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিই, এ বার চোটটা সারানোর জন্য আমার ফিরে যাওয়া উচিত। তাড়াতাড়ি মাঠে নামতে চাইছিলাম, কারণ সামনেই ভারতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে। চোটের পরে এটিকে মোহনবাগান আমাকে খুবই সাহায্য করেছে।”

আরও পড়ুনঃ চিন্তা বিরাট ফর্ম, বুধবারই সিরিজ জয় চায় রোহিতরা

গত অগাস্ট মাসে মলদ্বীপে এএফসি কাপে খেলতে যাওয়ার আগেই সন্দেশ ক্লাবকে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব ফুটবলে খেলতে যাচ্ছেন, তাই এই মরশুমে এটিকে মোহনবাগানের হয়ে খেলতে পারবেন না। তাতে ক্লাব আপত্তি করেনি। তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব এইচএনকে সিবেনিকে গত তিন মাসে আরও তিনবার তাঁর পায়ের পেশীতে চোট লাগে। তাই ওই ক্লাবের হয়ে মাঠে নামা হয়নি তাঁর। এর মধ্যেই কলকাতার ক্লাব তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাই দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন সন্দেশ।

১৩ মাস মাঠের বাইরে থাকার পরে গত মরশুমের আগে এটিকে মোহনবাগানের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তিতে সই করেন সন্দেশ। সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে ২২টি ম্যাচ খেলেন। সারা মরশুমে ৫২টি ট্যাকল, ২৬টি ইন্টারসেপশন, ১১৯টি ক্লিয়ারেন্স ও ৪০টি ব্লকের হিসেব জমা হয় তাঁর পারফরম্যান্সের খতিয়ানে। সারা মরশুমে মাত্র দু’বার হলুদ কার্ড দেখেন। কোনও লাল কার্ড ছিল না। এতটাই পরিচ্ছন্ন ফুটবল খেলেন তিনি। দলের নেতৃত্বের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। সবুজ মেরুন সমর্থকদের ভালবাসাই হয়তো তাঁকে ফের সবুজ-মেরুন শিবিরে টেনে নিয়ে আসে। কিন্তু এখনও মাঠে ফেরার সুযোগ পাননি তিনি । এখন সন্দেশের মাঠে ফেরার প্রহর গুনছেন সবুজ মেরুন সমর্থকরা ।

আরও পড়ুনঃ মনোনয়ন জমা দেওয়াতে এসে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন উদয়ন