জেলা

এগরায় শুরু হলো সেভ সয়েল বা মাটি বাঁচান অভিযান

এনএফবি,পূর্ব মেদিনীপুরঃ

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরায় শুরু হলো সেভ সয়েল বা মাটি বাঁচান অভিযান ৷ ইউনাইটেড নেশনস ঘোষণা করেছে, পৃথিবীর ৫২ শতাংশ চাষযোগ্য মাটি ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গেছে। ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর ৯০% মাটি নষ্ট হয়ে যাবে। প্রতি সেকেন্ডে ১ একর মাটি মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। ভারতের ৬৩% মাটি মরুভূমি প্রায়। আজকে পৃথিবীতে মানুষের জন সংখ্যা ৭৯০ কোটি এবং তার মধ্যে ৮০ কোটি মানুষ অভুক্ত। কিন্তু ২০৪৫ সাল নাগাদ মানুষের জনসংখ্যা হবে ৯২০ কোটিরও বেশি, এবং উর্বর মাটি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার ফলে আমরা এখনকার চেয়ে ৪০% কম খাদ্য উৎপাদন করব।

ইউএনএফএও বলছে পৃথিবীতে যে পরিমাণ উপরিভাগের মাটি (Top Soil) অবশিষ্ট আছে তা দিয়ে আর মোট ৮০ থেকে ১০০ বারই ফসল ফলানো সম্ভব হবে, অর্থাৎ অনুমেয় আর ৬০ বছরে আমাদের উপরি ভাগের চাষযোগ্য মাটি শেষ হয়ে যাবে। প্রতি বছর মোট ২৭০০০ টি অনুজীবের প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আজকে ৮ টি কমলালেবু খেলে তা থেকে যে পরিমাণ পুষ্টি আমরা পাই তা ১০০ বছর আগের ১ টি কমলা লেবুর সমান। এই মুহূর্তে পৃথিবীতে ২০০ কোটি মানুষ পুষ্টির ঘাটতিতে ভুগছেন। তাই এই অভূতপূর্ব সংকটের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে, মাটিকে বাঁচাতে সদগুরু লন্ডন থেকে ভারত অবধি একা ১০০ দিন ধরে ৩ টি মহাদেশের ২৭ টি দেশ জুড়ে ৩০০০০ কিলো মিটারের এক দীর্ঘ যাত্রা করছেন পৃথিবীর মানুষকে এই বিপর্যয়ের ব্যাপারে সচেতন করতে, যাতে সময় থাকতে আমরা এই বিপদ থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি । জাতি সংঘের বহু পরিবেশ বিষয়ক শীর্ষ স্থানীয় সংস্থা যেমন UNCCD UNEP UNE WFP FAO IUCN, থেকে শুরু করে বহু সংস্থা, প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এই অভিযানকে সমর্থন জানিয়েছেন। ২১ শে মার্চ সদগুরু এই ১০০ দিনের দুর্গম যাত্রা শুরু করেন “সেভ সয়েল” বা “মাটিকে বাঁচান” অভিযানের নামে। এবং এই অভিযান বিশ্বজুড়ে বিপুল সফলতা অর্জন করেছে। ২১ শে জুন, আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে সদগুরু ঈশা যোগ কেন্দ্রে এই ঐতিহাসিক যাত্রার সমাপন করলেন। ইতিমধ্যে ৭৪ টি দেশ মাটিকে বাঁচানোর জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ভারতের ৮ টি রাজ্য মৌ চুক্তি সাক্ষর করেছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়া মেট্রিক্স বলছে ইতিমধ্যে বিশ্বের মোট ৩২০ কোটি জনগণ মাটিকে বাঁচানো নিয়ে কথা বলেছেন। এই অভিযানের উদ্দেশ্য হল, মাটিতে ন্যুনতম ৩-৬% জৈব উপাদান রাখাকে বাধ্যতামূলক করতে পৃথিবীর সকল দেশকে সরকারি নীতি বানাতে উৎসাহ দেওয়া এবং সরকারেরা যাতে আত্ম বিশ্বাসের সাথে নীতিকে বাস্তবায়িত করতে পারেন, তার জন্য পৃথিবীর ৬০% ভোটদাতা জনসংখ্যা অর্থাৎ প্রায় ৩৬০ কোটি মানুষকে নিজ নিজ দেশে এই ধরণের প্রকৃতি বান্ধব নীতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে সমর্থন করতে উৎসাহিত করা ৷