এনএফবি বহরমপুরঃ
বহরমপুর গার্লস কলেজের ইংরেজি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত হলো একদিনের স্টুডেন্টস সেমিনার, যার বিষয় ছিল “বিংশ শতকের সাহিত্য: আধুনিক যুগ ও তারপর”। এই সেমিনারে পাঁচটি কলেজ (কেএন কলেজ, আরডিকেএ কলেজ, শ্রীপত সিং কলেজ, ডোমকল গার্লস কলেজ এবং জেআর মহাবিদ্যালয়) যৌথভাবে অংশগ্রহণ করেছে। ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারের প্রধান অতিথি এবং মুখ্য বক্তা ছিলেন কৃষ্ণনাথ কলেজের ইংরেজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. বর্নালি মুখার্জি।
সেমিনারে মোট ১৮ জন শিক্ষার্থী গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। বিভিন্ন উপ-বিষয়ের উপর গবেষণাপত্রগুলো উপস্থাপন করা হয় এবং তাদের মধ্যে থেকে দু’টি পুরস্কার প্রদান করা হয়—”সেরা গবেষণাপত্র” এবং “সেরা উপস্থাপক”। বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাঁচটি কলেজের পাঁচজন শিক্ষক এবং প্রধান অতিথি।
সেরা গবেষণা পত্র হিসেবে প্রথম পুরস্কার অর্জন করেন বহরমপুর গার্লস কলেজের একজন ছাত্রী তামান্না খাতুন। তার গবেষণা প্রকল্পটি শিক্ষাবিদ ও দর্শকদের দ্বারা উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে। তিনি তাঁর উপস্থাপনায় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক নিয়ে গভীর আলোচনা করেছেন, যা উপস্থিত সবাইকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছিল।
অন্যদিকে, সেরা গবেষণা পত্র প্রেজেন্টেশন পুরস্কার অর্জন করেন আমতলা জাতীন্দ্র রাজেন্দ্র মহাবিদ্যালয়ের জসীমুদ্দিন মন্ডল। তার উপস্থাপনায় সংক্ষিপ্ত ও প্রাঞ্জল তথ্য উপস্থাপন করা হয়, যা শ্রোতাদের কাছে পরিষ্কার এবং গ্রহণযোগ্য ছিল। গবেষণার নানাবিধ দিক এবং সৃজনশীলতা তুলে ধরার পূর্বাপর দক্ষতা জসীমুদ্দিনের সাফল্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কলেজের প্রিন্সিপাল ড. হেনা সিনহা। সেমিনারের সঞ্চালনা করেন ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং আয়োজক সচিব ড. ইকবাল আনসারী। তিনি বলেন, “এ ধরনের সেমিনার শিক্ষার্থীদের একাডেমিক প্রতিভা বৃহত্তর পরিসরে উপস্থাপনের সুযোগ তৈরি করছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ গবেষণার কাজে সহায়ক হবে।”
বহরমপুর গার্লস কলেজের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হওয়া সেমিনারটি ছাত্রদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে। এই ধরনের সেমিনারগুলি তাদের অধ্যয়নের পাশাপাশি গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সাহায্য করে। ড. ইকবাল আনসারির বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তরুণ গবেষকদের জন্য একটি উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা প্রয়োজন, যেখানে তারা নিজেদের চিন্তাভাবনা এবং গবেষণার ফলাফল শেয়ার করতে পারে। এটি ছাত্রদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে সহায়ক হয়, যা তাদের ভবিষ্যতের গবেষণার প্রচেষ্টায় সহায়ক হতে পারে।
সেমিনারের মাধ্যমে ছাত্রদের মধ্যে যুক্তি বিশ্লেষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং তারা বাস্তবসম্মত সমস্যাগুলি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করতে সক্ষম হয়। এতে করে এমন একটি পরিবেশ তৈরি হয়, যেখানে ছাত্রীরা নতুন গবেষণার উদ্যোগ নেয়ার জন্য উৎসাহিত হয়। সভাপতির বক্তব্যে তার অনুপ্রেরণামূলক শব্দগুলি ছাত্রদের মধ্যে একটি নতুন জেগে ওঠাকে নির্দেশ করে, যা তাদের শিখন প্রক্রিয়াতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম।
সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ছাত্রদের মেধা এবং সৃজনশীলতার বিকাশে সহায়ক। এটি শুধু সেমিনারের বাইরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করে না, বরং ছাত্রদের মধ্যে একটি সামাজিক সংযোগও প্রতিষ্ঠা করে। নতুন গবেষণার উদ্যোগগুলি ছাত্রদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব তৈরি করে, যা তাদের ভবিষ্যতে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে পারে। সেমিনারের অনেকগুলি দিক থেকে, এটি ছাত্রদের হতাশা এবং অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে, যা তাদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজে লাগতে পারে।
ইংরেজি বিভাগের সকল শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকবৃন্দ সেমিনারে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেন, যা অত্যন্ত সফলভাবে সমাপ্ত হয়।