অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
অসাধারণ ও স্মরণীয় ডার্বি জয়ের পর এটিকে মোহনবাগান শিবির এখন আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছে। এই আত্মবিশ্বাসই আসন্ন ম্যাচে কাজে লাগাতে চান দলের ফুটবলাররা। আগামী বুধবার তারা মুম্বই সিটি এফসি-র মুখোমুখি হবে।সেই মুম্বই সিটি এফসি, যাদের বিরুদ্ধে গত মরশুমে তিনটি ম্যাচের একটিও জিততে পারেনি সবুজ-মেরুন শিবির। একদিকে যেমন লিগশিল্ড হাতছাড়া হয়েছিল, তেমনই চ্যাম্পিয়নশিপ খেতাবও তাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় মুম্বই। তাই ডার্বি জয়ের আনন্দের সঙ্গে সেই ম্যাচের মানসিক প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে এটিকে মোহনবাগান শিবিরে। সবুজ-মেরুন শিবিরের কোন তারকা কী বলছেন জেনে নেওয়া যাক।
রয় কৃষ্ণাঃ ডার্বি জেতা সব সময়ই স্পেশ্যাল। তবে আমরা আরও বেশি গোলে ম্যাচটা জিততে পারতাম। অনেক গোলের সুযোগ নষ্ট করেছি। এক দিন বিশ্রাম নিয়ে ফের পরের ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। এর পরে আমাদের মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে কঠিন ম্যাচ খেলতে হবে। ব্যক্তিগত লক্ষ্য সবারই থাকে। আমারও আছে। তবে সেটা এখন বলব না। দলের জন্যই খেলি। দলের জন্য সেরাটা দিতে হবে। আরও গোল করতে হবে। তবে এখন টিমওয়ার্কেই মনোনিবেশ করতে চাই। সমর্থকদের বলি, আমাদের সমর্থন করে যাও। এই মরশুমটা স্পেশাল হতে চলেছে। কারণ, আমাদের দলটা দারুন। সমর্থকদের খুব মিস করছি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় সবার উপস্থিতি অনুভব করতে পারছি। আমাদের ওপর আস্থা রাখো। আশা করি, এই মরশুম আরও উত্তেজনাপূর্ণ হবে।
জনি কাউকোঃ ডার্বি জিতে দারুন লাগছে। আমি এর আগেও অন্য জায়গায় একাধিক ডার্বি খেলেছি। জানি, সমর্থকদের কাছে ডার্বির মাহাত্ম্য কতটা। এখানে সমর্থকেরা ছিলেন না বটে। তবে বুঝতে পারছি, ওরা কতটা খুশি। আমাদের নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া খুব ভাল ছিল এই ম্যাচে। প্রথমার্ধে আমরা খুবই ভাল ফুটবল খেলেছি। দ্বিতীয়ার্ধে যেহেতু তিন গোলে এগিয়ে ছিলাম, সেই জন্যই হয়তো কিছুটা ঢিলে দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। তবে আমরা বসে থাকিনি, সমানে গোলের চেষ্টা করেছি। সব মিলিয়ে আমরা সত্যিই বেশ ভাল খেলেছি। আমরা দলে কিছু ভাল কম্বিনেশন আবিষ্কারও করেছি। ডার্বিতে অনেকগুলো সুযোগ নষ্ট করেছি। তবে আমি জানি আজ পারিনি ঠিকই, তবে ভবিষ্যতে এই সুযোগগুলো আর নষ্ট করব না। সমর্থকদের ধন্যবাদ। দুর্ভাগ্য যে গ্যালারিতে তাদের পাইনি। ওরা সামনে থাকলে খুব ভাল হত। তবে আমরা যেমন মাঠে ম্যাচটা উপভোগ করেছি, তেমনই আশা করি সমর্থকেরাও উপভোগ করেছে। এই ফলে তারা নিশ্চয়ই খুব খুশি। মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে পরের ম্যাচে আমাদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। ওই ম্যাচটা কঠিন হবে। গতবারের চ্যাম্পিয়ন ওরা। আমাদের সেরাটা দিতে হবে। আমরাও ছন্দে রয়েছি। ভাল সময় যাচ্ছে আমাদের। ভাল ম্যাচ হবে। সুতরাং, ম্যাচটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি।
প্রীতম কোটালঃ তিন পয়েন্টের জন্যই মাঠে নেমেছিলাম। ইস্টবেঙ্গল ভাল খেলেছে। আমরা তিন গোল পেয়ে গিয়েছি। তিন গোলে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও আমরা বসে থাকিনি, দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে উঠেছি। তিন-চারটে ভাল সুযোগও পেয়েছিলাম। তবে আমরা রক্ষণ, আক্রমণ দুটোই ভাল করেছি। আমরা ঠিক করেছিলাম, গোল খাব না। সেটা রাখতে পেরেছি। ডিফেন্ডার হিসেবে খুব ভাল লাগছে যে ডার্বিতে একটাও গোল না খেয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছি। সুযোগ নষ্ট হয়েছে, যারা গোলের কাছে পৌঁছতে পারে, তারাই সুযোগ তৈরি করতে পারে। আগেও বলেছি, এবার কিন্তু আমরা অন্য সিস্টেমে ফুটবল খেলছি। সেই জায়গা থেকে আমরা অনেক আক্রমণ করছি। আজকে সাতটা ওপেন চান্স তৈরি হয়েছিল, তিনটেতে গোল হয়েছে। এরপরে হয়তো আরও বেশি গোল হবে। তবে এটা নিয়ে আমাদের অনুশীলন করে যেতে হবে। এরকম দাপট নিয়ে ডার্বিতে খেললাম, অথচ সমর্থকেরা সামনে নেই। খুব খারাপ লাগছে। এই জয়টা তো সমর্থকদের জন্যই। এবার আমরা পরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নেব। সব দলই চার-পাঁচ দিন অন্তর ম্যাচ খেলছে। আমাদেরও সেরকমই সূচী মেনে খেলতে হবে। প্রথম ম্যাচের পরে তো আমরা সাত দিন ফাঁকা পেয়েছিলাম। যার ফলে প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হয়েছে। তবে এটা কোনও অজুহাত হতে পারে না। এর মধ্যেই রিকভারি করে ফিট হয়ে ফের মাঠে নামতে হবে।