ক্রীড়া

নতুন করে পথ চলা শুরু পুড়ে যাওয়া প্রাচীন উয়াড়ী ক্লাবের

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

২০১৯ সালের ১ এপ্রিল। একটা জ্বলন্ত অভিশাপ কলকাতা ময়দানে। আগুন লেগে দাউ দাউ করে পুড়ে ছাই ১২৩ বছরের উয়াড়ী অ্যাথলেটিক ক্লাব। মালিকদের চোখের সামনে পুড়ে খাক হয়ে গেল বাংলার ফুটবলের এক উজ্জ্বল ইতিহাস। তারপর কেটে গিয়েছে তিনটি বছর। পোড়া ক্লাব তাঁবুতেই আসতেন উয়াড়ীর কর্তারা। অর্থের কারণে পুড়ে তাঁবুর কাজ শুরু করা যায়নি প্রায় দেড় বছর। মন্ত্রী সুজিত বসু সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর উয়াড়ীর সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে অর্থ জুগিয়েছেন। দারুন ভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন উয়াড়ীর সচিব প্রবীর চক্রবর্তী। অবশেষে নতুন করে তৈরি হল সবুজ-সাদা রংয়ের ঝকঝকে উয়াড়ী ক্লাব তাঁবু। পয়লা বৈশাখে নতুন তাঁবুর শুভ উদ্বোধন হল ১২৩ বছরের ক্লাব উয়াড়ীর। নতুন করে ফের পথ চলা শুরু।
এদিন সেনা আধিকারিকদের হাত দিয়ে নিজেদের নতুন তাঁবুর উদ্বোধন করেন উয়াড়ী কর্তারা। উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলাররাও। ছিলেন আইএফএ-এর চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত,সচিব জয়দীপ মুখার্জি। উয়াড়ীর সচিব প্রবীর চক্রবর্তী বলেন,”তাঁবু পুড়ে যাওয়ার পর আমাদের সবার চোখের জল ফেলতে হয়েছিল। অনেকের প্রচেষ্টায় আবার তাঁবু তৈরি করা সম্ভব হল। আমরা নতুন করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।”
উয়াড়ী ক্লাবের ফুটবল সচিব ইন্দ্রনাথ পাল বলছিলেন,”আমাদের পাশে কে দাঁড়ায়নি বা কে পাশে আছে সেই সব বিতর্কে যেতে চাই না। তিন বছর পর ক্লাবের তাঁবু নতুন করে তৈরি করা গিয়েছে এটাই বড় ব্যাপার। নতুন তাঁবু গড়ার ক্ষেত্রে আমাদের বাবুদার (প্রবীর চক্রবর্তী) বিশেষ অবদান আছে। ক্লাবের প্রতিটা সদস্যর নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী তাঁবু তৈরির কাজে এগিয়ে এসেছেন। তাঁবুতে আধুনিকতার ছোঁয়া আছে। ক্যাদন্টিন,মালিদের থাকার জায়গা এবং তাঁবু নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। তবে আমাদের পুরনো তাঁবু পুড়ে যাওয়ার সময় আমাদের ক্লাবে বহু দুস্প্রাপ্য ছবি ও নথি পুড়ে গিয়েছে। সেই গুলি আর পাবো না। এটাই দুঃখের।”
উল্লেখ্য, উয়াড়ী অ্যালথলেটিক ক্লাব আসলে বাংলাদেশের। পরবর্তীকালে পাখী সেন,পঙ্কজ গুপ্ত, দীণেশ দত্ত সহ বেশ কিছু কর্তারা কলকাতার ময়দানে উয়াড়ী শুরু করেছিলেন। একটা সময় এপার বাংলায় এই ক্লাবটি বাংলাদেশের উয়াড়ীর শাখা হিসেবেই দেখা হত। শুধু তাই নয়, ক্লাবটি বাংলাদেশের বলেই একটা সময় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মাঠে কিছু দিনের জন্য উয়াড়ীর নামে একটা গ্যালারিও ছিল। অতীতে কলকাতা ফুটবল লিগে তিন প্রধান ক্লাবের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিত এই উয়াড়ী। ১৯৪৭ এর ২১ মে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ময়দানে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল উয়াড়ী। এই ক্লাব থেকে বহু ফুটবলার উঠে এসেছেন।