ক্রীড়া

প্রোটিয়া ব্যাটিংয়ে ধরাশায়ী পন্থ ব্রিগেড

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

কিলার মিলারের বিধ্বংসী পারফরম্যান্স ও সঙ্গে ফান ডার ডুসেনের ঝোড়ো ইনিংসেই ভেঙে গেল ভারতের বিশ্ব রেকর্ড গড়ার স্বপ্নটা। অধিনায়ক হিসাবে শুরুটা হার দিয়েই হল ঋষভ পন্থের। এদিন জিততে পারলে ভারতের সামনে একটানা সবচেয়ে বেশী টি টোয়েন্টি ম্যাচ জয়ের রেকর্ডের হাতছানি ছিল। ইশান কিষাণ, হার্দিক এবং শ্রেয়সদের ব্যাটে ভারত বিরাট রানও গড়ে তুলেছিল। কিন্তু একটা ক্যাচ মিসই যেন বদলে দিল গোটা চিত্রটা। যে ফান ডার ডুসেনের ক্যাচ মিস করেছিলেন শ্রেয়স, তিনিই শেষ মুহূর্তে ভারতের জয়ের আশা শেষ করে দিলেন। মিলার এবং ফান ডার ডুসেনের ১২৭ রানের পার্টনারশিপে ভর করে ৭ উইকেটে ম্যাচ জয় দক্ষিণ আফ্রিকার।

দিল্লিতে এদিন দুই শিবির থেকেই উঠেছিল রানের ঝড়। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার গতিটা বোধহয় খানিকটা বেশীই ছিল। হর্শাল পটেল, আভেশ খান থেকে ভুবনেশ্বর কুমার এবং চাহাল। কেউই এদিন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের বিরুদ্ধে কোনও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি। বরং ডেভিড মিলার, রাসি ফান ডার ডুসেনের রানের ঝড় দেখতে হয়েছে নীরব দর্শক হয়ে। সেইসঙ্গে বিশ্বরেকর্ডটাও মাঠেই ফেলে আসতে হল রাহুল দ্রাবিড়ের টিম ইন্ডিয়াকে। ৪৬ বলে ঝোড়ো ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন ফান ডার ডুসেন। অন্যদিকে মিলার করেন ৬৪ রান। ফিরোজ শাহ কোটলায় দ্বিতীয়ার্ধে ব্যাটিং করার বার্তাটা আগেই দিয়েছিলেন টেম্বা বাভুমা। আর সেই পরিকল্পনাতেই সফল তিনি। টস জিতে এদিন ভারতকেই প্রথম ব্যাটিংয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। লোকেশ রাহুল নেই। ওপেনিংয়ে ছিলেন দুই তরুণ তারকা ঈশান কিষাণ ও ঋতুরাজ গোয়কোয়াড়। আইপিএলে এবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন ঈশান। কিন্তু ভারতের জার্সিতে ফিরেই তাঁর ব্যাটে রানের ফোয়ারা।ঋতুরাজ বড় রান করতে না পারলেও, এদিন শুরু থেকেই বিধ্বংসী মেজাজে ছিলেন ঈশান কিষাণ। সেইসঙ্গে তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন শ্রেয়স আইয়ারও। ৪৮ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলে ঈশান কিষাণ যখন মাঠ ছাড়েন তখন ভারতের রান ২ উইকেটে ১৩৭। তার কিছুক্ষণ পরই ৩৬ রানে সাজঘরে ফেরেন শ্রেয়স আইয়ার। যদিও ততক্ষণে ভারতের বড় রানের লক্ষ্য স্থির হয়ে গিয়েছে। আর পাঁচ নম্বরে নেমে দুর্ধর্ষ ফিনিশিং টাচ হার্দিক পান্ডিয়া। ভারতীয় দলে ফেরার পরই যেন সেই পুরনো মেজাজে তিনি। হার্দিকের ১২ বলে ৩১ রানে ভর করে ভারত পৌঁছয় ২১১ রানে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে রানের পাহাড় তৈরি করেছিল ভারতীয় দল। এবার পরীক্ষাটা ছিল বোলারদের। আর সেখানেই চুড়ান্ত ব্যর্থ তারা। যদিও শুরুতেই টেম্বা বাভুমাকে ফিরিয়ে ধাক্কাটা দিয়েছিলেন ভুবনেশ্বর কুমার। কিন্তু মিলার ও রাসি ফান ডার ডুসেনের দুর্ধর্ষ ফর্মের সামনে আর দাঁড়াতে পারেননি ভারতীয় বোলাররা। মাত্র ৩ উইকেটই তুলতে পেরেছিলেন ভারতীয় বোলাররা। ৮১ রানের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে খানিকটা চাপে ফেলার চেষ্টা চালালেও, মিলার ঝড় ওঠার পরই যেন সব শেষ। যদিও ভারতের যে সুযোগ আসেনি তা নয়। কিন্তু মোক্ষম সময়ে রাসি ফান ডার ডুসেনের ক্যাচ মিস করেন শ্রেয়স আইয়ার। আর সেই সুযোগটা তিনি কাজে লাগাতে এতটুকু ভুল করেননি। মিলার এবং ফান ডার ডুসেনের ব্যাট থেকে তখন কোটলার পিচে শুধুই চার ছয়ের বন্যা। ফান ডার ডুসেনের ৪৬ বলে ৭৫ রানের ইনিংসে রয়েছে ৬টি চার এবং পাঁচটি ওভার বাউন্ডারি। অন্যদিকে মিলারের ইনিংস সাজানো চারটি চার ও পাঁচটি ছয় দিয়ে। তিনি করেন ৬৪ রান।

দুই তারকার ১২৭ রানের পার্টনারশিপেই ভারতকে হারিয়ে জয় দিয়ে সিরিজে যাত্রা শুরু করল দক্ষিণ আফ্রিকা।