স্থানীয়

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে প্রহৃত অন্তঃসত্ত্বা প্রধান

এনএফবি, কোচবিহারঃ

তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এক গর্ভবতী মহিলা প্রধানকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের বড় শৈলমারি গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে প্রধানের নেতৃত্বে জেনারেল মিটিং চলার সময় ওই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই অচৈতন্য হয়ে পরেন প্রধান বিউটি বর্মণ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর জ্ঞান ফিরেছে বলে জানা গিয়েছে।
দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের ওই বড় শৈলমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের অধীনে। সিতাই বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়ার ঘনিষ্ঠ প্রধান বিউটি বর্মণ। আর তাই বিউটি বর্মণকে প্রধান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিধায়কের বিরোধী গোষ্ঠী নেতা দিনহাটা ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জয় বর্মণের ইন্ধনে অনাস্থা নিয়ে আশা হয় বলে অভিযোগ। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে আনা ওই অনাস্থা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে প্রধান ও তাঁর সাথে থাকা পঞ্চায়েত সদস্যরা দুদফায় জেলা সভাপতির মাথাভাঙ্গার বাড়ি ও কোচবিহারের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভও করে। এরপরেই এদিন প্রধান গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসলে আচমকাই কিছু লোকজন ঢুকে বৈঠকের মধ্যেই গণ্ডগোলের সৃষ্টি করে। প্রধানকে ধাক্কাধাক্কি করে মেঝেতে ফেলে দেয়। সেখানেই তিনি অচৈতন্য হয়ে পরেন বলে জানা গিয়েছে।
হাসপাতালে শুয়ে প্রধান বিউটি বর্মণ বলেন, “আজ পঞ্চায়েতদের নিয়ে জেনারেল বৈঠক ছিল। বৈঠক চলাককালীন কিছু দুষ্কৃতী বৈঠকের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এরপরেই তাঁরা ধাক্কাধাক্কি করে আমাকে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর আমার আর জ্ঞান ছিল না। তাই পরে কি হয়েছে তা বলতে পারবো না।” বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া ঘনিষ্ঠ কোচবিহার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ বর্তমানে তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নেতা নূর আলম হোসেন বলেন, “সঞ্জয় বর্মণের নেতৃত্বে ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। দলের জেলা সভাপতি সহ সমস্ত নেতা বিধায়ককে জানানো হয়েছে। ৭ মাসের গর্ভবতী প্রধান। বৈঠকের মধ্যে ঢুকে তাঁকে এভাবে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া উচিত হয়নি। প্রধান বা গর্ভের সন্তানের কোন সমস্যা হলে শৈলমারির তৃণমূল কর্মীরা কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না।” অন্যদিকে ব্লক সভাপতি সঞ্জয় বর্মণ ওই ঘটনার সাথে তিনি জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, কোন বিল নিয়ে কথা কাটাকাটির সময় ওই ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
১৪ আসন বিশিষ্ট বড় শৈলমারি গ্রাম পঞ্চায়েত। সকলেই তৃণমূল কংগ্রেসের। প্রথম থেকেই সেখানে প্রধানের দায়িত্ব সামাল দিয়ে আসছেন বিউটি বর্মণ। কিন্তু সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ৭ জন পঞ্চায়েত সদস্য প্রধান বিউটি বর্মণের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসে। কিন্তু ৭ জন পঞ্চায়েত বিউটি বর্মণের সাথেই থেকে যায়। তাই ওই অনাস্থা নিয়ে কেউ বোর্ড গঠনে নিশ্চিত হতে পারছে না। এখন নাকি শুরু হয়েছে শক্তি প্রদর্শন করে নিজেদের পক্ষে পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে আসার কৌশল। আর সেই কারণেই এমন ঘটনা বলে রাজনৈতিক মহলের ধারনা।