জেলাফিচার

কাজ শেষ না করেই সাইনবোর্ড লাগিয়ে বেপাত্তা ঠিকাদার- সবই কাটমানির মায়া, বলল সুকান্ত

এনএফবি, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

পুকুর ও রাস্তা চুরির পর এবারে নর্দমা চুরির অভিযোগ! কাজ সম্পূর্ণ না করে পোস্টার লগিয়ে দিয়েই বেপাত্তা কাজে নিযুক্ত ঠিকদার। অন্ধকারে স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনা জানাজানি হতেই তুমুল হইচই পরিস্থিতি পতিরামের কাছারি পাড়া এলাকায়। যদিও বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রথম থেকেই ড্রেনের কাজ নিয়ে তাদের অন্ধকারে রেখেছিল কাজে নিযুক্ত ঠিকাদার। এরপর আচমকাই বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়ে বেপাত্তা হয়ে গেছে ঠিকাদার। অনেকে আবার বলছেন, টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় কাজ বন্ধ করে চলে গিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন তাহলে রাতের অন্ধকারে কেনই বা এলাকায় ওই ঠিকাদার তার কাজ শেষের সাইনবোর্ড ঝোলালেন?

জানা গেছে, প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দে বালুরঘাট ব্লকের পতিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছারি পাড়া এলাকায় একটি ড্রেন নির্মাণ শুরু করে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ। যে কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোন সিডিউল টাঙায়নি কাজে নিযুক্ত ঠিকাদার বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এরপর রাতারাতি একটি বোর্ড ঝুলিয়ে চলে যান কাজে নিযুক্ত ঠিকাদার। যা দেখতেই চোখ কপালে ওঠে স্থানীয় বাসিন্দাদের। কেননা ঠিকাদারের লাগানো বোর্ডেই লেখা রয়েছে পতিরামের তৃপ্তি হোটেল থেকে নদী পর্যন্ত ড্রেনটি নির্মান করবার কথা। যার প্রথম দিকেও তৈরি হয়নি কোন ড্রেন, আবার শেষেও হয়নি কাজ। শুধুমাত্র মাঝখানে ড্রেনের কিছুটা অংশ কাজ করেই বেপাত্তা হয়ে যায় অথচ তারপরেও কিভাবে কাজ শেষ বলে এলাকা ছাড়লেন ঠিকাদার তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। অনেকে আবার বলছেন টাকা শেষ হয়ে যাওয়াতেই কাজ বন্ধ করেছে ঠিকাদার।

যদিও এঘটনা নিয়ে অন্য সুর জেলা পরিষদের পুর্ত কর্মাধ্যক্ষের গলাতে। যাকে ঘিরেই উঠেছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। এদিকে এই ঘটনা জানবার পরেই তুমুল ক্ষোভ উগড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের কথায় এলাকার মানুষ যে সমস্যায় ডুবেছিল, এই অর্ধেক ড্রেন নির্মাণের জেরে সেই সমস্যা আরও দ্বিগুন মাত্রা পাবে। শুধু তাই নয়, ড্রেন নির্মাণের সরকারী টাকায় যদি লুটপাটই চলবে তবে ওই অসম্পূর্ণ ড্রেন তৈরির কি প্রয়োজন ছিল? ঘটনা নিয়ে কাটমানি তত্ত্বকে সামনে এনে শাসকদলের নেতাদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। ঘটনা নিয়ে জোড়ালো তদন্তের দাবি জানিয়েছেন আম আদমি পার্টির জেলা কর্নধার মৃত্যুঞ্জয় বসাকও। তার কথায় এলাকাতে গেলেই দেখা যাবে অর্ধেক ড্রেন তৈরি হয়ে সম্পুর্ন বোর্ড ঝুলছে। যার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

তৃপ্তি হোটেলের মালিক মনোজ দাস বলেন, তার হোটেল থেকে ড্রেনটি তৈরি হবার কথা থাকলেও কি কারনে তা হল না তারা জানেন না। হোটেলের জল নিয়ে চরম সমস্যায় ভুগছেন। ড্রেনের প্রয়োজন খুবই ছিল তাদের। এর আগে ঠিকাদারের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছিলেন টাকা নাকি শেষ হয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মায়া দাস ও দীপক দাসরা বলেন, বর্ষার সময় রাস্তার উপর দিয়ে জল বয়ে যায়। তারা ভেবেছিলেন ড্রেনটি নদী পর্যন্ত হলে এলাকার মানুষের সমস্যা মিটবে। কিন্তু সরকারের টাকা অপচয় করে পরিকল্পনাবিহীন ভাবে এই ড্রেন নির্মাণের কি প্রয়োজন ছিল তা তারা বুঝে উঠতে পারছেন না।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, সবই কাটমানির মায়া। তৃণমূল নেতারা যেভাবে ঠিকাদারদের শুষে নিচ্ছে তাতে করেই এসব পরিস্থিতির মুখে পড়ছে সাধারণ মানুষ।

জেলা পরিষদের পুর্ত কর্মাধ্যক্ষ মফিজুদ্দিন মিঞা বলেন, পরবর্তীতে ওই ড্রেন নির্মাণের জন্য টাকা বরাদ্দ হলে তবেই তা সম্পুর্ন করা সম্ভব।

নিউজ ফ্রন্ট বাংলার অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন টি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।