এনএফবি, পূর্ব মেদিনীপুরঃ
পুরসভার মেয়াদ প্রায় শেষ হতে চলেছে। তার আগে দুয়ারে চেয়ারম্যান প্রকল্পে পাঁশকুড়া পুরসভার ১৮ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে জন সংযোগের সময় এক প্রকার ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যানকে।কোনো এলাকায় ঘর নেই তো কোথাও পানীয় জলের সমস্যা, কিংবা রাস্তার সমস্যা নিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে মুখ খুললেন পুরসভার বাসিন্দারা।
১৮ নং ওয়ার্ডের জঁদড়া গ্রামের বাসিন্দা দুর্গারানী সাউ দীর্ঘদিন ধরে বেড়া লাগানো মাটির বাড়িতে বাস করছেন। বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলেন তার স্বামী, কিন্তু দুর্গাদেবীর স্বামীর মৃত্যুর পর পাঁচ বছর কেটে গেলেও তাঁর স্ত্রী দুর্গারানী সাউ প্রধান মন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে আজও বঞ্চিত রয়েছেন। বার বার প্রতিশ্রুতি পেলেও কোনো কাজ হয়নি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের। দুয়ারে চেয়ারম্যান কর্মসূচিতে পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান ১৮ নং ওয়ার্ডের জঁদড়া এলাকায় গেলে, চেয়ারম্যান নন্দ মিশ্রের কাছে দুর্গারানী সাউ ও তাঁর মেয়ে এমন অভিযোগ করেন। চেয়ারম্যান আসে, চেয়ারম্যান যায় তাদের প্রতিশ্রুতি পুরোটাই বৃথা। ১৮ নং ওয়ার্ডের ভূঁঞা পাড়ার মাটির রাস্তা হয়নি। বা কেউ কেউ পায়নি আবাস যোজনার বসতবাড়ি। বর্ষার সময় ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। ওই পুরসভা এলাকার মানুষের অভিযোগ দীর্ঘ বছর ধরে জঁদড়া এলাকার ভূঁঞা পাড়ার মানুষজনদের মাটির রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। বর্ষা নামলেই জল কাদা মাটির ওপর দিয়ে হাঁটু জল পেরিয়ে মোরাম বাঁধে উঠতে হয় তাদের। এলাকার মানুষদের অভিযোগ ঐ মাটির রাস্তা ঢালাইয়ের জন্য ৮ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সাংশন হলেও তা বাতিল হয়ে ব্যক্তিগত রাস্তা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি জলনিকাশি ড্রেন তৈরির জন্য আবেদন করেন এলাকাবাসি। তবে এলাকার মানুষ আরও অভিযোগ করেন টাকার বিনিময়ে আবাস যোজনা দেওয়া হচ্ছে ১৮ নং ওয়ার্ডে। চেয়ারম্যানকে হাতের নাগালে পেয়েই এমন অভিযোগ করেন জঁদড়া এলাকার সাধারণ মানুষ।
তবে পুরসভার চেয়ারম্যান নন্দকুমার মিশ্র বলেন পুর এলাকায় উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু হয়তো করোনার কারণে আমাদের পিছিয়ে পড়তে হয়েছিল। সেই কারণে কিছু কিছু জায়গায় কাজ বাকি থেকে গেছে। তিনি বিরোধীদের কটাক্ষের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন “দিদি তো অনেক শ্রী করেছেন এবার ছানিশ্রী প্রকল্প করুন, যাদের চোখে ল্যাবা পড়ে গেছে, যারা উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছে না। ছানিশ্রী প্রকল্পের মধ্য দিয়ে দিদির উন্নয়ন গুলো দেখতে পায়।” পাশাপাশি আরও বলেন “দুয়ারে সরকারের মধ্য দিয়ে আমাদের প্রচুর ক্যাম্পের মাধ্যমে অনেক মানুষ পরিষেবা পেয়েছেন। তার বাইরে যদি কিছু মানুষ বাকি থেকে যায় তাদের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এই দুয়ারে চেয়ারম্যান কর্মসূচি। সেক্ষেত্রে পাঁশকুড়ার চেয়ারম্যান এলাকার মানুষদের অভিযোগ শুনে তাদের সমস্যার সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে এ বিষয়ে বিজেপি নেতা প্রতীক পাখিরা কটাক্ষ করে বলেন, “তৃণমূলের যত চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ছিল সকলে ঘুমিয়েছিল। শুধু তাই নয় সন্ধ্যার পর থেকে কে দুই তলার ওপর তিনতলা ঘর করবে ,কে এক লক্ষ্য টাকা কাটমানি দেবে তার ঘরটা হবে। যারা কালবৈশাখী ঝড়ে মাটির ঘর ছেড়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেয়, যাদের ঘর নেই তাদের দিকে তাকাচ্ছে না। আগামী দিনে পুরসভা ভোট আসছে তাই এটা ভিক্ষা চাইতে যাচ্ছে মানুষের কাছে।”
এর পাল্টা বক্তব্য পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি হানিফ মোহাম্মদ বলেন, “বিরোধীদের কাজ হচ্ছে বিরোধিতা করা তাই এই অভিযোগ ভিত্তিহীন, মা মাটি মানুষের সরকার কাজ করছেন এবং আমাদের পুরসভার চেয়ারম্যানের উদ্যোগে দুয়ারে চেয়ারম্যান খুব ভাল উদ্যোগ বলে মনে করি।”