নদী গিলছে জমি, ঘুম উড়েছে কোচবিহারবাসীর

এনএফবি,কোচবিহারঃ

বিগত কয়েকদিন টানা বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত কোচবিহারবাসী। একাধিক জায়গায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনও দেখা গিয়েছে একাধিক নদীতে। মাথাভাঙ্গা ১ ব্লকের জোড়পাটকি গ্রাম পঞ্চায়েতের পানাগুড়ি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়ার মানসাই নদীর ভাঙন অব্যাহত। বর্ষার শুরুতেই মানসাই নদী ক্রমশ গ্রামের দিকে এগিয়ে আসায় রাতের ঘুম উড়েছে এলাকাবাসীর। দু’বছর আগে বর্ষাতে নদী ভাঙন শুরু হলে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখানোর পর স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ভাঙন প্রবন এলাকায় বাঁশের পাইলিং দিয়ে ভাঙন মেরামতের চেষ্টা করা হলেও মানসাইয়ের নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। এবারও সেই একই দৃশ্য, মানসাইয়ের ভাঙন অব্যাহত।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসন সবাইকে অভিযোগ জানানো হলেও ভাঙনরোধে কারও কোন হেলদোল নেই। এবছর বর্ষার পর বাঁধের কাজ শুরু না হলে ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা। গ্রামবাসীদের দাবি, দ্রুত পাথরের বাঁধ তৈরীর উদ্যোগ নিক প্রশাসন।
জানা গিয়েছে, নদী পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা আগে পাড় ভাঙন দেখেননি। তবে নদীর ওপারে পাকা বাঁধ হতেই এপারে নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। পাড়ের কৃষি জমি ভাঙতে ভাঙতে নদী এখন গ্রামের দিকে চলে এসেছে। বিঘার পর বিঘা জমি মানসাই গিলে নিয়েছে। এবছর বাঁধ না হলে তিনপুরুষের ভিটে মাটি হারা হতে হবে বলে অনেকে জানান। মানসাই নদীসংলগ্ন পানাগুড়ি গ্রামে প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষ রয়েছেন। এই গ্রামের পশ্চিম পাশ থেকে ধরলা নদী মানসাইয়ে মিলিত হয়ে পূর্বদিকে বয়ে গিয়েছে মানসাই নদী। শুখা মরশুমে শান্ত থাকলেও বর্ষার নদী ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। বর্তমানে যা পরিস্থিতি কার্যত দুয়ারে চলে এসেছে মানসাই নদীর জল যা নিয়ে কার্যত দিশেহারা নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।

এলাকাবাসী। নিজস্ব চিত্র

গ্রামের বাসিন্দা ওয়ায়েদ মিয়া, আছানুল হকরা জানান, পানাগুড়ি বাঁধ থেকে শিবপুর বাঁধ পর্যন্ত ১১০০ মিটার স্থায়ী বাঁধের দাবি সেচ দপ্তর ও কোচবিহার জেলা পরিষদসহ বিষয়টি বারবার বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিকে জানিয়েও লাভ হয়নি।
এবিষয়ে মাথাভাঙ্গা ১ ব্লকের বিডিও সম্বল কুমার ঝা জানান, নদী ভাঙন রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পানাগুড়ি এলাকায় মানসাই নদীর ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে সেচ দপ্তরের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
তবে এবিষয়ে মাথাভাঙ্গার সেচ দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার কেশব রঞ্জন রায় এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে চাননি।