কলকাতা: কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে পাঁশকুড়া শহর সহ আশপাশের এলাকা জলে ভাসছে। বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার সরাসরি পাঁশকুড়ায় গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিভিসির জলছাড়ের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
গতকাল কলকাতা থেকে রওনা দিয়ে হুগলির পুরশুড়া, আরামবাগ ও গোঘাটের বন্যা কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা শোনেন এবং পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন তিনি।
পাঁশকুড়ায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকার যা সাহায্য করার করবে। কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা ডিভিসি জল ছাড়ায় এই বন্যা হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে এই বন্যা হওয়ার কথা নয়। আমরা কয়েকশো পুকুর কেটেছি, চেক ড্যাম তৈরি করেছি, এরকমটা হওয়ার কথাই নয়। আমরা কপালেশ্বর-কেলেঘাই প্রোগ্রামের মাধ্যমে অনেকটাই সমস্যা মিটিয়ে ছিলাম। কিন্তু ডিভিসির জল ধারণ ক্ষমতা ৩৬ শতাংশে নেমে এসেছে, কারণ তারা ড্রেজিং করাচ্ছে না। কেন বাংলাকে এভাবে ডুবতে হবে? আমরা এর উত্তর চাই।”
পাঁশকুড়া স্টেশন, বিডিও অফিস-সহ শহরের ১৮টি ওয়ার্ডই জলমগ্ন। গতকাল পাঁশকুড়ার গড় পুরুষোত্তমপুরে কংসাবতীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় হু হু করে জল ঢুকে পড়ে। এই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ সরাসরি পাঁশকুড়ায় পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে, অতিবৃষ্টি ও ডিভিসির জল ছাড়ার ফলে হুগলি জেলার প্রায় ৭ হাজার হেক্টর ধান জমি ও ২ হাজার ২৫ হেক্টর সবজি চাষের জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে, জমি থেকে জল নামলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সঠিকভাবে জানা যাবে। পুজোর আগে এই ক্ষতি কৃষকদের জন্য মারাত্মক সমস্যা তৈরি করেছে। সরকারি সাহায্য না পেলে পুনরায় ঘুরে দাঁড়ানো তাঁদের পক্ষে অসম্ভব বলে দাবি করেছেন কৃষকরা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, “জল আর আগুনে ঝুঁকি নেবেন না। অন্তত কয়েকদিন ত্রাণ শিবিরে থাকুন বা সুরক্ষিত জায়গায় আশ্রয় নিন। তারপর জল নামলে বাড়িতে ফিরুন। প্রশাসনকে বলব ত্রাণে যেন কোনও অসুবিধা না হয়। প্রতিটি পরিবারকে দেখে নেবেন, কেউ যেন অসুবিধায় না পড়ে। আমি সত্যিই শঙ্কিত। আমি ডিভিসির সঙ্গে সব সম্পর্ক কাট-অফ করব, যদি তারা পরিকল্পিতভাবে মানুষকে এভাবে ডোবায়।”