মাধ্যমিকে দশম স্থানাধিকারী ঝাড়গ্রামের অরিত্র মণ্ডল

এনএফবি,ঝাড়গ্রামঃ

মাধ্যমিকে দশম স্থান অধিকার করে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করল ঝাড়গ্রামের অরিত্র মন্ডল । ঝাড়গ্রাম কুমুদ কুমারি ইনস্টিটিউশনের ছাত্র । বাবা অনিন্দ্য মন্ডল পেশায় স্কুল শিক্ষক, মা প্রিয়াঙ্কা মন্ডল গৃহবধূ । দাদু হিতেশ মন্ডল অবসরপ্রাপ্ত শিলদা চন্দ্রশেখর মহাবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ । ঠাকুরমা কল্পনা মন্ডল গৃহবধূ । বাড়িতে রয়েছে তার চার বছরের ছোট্ট বোন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী অদিত্রী মন্ডল ।

মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনই অসুস্থ হয়ে পড়েন দাদু হিতেশ মন্ডল । পরীক্ষার দিন সকালে দাদুকে ঝাড়গ্রামের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করে অরিত্র ও তার বাবা । তারপর পরীক্ষা দেয় অরিত্র । পরীক্ষা চলাকালীন অরিত্র খোদ নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় এবং অসুস্থতার মধ্যেই বাকি পরীক্ষাগুলো দেয় অরিত্র । আজ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার পর দেখা যায় আশাতিত ফল করে অরিত্র। অরিত্র বলে , “আমি ভেবেছিলাম ৬৮০ নাম্বার পাব কিন্তু পরীক্ষার রেজাল্টের পর দেখলাম ৬৮৪ নাম্বার হয়েছে । ভালো ফল করব ভেবেছিলাম কিন্তু এক থেকে দশের মধ্যে স্থান করব তা ভাবিনি । ঝাড়গ্রাম কুমুদ কুমারি ইনস্টিটিউশন থেকেই উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ার ইচ্ছে রয়েছে। ভবিষ্যতে আমার মূল লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া দেশের সেবা করা।” অরিত্রের দাদু অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিতেশ মন্ডল বলেন , ” আজ সকাল থেকেই আমার মনটা বলছিল দাদুভাই কিছু একটা স্থান অধিকার করবেই কিন্তু রেজাল্ট না বেরোলে সকলকে তা বলতে পারিনি । রেজাল্ট বের হতেই টিভিতে দেখলাম সত্যি সত্যি নাতি দশম স্থান অধিকার করেছে । খুব ভালো লাগছে আরও বড় হোক । আমি অসুস্থ ছিলাম যখন মাধ্যমিক পরীক্ষা হয় । সুস্থ হয়েছি আজকের এই দিনটি দেখার জন্য।” অরিত্রর বাবা পেশায় স্কুল শিক্ষক অনিন্দ্য মন্ডল বলেন “ছেলে যা নিয়ে পড়তে চায় আমরা তাই পড়াবো । কোনো কিছুই চাপিয়ে দেবো না ওর যা মনের ইচ্ছে তা সফল করতে আমরা সাহায্য করবো।” মা প্রিয়াঙ্কা মন্ডল বলেন” খুবই ভালো লাগছে ছেলের আজকের রেজাল্ট দেখে । সকলের আশীর্বাদে আগামী দিনে আরও এগিয়ে যাক এটাই শুধু চাওয়া” । এদিন রেজাল্ট বেরোনোর পরে তার বাড়িতে শিক্ষক সংগঠন এবং সাংবাদিকদের ঢল নামে ।

ঝাড়গ্রাম রিপোর্টাস ক্লাবের পক্ষ থেকে তার বাড়ি গিয়ে অরিত্রর হাতে শুভেচ্ছা স্মারক, পেন ,মিষ্টি তুলে দেন ঝাড়গ্রাম রিপোর্টার্স ক্লাবের সদস্য ইন্দ্রজিৎ মন্ডল, সুমন্ত সিনহা, স্বপ্নীল মজুমদার । ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জয়দীপ হোতা ফুল এবং মিষ্টি দিয়ে তাকে সংবর্ধনা জানায় । ঝাড়গ্রাম জেলার মাধ্যমিক পরীক্ষার কনভেনর অজিত নায়েক তিনি অরিত্রর হাতে উপহার হিসাবে বিজ্ঞানের একটি বই তুলে দেন । বই পেয়ে অরিত্র জানিয়ে দিলেন ভবিষ্যতে তার লক্ষ্য চিকিৎসক হওয়া আর জঙ্গলমহলের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা করে যাওয়া ।