অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
‘দাদা কমে নিয়ে যান দশ টাকায় প্যাটিস’ মোহনবাগান গেটের বাইরে প্যাটিস বিক্রেতার আকুতি মিনতি, অথবা ভেপাসা গরমে লেবু জল বিক্রেতার মুখে হাসি। এই টুকরো টুকরো কোলাজই তো চেনা ছবি। এগুলোই তো দেখে অব্যস্থ ছিল কলকাতা ময়দান। কিন্তু মারণ ভাইরাস সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেয়। আবার বছর দুই পরে ফিরল আবেগ, ফিরল নস্টালজিয়া। সময়ের ছন্দ ফিরিয়ে দিয়েছে সবকিছু। ফিরিয়ে দিয়েছে মোহনবাগান আবেগও। সকাল থেকে সেজে ওঠে মোহনবাগান লন। সন্ধ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবুজ মেরুন টুনি লাইটে ক্লাব জ্বলজ্বল করছিল। গোটা ক্লাবে খানাপিনা ফিশ ফ্রাই গন্ধতে মো মো করল ক্লাব। দুপুরে প্রাক্তন ফুটবলারদের ম্যাচও হল। সেই ম্যাচে শিবদাস ভাদুড়ী দল ২-১ গোলে জেতেও। জোড়া গোল করলেন দীপেন্দু বিশ্বাস। তৃণমূল বিধায়ক বাবুল সুপ্ৰিয় বলে গেলেন,” আমি মোহনবাগান সবসময় থাকব। যদি ম্যানচেস্টার সিটি আর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলাও হয় আমি কিন্তু মোহনবাগানকেই সাপোর্ট করব।”সন্ধ্যা বেলা একে একে সবাই পুরস্কার পেলেন। এবার মোহনবাগান রত্ন হওয়া শ্যাম থাপা জানিয়ে গেলেন,” মোহনবাগান ইস মোহনবাগান আমার হৃদয়ে সবসময়ে গোটা বিশ্বে মোহনবাগান সমর্থক আছে। ইতালি, ইংল্যান্ডেও।” বাগান সভাপতি টুটু বসু আবার পাঁচ গোলের বদলা নিতে চান। তিনি বললেন, ” টুটু বসু দুটো জিনিস ভালোবাসে, খেতে আর ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে। পাঁচ গোলের বদলা ক্লাব নেবে এটা আমি জানি। আর খুব তাড়াতাড়ি ইস্টবেঙ্গলকে আমরা পাঁচ গোল দেব, আসন্ন ডার্বিতেই দেবো।” এদিন আবার এটিকে মোহনবাগান দল সকালেই ক্লাবে অনুশীলন করে। মার্জ হওয়ার পরে প্রথমবার। তবে এতোকিছুর মধ্যেও চোনা কিন্তু ছিল। যেমন ১৯১১ অমর একাদশ যাদের আইএফএ শিল্ড জয় উপলক্ষে মোহনবাগান দিবস পালিত হয় তাঁদের মূর্তিই নেই এই বিশেষ দিনে। ক্লাব সূত্রের খবর সারাতে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আগামী ১০ আগস্ট তাঁবু উদ্বোধন করবেন সেদিনই নতুন রূপে সেই মূর্তি সেজে উঠবে। একইসঙ্গে এটিকে কাটাও রইল দুপুর থেকে গ্যালারিতে একদল সমর্থক রিমুভ এটিকে নিয়ে বিক্ষোভ করেন গ্যালারিতে। সন্ধ্যা বেলা তুবড়ি রঙ মশাল জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেন।এরইমধ্যে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মোহনবাগান কর্তাদের একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলেন। আইএফএ কর্তাদের সামনেই সবুজ মেরুন কর্তাদের উদ্দেশ্যে জানান, “মোহনবাগান এএফসি কাপ খেলছে গোটা বিশ্বের কাছে যা গর্বের দিন। কিন্তু মনে রাখতে হবে মোহনবাগান ক্লাবই বাংলা ফুটবলের অন্যতম সাপ্লাই লাইন তাই মোহনবাগান ট্রফি জিতছে আর বাংলা সন্তোষে জিতছে না এটা যেন না হয়। মোহনবাগানের পরিচয় কিন্তু বাংলা দিয়েই। তাই আমরা আশা করব তারা বাংলাকে যেন ভুলে না যায় কলকাতা লিগে যেন ইস্টবেঙ্গল -মোহনবাগান মাঠে নামে এটা আমি ওদের ক্লাব কর্তাদের কাছে দাবি করছি।” এরপরে হল চন্দ্রবিন্দুর গান।