অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
আগের থেকে কিছুটা ভাল আছেন কিংবদন্তি ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত। পুরোপুরি সঙ্কট না কাটলেও চিকিৎসায় সারা দিচ্ছেন প্রাক্তন ফুটবলার। শুক্রবার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে যে মেডিকেল বুলেটিন দেওয়া হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, অক্সিজেন পরিমান ষাট থেকে আশিতেই আছে। আইসিএউতে ‘হাই ফ্লো নেসাল অক্সিজেন সাপোর্টে’ রয়েছেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত। এর ফলে তাঁর স্যাচুরেশন মাত্রা ৯৪-৯৮-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তাঁকে রেমডিসিভিয়ার, স্টেরয়েড ইঞ্জেকশনও দেওয়া হচ্ছে। তাঁর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জ্ঞান, বোধ দুই রয়েছে এবং নিজের পরিবারের লোকজনকে চিনতে পারছেন, এই কথাও বলেছেন।ডাক্তার অজয় কৃষ্ণর তত্ত্বাবধানে আছেন সুরজিৎ।
পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়, ‘বাইপ্যাপ খোলায় যেহেতু অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে, তাই ওভাবেই এখন অক্সিজেন সরবরাহ করে দেখবেন চিকিৎসকরা। তবে চিকিৎসকরা পুরোপুরি বাইপ্যাপ খুলে এখনই কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। ধীরে ধীরে পর্যবেক্ষণ করছেন তাঁরা। গতকাল রাতে ভালো ঘুমও হয়েছে। খাওয়া দাওয়াও করছেন।’ গত মঙ্গলবার ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি বৈঠক হয়। একটি মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সুরজিৎ যে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি সেখানকার চিকিৎসকরা ছাড়াও, প্রাক্তন ফুটবলার ও বিধায়ক মানস ভট্টাচার্য, বিদেশ বসু এবং সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়াও ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার এবং মোহনবাগানের অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত, আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ও ছিলেন। এছাড়া ছিলেন সুরজিতের ছেলে স্নিগ্ধজিত সেনগুপ্ত। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করার। তিন প্রধানের মধ্যে মোহনবাগানে তিনি প্রথম খেলেন। তারপর তাঁকে সই করানো হয় লাল-হলুদ শিবিরে। লাল-হলুদে এসে ঘরের ছেলে হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কলকাতার তিন প্রধানে দাপটে খেলেন। তবে তিনি ইস্টবেঙ্গলের ঘরের ছেলে হিসেবেই পরিচিত। বিখ্যাত পাঁচ গোলের নায়কও তিনি। ১৯৭০ থেকে ১৯৭৫ এবং ১৯৭৭-এর কলকাতা ফুটবল লিগ, ছ’বার আইএফএ শিল্ড, তিন বার ডুরান্ড জয়ের মুকুট উঠেছিল ইস্টবেঙ্গলের মাথায়। স্বপ্নের দৌড়ে চলছিল লাল-হলুদ বাহিনী। ১৯৭৫ সালের ডার্বিতে (আইএফএ শিল্ডের ফাইনাল) ইস্টবেঙ্গল ৫-০ গোলে হারিয়েছিল মোহনবাগানকে। ঐতিহাসিক এই ম্যাচের পাঁচ মিনিটে গোল করেই দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত। ১৯৭৭-৭৯ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি।