এনএফবি, পূর্ব মেদিনীপুরঃ
কোলাঘাট নতুন বাজার রাধামাধবজিউ আশ্রমে মহাধুমধাম ও উদ্দীপনায় উদযাপিত হল অন্নকুট মহোৎসব। গোবর্দ্ধন পুজোর পর ৫৬ভোগ ও ৩৬ব্যাঞ্জন সহযোগে অন্নের পাহাড় সাজিয়ে শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হয়। তারপর প্রায় সহস্রাধিক ভক্তদের মধ্যে সেই প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
আশ্রমের বহুসংখ্যক সেবক আগের রাত থেকেই পরম যত্নে এবং ভক্তিভরে রান্নার এই বহুবিদ পদ প্রস্তুত করেন। শুক্ত, ফুলকপি ও আলু পটলের রসা, কাঁচা কলার গোল্লা, থোড়মচা, পালংপনির, পুঁই-লাউ-লটে শাকের তরকারি, ধোকা, পরমান্ন, পে়ঁপে-আম- চলতার চাটনি, বহুবিধ মিষ্টান্ন, পায়েস, পিঠে পুলি ইত্যাদি ছিল উল্লেখযোগ্য।
জানা যায়, শ্রীকৃষ্ণের যুক্তিসঙ্গত পরামর্শে ব্রজবাসী বৃষ্টির জন্য অহেতুক ইন্দ্রদেবের পুজো না করে তারা গোবর্দ্ধন বা গো পুজো শুরু করেন। ইন্দ্র রুষ্ট হয়ে ব্রজধামে তুমুল বর্ষন শুরু করেন। ব্রজবাসীকে দূর্যোগের হাত থেকে বাঁচাতে শ্রীকৃষ্ণ গিরিধারি রূপে গিরিগোবর্দ্ধন পাহাড়কে তুলে ধরে তার নীচে ব্রজবাসীদের আশ্রয় দেন। ক্ষান্ত হয় ইন্দ্ররাজ। এরপর ব্রজবাসীরা প্রসাদি হিসাবে পাহাড়ের চূড়াসম বহু পরিমাণ অন্ন নিবেদন করে গিরিগোবর্দ্ধনের পুজো করেন। সেই প্রথা মেনে আজও ভক্তরা গিরিগোবর্দ্ধন পূজা ও অন্নকুট মহোৎসবের আয়োজন করেন।
হিন্দুধর্মাবলম্বীদের উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গার মত কোলাঘাট নতুন বাজার রাধামাধব মন্দিরে এই অন্নকুট মহোৎসবে বহু ভক্তের সমাগম ঘটে।
আশ্রমের পক্ষে ভীম দাস বলেন, এখন চলছে কঠোর নিয়ম নিষ্ঠা আচারের মধ্য দিয়ে একমাস ব্যাপী নিয়মসেবা বা কার্তিকব্রত উদযাপন। প্রত্যহ প্রভাতে নগরসংকীর্তন, সন্ধ্যায় আরতি, দ্বীপপ্রজ্বলন এবং ভাগবত পাঠের আসর বসছে। তার মধ্যেই এই গিরিগোবর্দ্ধন পুজো এবং অন্নকুট মহোৎসব আমরা প্রথা মেনেই প্রতি বছর উদযাপন করে থাকি।