এনএফবি, কলকাতাঃ
ব্যতিক্রমী অনুব্রত। তদন্তকারীদের নজরে এবার গাড়ি। মঙ্গলবার নিজের জেলা বীরভূম থেকে গাড়িতে করে কলকাতায় নিজের ফ্ল্যাট চিনার পার্কে আসেন তিনি। সেখানেই রাত্রিবাস করে সকালে বাইপাস ধরে সিবিআই দফতরে যাওয়ার পথে বুকে ব্যথা নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন। উভয় ক্ষেত্রেই যে গাড়িতে তৃণমূল নেতা চেপেছিলেন তার মাথায় ছিল ‘লালবাতি’।
যেখানে মন্ত্রীদের গাড়িতেই লালবাতি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেখানে একটি রাজনৈতিক দলের জেলা সভাপতির গাড়িতে ‘লালবাতি’ ব্যবহার ঘিরে উঠছে প্রশ্ন। যদিও অনুব্রত দুটি কমিশনের চেয়ারম্যান, যার পদ মর্যদা মন্ত্রী সমতুল্য, তবুও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্য কোনও মন্ত্রী যেখানে লাল বাতি ব্যবহার করেন না সেখানে অনুব্রতর চাপা গাড়িতে কেন- প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই।
২০১৭ সালের ১ মে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী কোনও কমিশনের সভাপতি লাল বাতি নিয়ে ঘুরতে পারেন না। জেলা শাসকের অনুমতি নিয়ে কোনও গুরুতবপূর্ণ ব্যক্তি জেলার মধ্যে লাল বাতি নিয়ে ঘুরতে পারেন। তবে সেই লাল বাতি সংশ্লিষ্ট জেলার গন্ডি পার করতে পারবে না।
তৃণমূল জেলা সভাপতির গাড়িতে ‘লালবাতি’-র বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বীরভূম জেলা প্রশাসন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে তারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না। জানা গেছে, মঙ্গলবার যে গাড়িতে করে কেষ্ট বীরভূম থেকে কলকাতা এসেছেন সেই গাড়িটি বিদ্যুৎ বরণ গায়েন নামে জনৈক এক ব্যক্তির নামে নথিভুক্ত। ২০১৭ সালের ২৪ মে গাড়িটি নথিভুক্ত হয়।
কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার করতে পারবেন না। তা সে মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ যেই হোন না কেন। কেন্দ্রের আইন অনুযায়ী বিমান বন্দর, খনি এবং বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের গাড়িতে ‘হলুদবাতি’ ব্যবহার করা যাবে। অ্যাম্বুলেন্স, দমকলের গাড়িতে ‘নীলবাতি’ ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে লাল-নীল মাল্টি কালার্ড বাতি করতে পারেন কোনও কোনও সুনির্দিষ্ট পদাধিকারী।
বুধবার গরু পাচার মামলায় সিবিআই তলব করছিল অনুব্রতকে। সকাল ১১টার সময় কলকাতার নিজাম প্যালেসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আঞ্চলিক অফিসে তদন্তকারীদের সামনে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। এরপূর্বে চার বার শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাজিরা দিতে পারেন নি তিনি। চতুর্থবার তলবের পর সিবিআইয়ের কড়া পদক্ষেপ থেকে ‘রক্ষা কবচের’ আবেদন জানান কলকাতা হাইকোর্টে। প্রথমে সিঙ্গেল বেঞ্চ পরে ডিভিশন বেঞ্চ তৃণমূল নেতার আবেদন খারিজ করে দিয়ে তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দেয়। পঞ্চমবারের তলবে হাজিরার আগেই হাসপাতালে ভর্তি হন বীরভূমের দাপুটে কেষ্ট। এই পরিস্থিতি যে গাড়িতে তিনি চাপলেন তাতে কেন লালবাতি- প্রশ্ন তদন্তকারী আধিকারিকদের।
আরও পড়ুনঃ এসএসকেএম হাসপাতালে অনুব্রত , বুধবার শেষ পর্যন্ত সিবিআই দফতরে হাজিরা দেবেন অনুব্রত?