এনএফবি, কলকাতাঃ
নারদ মামলার শুনানি ছিল শনিবার। এ দিনের শুনানিতে হাজিরা দিতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র, কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বান্ধবী বৈশাখীকে নিয়ে আদালত চত্বরে পৌঁছান কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ম্যাথু স্যামুয়েল এবং তাঁর সহকর্মী অ্যাঞ্জেল আব্রাহাম প্রায় বাহান্ন ঘন্টা ধরে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত একটি স্টিং অপারেশন করেন। যা ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে আসে। গোপন ক্যামেরায় রেকর্ড করা ওই ভিডিও-তে একাধিক নেতা-মন্ত্রীকে আর্থিক লেনদেন করতে দেখা গিয়েছিল। ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদ, অপরূপা পোদ্দার, শঙ্কুদেব পাণ্ডা, আইপিএস অফিসার এস এম এইচ মির্জাকে টাকা নিতে দেখা যায়। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই ভিডিওর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। স্টিং অপারেশনে ব্যবহৃত টাকার উৎস নিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়েন ম্যাথু। কলকাতা হাইকোর্ট তরফে ম্যাথুর কাছে টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি দাবি করেন-এই অনুসন্ধানে ব্যবহৃত ৮৫ লক্ষ টাকা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ কে ডি সিংয়ের সংস্থার কাছ থেকে পেয়েছেন। ম্যাথুর দাবি যাচাই করতে কে ডি সিংয়ের সংস্থাকে নোটিশ পাঠায় আদালত। তবে ম্যাথুর দাবি খারিজ করে দেয় কে ডি সিংয়ের সংস্থা। তারপর থেকে নোটিশ পাঠানো হলেও একাধিকবার হাজিরা এড়ান ম্যাথু।
এরই মাঝে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নয়া মোড় নেয় নারদ মামলা। সেই বছর ১৭ মে তৎকালীন তৃণমূলের তিন বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। এরপরই নিজাম প্যালেসে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক। সেখানে প্রায় ৬ ঘন্টা বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা পরিস্থিতিতে দফতরের বাইরে এতো ভিড় জমে যায় যে বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করতে হয়। পরে তাদের জামিন হয়ে যায়। কিন্তু জামিন হয়ে গেলেও এই মামলার শুনানি চলছে। সেই শুনানিতেই এ দিন সকলকে ফের তলব করা হয়।
শনিবার সকালে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে সবার আগে পৌঁছান মদন মিত্র, তারপরেই হাজির হন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে এ দিন আদালত চত্বরে সংবাদ মাধ্যমকে কোন প্রতিক্রিয়া জানাননি কেউই।