রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের মূলে তোলাবাজির বখরা- বিজেপি রিপোর্ট, প্রতিহিংসামূলক প্রতিক্রিয়া মুখ্যমন্ত্রীর

এনএফবি ডেস্ক, নয়া দিল্লিঃ

রামপুরহাট হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিজেপির দলীয় তদন্ত রিপোর্ট দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কাছে জমা দিয়েছে তদন্তকারী দল। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিজেপির অনুসন্ধানকারী দল এই রিপোর্ট পেশ করেছে। জানা গেছে, বাগটুই হত্যাকাণ্ড এবং ভাদু শেখ খুনের প্রধান কারণ হিসাবে রাজ্যের শাসক দলের অন্দরে তোলাবাজির বখরা নিয়ে ঝামেলাকেই প্রধান কারণ হিসাবে রিপোর্টে চিহ্নিত করা হয়েছে।

গত ১০ বছরে একাধিক তৃণমূল নেতা ও জনপ্রতিনিধির সম্পত্তি, বাড়িঘর তাক লাগিয়েছে। ব্যতিক্রম ছিলেন না বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ। একদা গরিব ভাদুর পেল্লাই বাড়ি নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠছে। কী করে গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ এতবড় পাকা বাড়ি গড়ে তুলেছিলেন, সেই খবরও নাড্ডাকে দেওয়া বিজেপির প্রতিনিধি দলের ২৩ পাতার রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। বুধবার সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতিকে জমা দেওয়া রিপোর্ট সম্পর্কে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “বগটুই গিয়ে আমরা যা দেখেছি, যা শুনেছি সেটাই রিপোর্টে উল্লেখ করা রয়েছে। আমরা জানিয়েছি যে, বাংলায় আইনের শাসন নয়, শাসকের আইন চলছে। সব শুনে নড্ডাজি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।“

পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ তলানিতে যাচ্ছে। এই অভিযোগে সরব বিজেপি। একই দাবি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়েরও। মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে রাজ্যপাল আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজভবনে তলব করেছেন। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে মুখোমুখি আলোচনায় আগ্রহী রাজ্যপাল। পাশাপাশি, বিজেপির তরফে এ রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের আর্জি জানানো হয়েছে বলে খবর।

আরও পড়ুনঃ ভাদু খুনে গ্রেফতার আরও ৩, বগটুই ফিরছে মিহিলাল

এদিকে বিজেপির এই রিপোর্টে বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম রয়েছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “বিজেপি আসলে চায় ওকে গ্রেফতার করা হোক। যে সমস্ত রাজনৈতিক দল বিজেপির বিরোধিতা করবে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই এই ধরনের প্রতিহিংসার রাজনীতি করবে। আমি ওদের রিপোর্ট দেখেছি। ওরা কোনও তদন্ত ছাড়াই কী ভাবে আমার জেলা সভাপতির নাম বলল? বিজেপির রিপোর্ট প্রতিহিংসামূলক।“
২১ মার্চ বগটুইতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২২ মার্চ দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধানকারী কমিটি গড়ে দেন। কমিটিতে ছিলেন সুকান্ত মজুমদার, প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ-সহ উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন ডিজিপি তথা রাজ্যসভার সাংসদ ব্রজলাল, মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার তথা সাংসদ সত্যপাল সিং, কর্নাটকের প্রাক্তন আইজি কে সি রামমূর্তি। ২৪ মার্চ বগটুইতে যায় এই পাঁচজন। সেই রিপোর্টই বুধবার দিল্লিতে সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি নড্ডার কাছে জমা দেয় কমিটি।