জুলাই 5, 2024
Latest:
ক্রীড়া

চলে গেলেন ভারতীয় ফুটবলে প্রথম নাইজেরীয় খেলওয়ার চিবুজোর

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান তথা ভারতীয় ফুটবলে একাধিক নাইজেরীয় ফুটবলার দাপটের সঙ্গে খেলে গেছেন। তবে কোনো জিনিসের প্রথমকে ভোলা সম্ভব না । আর তাই তো কলকাতা ফুটবলে স্বর্ণাক্ষরে লেখা ছিল চিবুজোর নুয়াকানমার নাম। আর সেই ভারতের মাটিতে প্রথম নাইজেরীয় ফুটবলার হিসেবে চিবুজোর নুয়াকানমারের শুক্রবার মৃত্যু হল। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৮ সাল অবধি ভারতীয় ফুটবলে ধারাবাহিকভাবে , খেলেছেন তিনি। জার্সি গায়ে দিয়েছেন কলকাতার তিন প্রধানের। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া ভারতীয় তথা বাংলার ফুটবলে।

মহামেডান স্পোর্টিংয়ে তো চিবুজোর ও এমেকার সাথে পার্টনারশিপ কখনও ভোলার নয় ।১৯৮৯ সালে নেহরু কাপে মহামেডান স্পোর্টিংয়ে ফুটবল উপহারের কান্ডারি ছিলেন চিবুজো। সেই টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনা অনুর্ধ্ব ২২ দল, গ্রিসের অলিম্পিয়াকোসের মত টিম দের সামনে মহামেডান ছিল উজ্জ্বল। ১৯৯১ সালে মহমেডানের ত্রিমুকুট জয়েও তিনি বড় ভূমিকা নেন। শোনা যায় সেই সময়ে সাদা কালো কর্তারা সারাজীবন এই দুই ফুটবলার তাঁদের ক্লাবে খেলার প্রস্তাবও দেন। মোহনবাগানের জার্সিতে সেভাবে ভালো না খেলতে পারলেও ইস্টবেঙ্গলে এই নাইজেরিয় নিজের জাত চেনান। পরবর্তী সময়ে টালিগঞ্জ অগ্রগামীর হয়েও দীর্ঘদিন খেলেন। ১৯৯৫-৯৬ মরশুমে আবার বাংলাদেশের ক্লাব থেকে ১৯৯৮ সালে গোয়ার চার্চিল ব্রাদার্সে খেলে অবসর নেন। অবসরের পর, নাইজেরিয়ার ইমোতে পাদ্রীর ভূমিকা নেন এই ফুটবলার ।

পড়ুয়া হিসেবে ভারতে এসেছিলেন চিবুজোর। এরপরে ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা থেকে তিনি ভারতীয় ক্লাবগুলোর হয়ে মাঠে নামেন। তবে পড়াশোনাতেও খুব ভালো ছিলেন তিনি। থিওলজি নিয়ে বেঙ্গালুরুতে পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি পাস করেন।

ধার্মিক পথে গেলেও ফুটবলই তার প্রেম ছিল । আর সেই কারণে নাইজেরীয়ার লাগোসে আবাসিক কোচিং সেন্টার খোলেন, যেখানে খারাপ পথে চলে যাওয়া তরুণদের ফুটবল শেখাতেন ।

এদিন মহামেডান শীর্ষকর্তা কামারুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “আমাদের ক্লাবকে ও বাকি দুই প্রধানের থেকে বেশি ভালোবাসতো। আমরা ওকে আমাদের ক্লাবের সঙ্গে কোচিংয়ে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাবও দিই তবে রাজি হয়নি ও। কলকাতা ফুটবলে যে সকল সেরা বিদেশি খেলে গেছে তাঁদের মধ্যে চিবুজোর সেরার তালিকায় পড়বে। মাঠে নামলে ওর ফুটবল দেখলে চোখ সত্যিই ভালো হত। একসঙ্গে দর্শনীয় ও অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল খেলতো। নাইজেরীয়দের মধ্যে যেটা দেখা যায় না । এমেকাকে নিয়ে অনেক প্রচার হয়েছে, ওকে নিয়ে হয়নি । তা বলে ওর ভারতীয় ফুটবলের প্রতি অবদান অস্বীকার করতে পারবো না কখনও।”

মহামেডান ক্লাবের গ্যালারি নতুন করে সাজানোর কাজ শুরু হবে খুব তাড়াতাড়ি আর শোনা যাচ্ছে সাদা কালো জার্সি গায়ে ভালো খেলা সকল ফুটবলারদের নামে স্ট্যান্ড করার ভাবনা আছে তাঁদের। সেই তালিকায় চিবুজোরও ছিলেন। কিন্তু তার প্রিয় ক্লাবে তার নামে স্ট্যান্ড আর দেখে যেতে পারলেননা তিনি।