অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
পারলো না বাংলা। বদলা নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করল টিম বেঙ্গল। সেই চার বছর আগে যুবভারতীর ফ্ল্যাশব্যাক । ট্রাইবেকারে কেরালার কাছে হারলো বঙ্গ ব্রিগেড । ট্রাই বেকারে দুই দলই এগিয়ে ছিল, যেহেতু গ্রুপ লিগে কেরালা হারায় বাংলাকে, সেই হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হলো তারা। এদিন ম্যাচ হয় হাড্ডাহাড্ডি। শেষ মুহূর্ত অবধি বোঝা যাচ্ছিল না কারা জিতবে! তবে ভাগ্যর কাছে ভালো খেলেও সামান্য ডিফেন্স ভুলে সন্তোষ জয় করতে পারলো না রঞ্জন ভট্টাচাৰ্য্যর ছেলেরা। যারা বলেন ভারতীয় ফুটবলের সাপ্লাইলাইন মৃত তাঁরা এদিনের ম্যাচটা দেখলে হয়ত দুইবার ভাববেন। প্রথমত ফের একবার দেখা গেলো কেরালার দর্শকদের উন্মাদনা। ম্যাচ শুরুর দুই ঘন্টা আগে থেকে গরমকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে পঁচিশ হাজারের গ্যালারি হাউসফুল। শুরু থেকেই দুই দলের কেউই একে অপরকে এতটুকু জায়গা ছেড়ে দেয়নি। বাংলা যেমন গোলের সুযোগ মিস করল তেমনই কেরালাও মিস করল । ম্যাচের শুরুতেই ১৭ মিনিটে কেরালার বক্সে গিয়ে সহজ সুযোগ মিস করলেন বাংলার অধিনায়ক মনোতোষ চাকলাদার । এর ঠিক পাঁচ মিনিট পরে গোলের সুযোগ পায় কেরালাও । তবে কেরালাও মিস করে সহজ সুযোগ। এরপরে খেলা যত এগোয় ততই গতি বাড়তে থাকে। ৪০ মিনিটে বাংলার সুজিত সিং সহজ গোলের সুযোগ পেয়েও কেরালা বক্সে গিয়ে কন্ট্রোল ধরে রাখতে পারেনি। প্রথমার্ধে গোল শূন্য থাকে । তবে দ্বিতীয়ার্ধে যেন বাংলা খেলার গতি কোথাও যেন উবে গেল! একমাত্র ৫৭ মিনিটে নবি হুসেনের একটা গোলের সুযোগ তৈরী করা ছাড়া তেমন কিছুই নজরে এলোনা । এরপরে বাংলার কোচ রঞ্জন ভট্টাচাৰ্য্য কিছু পরিবর্তন আনেন । এদিন বাংলার ভাগ্য সহায় ছিল।কেরালার জোসেফ ৯০ আর ৯২ মিনিটে দুটো সহজ সুযোগ মিস করেন। প্রথমে বাংলার ডিফেন্সের ভুলে বল বারে লেগে ফিরে আসে । এরপরে জোসেফ বক্সে বল নিয়ে ঢুকলে দুরন্ত সেভ করেন বাংলার প্রিয়ন্ত সিং। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে । আর তখনই ৯৬ মিনিটে হাসি ফোটে টিম বেঙ্গলের। দিলীপ ওরাও হেড থেকে গোল করে যান। গোল খেয়ে মুষড়ে পড়ে দক্ষিণের দলে কেরালা । যদিও অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে কেরালা গোলের সুযোগ তৈরী করে বেশ কয়েকবার। কিন্তু গোলরক্ষক প্রিয়ন্ত সিংয়ের দক্ষতায় সম্ভব হয়নি । তবে কেরালার বিবিন ১৭ মিনিটে বাংলার ডিফেন্স কে বোকা বানিয়ে হেড থেকে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। এদিন বাংলার আক্রমণের থেকেও ডিফেন্স নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেল। আর বাংলার মাঝমাঠ আর ফরওয়ার্ডরা খালি বল তুলে গেল। ম্যাচ গড়ায় ট্রাই বেকারে।
সেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। কেউই গোল মিস করেনি । তবে যেহেতু কেরালা গ্রুপ লিগে বাংলাকে হারায় সেই ভিত্তিতে তাঁদের জয়ী ঘোষণা করা হয়। ঘরের মাঠে নিজেদের রাজ্য সন্তোষ জেতায় উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন কেরালার দর্শকরা। আনন্দর অশ্রু ঝড়ে পড়ে কেরালার ফুটবলারদের । আর টুর্নামেন্টে ভালো খেলেও কেরালার মাটিতে তাঁদের না হারাতে পারা ও সন্তোষ না জেতার আক্ষেপ রয়ে গেল রঞ্জন ভট্টাচাৰ্য্যর ছেলেদের।