এনএফবি, কলকাতাঃ
রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে মুখোমুখি আলোচনার আহবান জানিয়ে চিঠি লিখলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যপালের করা টুইট থেকেই এ খবর জানা যায়। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতেই ধনখড়ের এই আহ্বান। বাগটুই কাণ্ড, সিবিআই তদন্ত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য এবং সর্বোপরি বিধানসভার অভ্যন্তরে হাতাহাতি নিয়ে এই আলোচনা করতে ইচ্ছুক রাজ্যপাল।
চিঠিতে রাজ্যপালের অভিযোগ, বর্তমানে এমনিতেই রাজ্যের প্রশাসন খাদের কিনারায় ঝুলছে। তার উপর রামপুরহাটে যে ভয়াবহ এবং বর্বর কাণ্ড ঘটেছে, তাতে বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। বিধানসভাতেও উত্তাপের আঁচ দেখা গিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আলোচনার জন্যই মুখ্যমন্ত্রীকে এক সপ্তাহের মধ্যে রাজভনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
রাজ্যপালের সংযোজন, ‘সিবিআই তদন্ত নিয়ে আপনার (মুখ্যমন্ত্রীর) প্রকাশ্য বিবৃতিতে আমি উদ্বিগ্ন। আপনি বলেছেন, সিবিআই তদন্ত যদি ঠিক মতো না হয়, তা হলে তার প্রতিবাদে আপনি পথে নামবেন। এই বক্তব্য আপনার পদের সঙ্গে খাপ খায় না। অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে এবং তত্ত্বাবধানে রামপুরহাটের ওই হিংসাত্মক ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই।’
WB Guv Shri Jagdeep Dhankhar has invited Chief Minister Smt. Mamata Bannerjee for interaction during the week at Raj Bhawan to deliberate worsening law and order in the state, particularly in view of alarmingly worrisome developments #RampurhatViolence & State Legislature. 1/3 pic.twitter.com/PNejmUwa8s
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) March 29, 2022
উল্লেখ্য, সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় দিল্লিতে একান্তে বৈঠক করেছেন। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে রাজ্যপাল রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের নৃশংস হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট দেন অমিত শাহকে।
ওই দিনই রামপুরহাট ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য বিধানসভা। তৃণমূল এবং বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে বচসা, ধাক্কাধাক্কি এমনকি মারামারিও হয়। উভয়পক্ষেরই বেশ কয়েকজন জখম হন। বিধানসভার ওই ঘটনার জেরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ পাঁচ বিজেপি বিধায়ককে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি থেকে ওইদিন সন্ধ্যায় রাজভবনে ফেরেন রাজ্যপাল। সন্ধ্যাতেই শুভেন্দু অধিকারী কয়েকজন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে রাজভবনে যান। বিধানসভার গোটা ঘটনা বিরোধী দলনেতা রাজ্যপালকে জানান। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া চিঠি দিয়ে রাজ্যপালের রাজভবনে ডেকে পাঠানো অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যপালের এই তলব নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, “রাজ্যপালের ভূমিকা নক্কারজনক। উনি বিজেপির সদস্যের মতো কথা বলছেন। দেশের অনেক রাজ্যের চেয়ে বাংলার আইন-শৃঙ্খলা ভালো। কেন্দ্রীয় একাধিক রিপোর্টেই তার প্রমাণ রয়েছে।“