মন্ত্রীর জেলায় আলু সংরক্ষণের সমস্যায় চাষীরা

এনএফবি,দক্ষিণ দিনাজপুর:

খোদ রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রীর জেলায় পর্যাপ্ত হিমঘর না থাকায় হিমঘরে আলু মজুত করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর, তপন, কুশমন্ডি, কুমারগঞ্জ, রামপুর, বাউল ও বোল্লা এবং বালুরঘাট ও হিলি ব্লকের আলুচাষীরা। এমনিতেই হাতে গোনা পাঁচ ছয়টি হিমঘর রয়েছে এই জেলায়। বেশির ভাগ হিমঘর অবস্থিত গঙ্গারামপুরে । তবে কোনটাই সরকারি নয় প্রাইভেট ও কো- অপেরেটিভ পর্যায়ে গড়ে তোলা এই হিমঘর গুলি। তবে সেগুলির মাল মজুদ ও খালাস করার পরিকাঠামো এতটাই দুর্বল যে আলু রাখতে গিয়ে আলু নিয়ে আসা ঠেলা চালক, ভ্যান চালক, ট্রাক্টর চালক ও এদের মালিকদের লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা বরং ভাড়া বাবদ পাওয়া টাকা খাবারের পিছনে খরচ করে শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে ৷

এইসব হিমঘরে তিন থেকে চারদিন ধরে আলু নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন প্রকৃত চাষীরা। অপরদিকে লাইনে না দাঁড়িয়েই হিমঘরে আলু রেখে চলে যাচ্ছে একশ্রেণীর মানুষ।এই নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন এলাকার প্রকৃত কৃষকেরা। কেউ কেউ আলু রাখার বন্ড পেয়েছেন ঠিক, তবে হিমঘরে আলু নিয়ে গিয়ে দুই তিন রাত জেগে রয়েছেন। হিমঘর থেকে তিন চার কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আলুর গাড়ির লাইন পড়ে গিয়েছে। আবার অধিকাংশ কৃষক এখনো বন্ড পাননি। তাই নিয়ে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এমনি অভিযোগ তুলে কয়েকবার হিমঘরের সামনে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান আলু চাষীরা। হিমঘর কর্তৃপক্ষের সাথে তাদের বিবাদ শুরু হয়। হিমঘরে সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখান রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা আলু চাষীরা। এসব সত্ত্বেও কোন হেলদোল নেই প্রশাসনের।

অথচ এবার হিমঘর গড়ে তুলবার জন্য লাইসেন্স প্রদান থেকে তাদের আর্থিক অনুদান দেবার অধিকার যে দপ্তরের হাতে রয়েছে সেই কৃষি বিপণন দফতরের মন্ত্রী হয়েছেন এই জেলার তৃণমূল নেতা বিপ্লব মিত্র। পাশাপাশি তার নিজস্ব বাসস্থান আবার গঙ্গারামপুরে তাই তিনিও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।

সে বিষয়ে গতকাল বালুরঘাটে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবার ব্যাপারে সংবাদ মধ্যম তাকে এব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি জানান দক্ষিণ বঙ্গে সরকারি স্তরে কয়েকটি হিমঘর থাকলেও উত্তরবঙ্গের কোন জেলাতেই সরকারি স্তরে হিমঘর নেই। তবে একথা ঠিক উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বেসরকারি উদ্যোগে হিমঘর রয়েছে তার তুলনায় আমাদের জেলায় তার সংখ্যা অনেক কম । সেগুলি সাধারণ মাপের তাই তাদের মজুত ভান্ডারের পরিমাণ ও অনান্য আনুসাঙ্গিক পরিকাঠামো কম হওয়ায় এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। মন্ত্রী বিপ্লব বাবু আরও বলেন সরকার আর হিমঘর গড়ছে না তাই বেসরকারি উদ্যোগকে এই জেলায় হিমঘর গড়তে আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তাদের লাইসেন্স দ্রুত প্রদান ও তাদের আর্থিক সহয়তা প্রদান দ্রুততার সাথে করার আশ্বাস দেন তিনি।