জুলাই 5, 2024
Latest:
ক্রীড়া

বদ্রু ব্যানার্জির স্মৃতির উদ্দেশ্য শোকবার্তা ফিফা সভাপতির

এনএফবি, স্পোর্টস ডেস্কঃ

প্রয়াত প্রাক্তন বাঙালি ফুটবলার সমর বন্দোপাধ্যায় ওরফে বদ্রু ব্যানার্জির মৃত্যুতে শোকবার্তা দিলেন ফিফা সভাপতি জিয়ানি ইনফান্টিনো। এদিন তিনি শোকবার্তায় জানান,প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ফুটবলার সমর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে আমি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। তাঁর প্রয়াণ কতটা শোকে কাতর করেছে আমাদের তা বোঝাতে শব্দ কম পড়ে যাচ্ছে।”।

দীর্ঘ দিন ভারতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি এবং তাঁর নেতৃত্বে স্মরণীয় অধ্যায় কাটিয়েছে ভারতের ফুটবল। ১৯৫৬ অলিম্পিকে ভারতীয় দলের ঐতিহাসিক চতুর্থ স্থান অর্জন যার মধ্যে একটি। ঘরোয়া ফুটবলে দীর্ঘ সময় সাফল্যের সঙ্গে সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি, দু’বার জিতেছেন এই খেতাব। ক্লাব স্তরে দীর্ঘ সময় মোহনবাগানের রক্ষণের দায়িত্ব তিনি সামলেছেন এবং এই সময়ে বহু সাফল্য এনে দিয়েছেন ক্লাবকে। এই কিংবদন্তীকে ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা হিসেবে গণ্য করা হয়। তাঁর নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব, লেগাসি এবং সাফল্য, মানবতা বোধ কখনও ভোলার নয়। আন্তর্জাতিক ফুটবল কমিউনিটির পক্ষ থেকে আমি সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে এবং তাঁর পরিবারকে, বন্ধুবান্ধবকে এবং প্রিয় মানষুদের সমবেদনা জানাই । আপনাদের প্রত্যেকের সঙ্গে আমাদের সমবেদনা রয়েছে।”
মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।

অসুস্থ হয়ে গত ২৭ জুলাই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল বদ্রুবাবুকে। হাসপাতালেই তাঁর করোনা হলে বাঙ্গুরে ভর্তি করা হয়। পরে সুস্থ হয়ে উঠলেও বার্ধক্যাজনিত নানান রোগে ভুগছিলেন। কয়েক দিন আগে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। টানা ২৪ দিন লড়াই করার পর গতকাল ভোর রাতে পরলোকে চলে গেলেন সব থেকে বেশি বয়সের ফুটবল অলিম্পিয়ান বদ্রু ব্যা নার্জি।
তাঁর পোষাকী নাম সমর বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ময়দান তাঁকে বদ্রু নামেই চিনত। ১৯৩০ সালের ৩০ জানুয়ারি হাওড়ার বালিতে বিখ্যাত ব্যানার্জি পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন বদ্রু ব্যানার্জির। মিলন সমিতি ক্লাবে অভিষেক হয় বদ্রুবাবুর। পরে বালি প্রতিভা ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন। বালি প্রতিভা থেকে যোগ দেন বিএনআর-এ। কলকাতা লিগে বিএনআরের হয়ে বেশ ভাল খেলার সুবাদে পরের বছর মোহনবাগানে সই করেন। সালটা ছিল ১৯৫২। ১৯৫২ থেকে ১৯৫৯ মোট আট বছর মোহনবাগানের হয়ে খেলেন তিনি। মেডিকেলের ছাত্র হিসেবে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ফুটবলকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে সেই ভাবে আর ডাক্তারি পড়া হয়নি তাঁর।
১৯৫৬ সালে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছোন। ভারতীয় ফুটবল দলের নেতৃত্ব পান তিনি। ১৯৫৬ সালের মেলবোর্ন অলিম্পিকে বদ্রুবাবুর নেতৃত্বেই ভারত খেলতে নেমেছিল। হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ওয়াক ওভার পায় ভারত। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত ৪-২ গোলে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে। সেমিফাইনালে তৎকালীন যুগোস্লাভিয়ার বিরুদ্ধে হেরে যায় ভারত। সেবারের অলিম্পিকে ভারত চতুর্থ হয়েছিল।

ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পর বড়িশা এসসি ক্লাবকে কোচিং করিয়েছিলেন। কোচ হিসেবে বাংলাকে সন্তোষ ট্রফি এনে দিয়েছিলেন। তিনি ‘অর্জুন’ বা ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান পাননি কেন তা আজও ফুটবল প্রেমীদের অবাক করে। তবে ভারতীয় ডাকবিভাগ বদ্রু ব্যানার্জির সম্মানে বিশেষ ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে। রাজ্য সরকারের তরফে পেয়েছেন জীবনকৃতি সম্মান। ২০০৯ সালে মোহনবাগান রত্ন সম্মান পেয়েছিলেন বদ্রু ব্যানার্জি ৷