জুলাই 5, 2024
Latest:
স্থানীয়

দোতলা বাড়ি অক্ষত অবস্থায় অন্যত্র সরানোর নতুন প্রক্রিয়া হিলি ব্যবসায়ীর

এনএফবি, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

আস্ত দোতলা বাড়িকে অক্ষত অবস্থায় অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলেন হিলি এক ব্যবসায়ী। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পুরো বাড়ি নিয়ে যাওয়ার প্রযুক্তি দেখতে ভীড় জমাচ্ছেন বাসিন্দারা। সীমান্ত শিখা ক্লাব সংলগ্ন বাসিন্দা সুজিত মহন্তের এমন চিন্তাভাবনা দেখে চক্ষু কপালে উঠেছে পুরো হিলিবাসীর।

৫১২ নং জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কারণে নিজের রায়তি সম্পতির উপর বানানো ২০০০ স্কোয়ার ফিটের দোতালা বাড়ি ভাঙার জন্য সরকার নির্দেশ দিয়েছে। ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তবে যেখানে বাকিরা ক্ষতিপূরণ পেয়ে বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি করতে শুরু করেছেন সেখানে সুজিত বাবু অন্য পথে হেটেছেন। হাউস সিফটিং করার ভিডিও দীর্ঘ কয়েক বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছিলেন। জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া ক্ষতিপূরণ পেতেই সেই সমস্ত কোম্পানির সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। যোগাযোগ করতে বিহার থেকে এক সংস্থা হিলি এসে সুজিত বাবুর সাথে দেখা করে আশ্বাস দেন পুরো বাড়িকে তারা অক্ষত অবস্থায় অনত্র সরিয়ে দেবেন। তাতে ইচ্ছা প্রকাশ করে সুজিত বাবু রাজি হয়ে সেই সংস্থাকে বাড়ি সরানোর কাজের দায়িত্ব দেন। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছে বাড়ি সরানোর কাজ। প্রতিদিন ১০ জন কর্মী কাজ করছে। জানা যায়, প্রথমে বাড়ি নিজে খনন করে গাড়ি তোলার মতো জ্যাক বসানো হয়েছে। পুরো বাড়ির নিচে প্রায় ১০০ টির বেশি জ্যাক বসানো হয়েছে। প্রত্যেকটি জ্যাক এক সাথে উপরে তোলা হচ্ছে। তিন ফুট পর্যন্ত বাড়িটি তোলা হবে। এর পরে বাড়ির পাশে প্রায় ৬০ ফুট দূরে চাকা যুক্ত জ্যাকের সাহায্যে আবার সেই বাড়িটি তুলে নিয়ে গিয়ে মাটিতে বসানো হবে। বাড়ি নিয়ে যেতে অভিনব এক প্রকার চাকা যুক্ত জ্যাক নিয়ে আসা হবে। যা এখনও আনা হয়নি। আগামীতে আরও কর্মী বাড়িটি নিয়ে যেতে নিয়োগ করা হবে বলে সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। বাড়িটি পুরো অক্ষত অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সংস্থার,কোনো ক্ষতি হলে তারাই দায় নেবেন বলেও জানিয়েছেন।

YouTube player

পেশায় ইলেকট্রনিক ব্যবসায়ী সুজিত মহন্ত বলেন, “আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও দেখেছিলাম তিন তলা একটি বাড়ি না ভেঙে অক্ষত অবস্থায় অনত্র নিয়ে গিয়ে আগের মতো বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমার দোকান-সহ বাড়ি জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষ নিয়েছে। এরপরে আমি ঠিক করি বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি করতে যা খরচ হবে তার থেকে বাড়ি শিফটিং করলে অনেক কম খরচ হবে। যোগাযোগ করি বিহারের একটা সংস্থার সাথে। তারা ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার চুক্তিতে পুরো বাড়ি অন্য জায়গায় নিয়ে যাবে। ১ মাস ধরে কাজ করছে। আর ১ মাস লাগবে বলে তারা জানিয়েছেন।” বিহারের সংস্থার মালিক নলে যাদব বলেন, “আমরা বিভিন্ন রাজ্যে এই কাজ আগেও করেছি। পশ্চিমবঙ্গে প্রথম করছি। অন্য স্থানে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরে আগের মতো বাড়ি থাকবে। ভূমিকম্প বা কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ঝুঁকি নেই।”