জুলাই 5, 2024
Latest:
জেলা

আর কত মৃত্যু দেখলে প্রশাসনের টনক নড়বে?- প্রশ্ন নবম শ্রেণীর পড়ুয়ার

এনএফবি,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ

দুর্গা পূজা পার করে লক্ষ্মী পূজো। ঠিক তার পরের দিনেও পাকা ব্রিজের দাবি নিয়ে পড়ুয়াদের আন্দোলন অনড়। সপ্তাহের প্রথম দিনই কয়েক’শ বিক্ষুব্ধ পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকদের বিক্ষোভে উত্তাল হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা-২ ব্লকের হুমগড় বাজার সংলগ্ন চৌমাথা এলাকা।

শীলাবতী নদীর ওপর একটি কংক্রিটের সেতুর দাবীতে এলাকার সমস্ত যান চলাচল বন্ধ করে দেন বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি গত ১২ বছর ধরে এই একই দাবী তুলে আসছেন তাঁরা কিন্তু প্রশাসন শুধু আশ্বাস দিয়ে একের পর এক ভোট পার করে দেয় কাজের কাজ কিছুই হয়না।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, নদীর ওপারে গড়বেতা-২ ব্লকের জগারডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের সম্পূর্ণ অংশ ছাড়াও হুমগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অংশ আছে। সম্মিলিত গ্রামের সংখ্যা ছোট বড় মিলিয়ে কুড়িটির মত। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। এই পুরো অংশকেই ব্যবসা, চাকরি, পড়াশুনা, স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য শীলাবতী নদী পেরিয়ে দক্ষিণ অংশে আসতে হয়। থানা, হাসপাতাল, ব্লক প্রশাসনিক কেন্দ্র, কলেজ সবই নদীর দক্ষিণে। তাছাড়া শীলাবতী নদীর উত্তর পাড়ে হাজার হাজার কৃষক আলু ও সবজি চাষ করেন। এঁদেরও পণ্য বাজার জাত করার জন্য নদী পেরিয়ে আসতে হয়। কিন্তু ভরসা একটি কাঠের পুল যা কার্যত ভগ্ন ও বিপদ শঙ্কুল। এমনকি কয়েক মাস আগে ওই সেতু পেরুতে গিয়ে দুই ছাত্রের মৃত্যুও হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার। বছর বছর কাঠের সেতু সরানোর নাম করে টেন্ডার আর কমিশন খাওয়া ছাড়া কিছুই হয়না।

নদীর ওপাশের দেউলকলা গ্রামের বাসিন্দা গড়বেতা কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র কার্ত্তিক লোহার বলেন, “বর্ষাকালে এই সেতুর এমনি অবস্থা হয় যে গাড়ি চলেনা। কোনও আসন্ন প্রসবাকে গড়বেতা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে ৩০ কিলোমিটার পথ ঘুরে আমলাশুলি হয়ে যেতে হয়। প্রসূতি রাস্তায় প্রসব করেন আর সাপে কামড়ানোর কিংবা সংকটাপন্ন রুগী রাস্তায় প্রাণ হারাবেন। আমরা বারংবার প্রশাসন আর পঞ্চায়েতকে জানিয়েও কোনও ফল পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।” একই অভিযোগ হুমগড় চাঁদাবিলা হাইস্কুলের ছাত্র পাথরবেড়িয়া গ্রামের সৌদীপ নন্দীর। নবম শ্রেণীর ছাত্র সৌদীপ বলেন, “প্রতিদিন জীবন হাতে করে আমাদের ওই ভাঙা কাঠের সেতু পেরুতে হয় যা করতে গিয়ে এবছরই প্রথম বর্ষায় সেতু থেকে পড়ে দুই ছাত্র শীলাবতী নদীতে ভেসে গেছিল। আর কত মৃত্যু দেখলে প্রশাসনের টনক নড়বে?”

এদিন বেলা ১১ টা থেকে শুরু হওয়া অবরোধে হুমগড় থেকে গড়বেতা, আমলাশুলি যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।