জুলাই 5, 2024
Latest:
স্থানীয়

রাইস মিলের দূষিত জলে মৃত্যু শতাধিক কচ্ছপ,মাছ

এনএফবি,পূর্ব মেদিনীপুরঃ

গাফিলতির কারণে জীব বৈচিত্রের ভারসাম্য হারাচ্ছে মানবকূল। রাইস মিলের দূষিত জল বেরিয়ে শতাধিকের বেশি বিলুপ্ত প্রায় কচ্ছপ ও মাছের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর কার্যত উত্তাল এলাকা। এমনই নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী রইল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি ৩ ব্লকের দেবেন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা। অবিলম্বে ওই রাইস মিল বন্ধের দাবি জানিয়ে সোচ্চার হয়েছেন গ্রামবাসীরা। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গোটা এলাকায় নতুন করে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি ৩ ব্লকের দেবেন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েতের সীতা মা নামে একটি রাইস মিল রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই রাইস মিলের জল ড্রেনের সাহায্যে খালের জলে ছেড়ে দেওয়া হয়। কোন পরিশোধন ছাড়াই জল ছেড়ে দেওয়া হয় বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। বুধবার ঘটে বিপত্তি। এই খালের জল সহ পাশাপাশি কয়েকটি গ্রামের জল গিয়ে কালীনগর খালের জলে মিলিত হয়। তারপর সেখান থেকে সমুদ্রে যায়। বুধবার সাত সকালে নজরে আসে কয়েক শতাধিক কচ্ছপ ও মাছের মৃত্যু হয়েছে। গ্রামবাসীদের চোখে পড়তেই চক্ষু চড়কগাছ। কার্যত আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তারা। কয়েক কিলোমিটার জুড়ে ধানের জমি ও খালের জলে মৃত কচ্ছপের স্তুপ হয়ে পড়ে রয়েছে।

সুরঞ্জন দাস, স্থানীয় বাসিন্দা। নিজস্ব চিত্র

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সুরঞ্জন দাস বলেন “রাইস মিলের গাফিলতির কারণে জীব বৈচিত্র আমরা হারাতে বসেছি। বর্জ্য পদার্থ কোন রকম পরিশোধন না করেই খালের জল ছেড়ে দেয় রাইস মিল। পরিবেশকে আমাদের বাঁচাতে হবে। পরিবেশ নষ্ট হলে আমরা কেউ সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে পারবো না। রাইস মিল অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।” এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য রঞ্জিত জানা বলেন “এই অভিযোগ একাধিকবার প্রধানের কাছে গেছে৷ এই অভিযোগ শুধু জনগণের নয় আমারও অভিযোগ রয়েছে৷ রাইস মিলের জল পরিশোধন না করেই খালের জলে ফেলা দেওয়া হয়। আমি চোখে দেখেছি৷ খালের জলে শতাধিক কচ্ছপ মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।” তবে রাইস মিলের ম্যানেজার দীপক পণ্ডা বলেন, “কচ্ছপ মারা গেছে নাকি জানিনা। আপনাদের কাছ থেকে শুনলাম৷ এখানকার জল নাকি অন্য কোথাও জলের কারণে এমন ঘটনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।”
কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্য বিজেপি সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ” রাজ্যের সমস্ত উদ্যোগ এখন তলানিতে গেছে। রাজ্যে এখন শিল্প নেই। রাজ্যের যে কয়টি শিল্প রয়েছে তার নজরদারির ব্যবস্থা করছে না রাজ্য।” তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, “রাইস মিলে চাল তৈরি হয় নাকি বোমা তৈরি হয়? তদন্ত করে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবী জানাই।” কাঁথি বনদপ্তরের আধিকারিক বলরাম পাঞ্জা বলেন “বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। অন্যান্য কর্মীদের পাঠানো হয়েছে৷ অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”