রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় মুখা শিল্পকে কেন্দ্র করে নতুন জীবিকার সন্ধান

এনএফবি,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি ব্লকের মহিষবাথান এলাকার মুখা শিল্প রাজ্য সহ সমগ্র দেশ জুড়ে জনপ্রিয়। আর এই জনপ্রিয় মুখা শিল্পের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কুশমন্ডি ব্লকের দেউল গ্রাম পঞ্চায়েতে অবস্থিত মহিষবাথান এলাকায় বিগত কয়েক বছরে এই মুখা শিল্পের ওপর ভিত্তি করে বহু মানুষের নতুন করে জীবন জীবিকা গড়ে উঠেছে ৷

জানা গেছে , অতীত কালে বছরের বিশেষ সময়ে ধান কাটার জন্য রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষজন বিশেষ পুজোর আয়োজন করতেন। সেই সময়ই বিভিন্ন দেবদেবীর মুখা পরিধান করে গম্ভীরা নৃত্য করা হত। প্রাচীন এই রীতির কথা মাথায় রেখে মহিষবাথান এলাকার মানুষজন বংশ পরম্পরায় বহু যুগ ধরে মুখা তৈরি করে আসছেন। বর্তমানে আধুনিক যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে মুখার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ইতিমধ্যেই জেলা ছাড়িয়ে রাজ্য এবং রাজ্য ছাড়িয়ে বিভিন্ন দেশে কুশমন্ডির মহিষবাথানের মুখা পৌঁছে গেছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে, মহিষবাথান গ্রামীণ হস্ত শিল্প কেন্দ্রে এলাকার মানুষজন মুখা তৈরির প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে সারা বছর ধরে তৈরি করা মুখা বিক্রির সব রকম সাহায্য পেয়ে থাকেন।

নিজস্ব চিত্র

মহিষবাথান এলাকার মুখা শিল্পী সাঞ্জুলাল সরকার বলেন”মুখা শিল্পের উপর ভিত্তি করেই বহু বছর ধরে জীবিকা নির্বাহ করছি। রাজ্য সরকারের আয়োজিত বিভিন্ন মেলা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন বাজারে এমনকি পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশেও আমাদের তৈরি মুখা পৌঁছে যায়। দিন দিন মুখা শিল্পের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।”
জানা গেছে বর্তমান রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মুখা শিল্পের উন্নয়নে প্রথম থেকেই বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। মুখা শিল্পীদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে শিল্প কেন্দ্রের উন্নয়নে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন রাজ্যের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে কুশমন্ডি মহিষবাথান গ্রামীণ হস্তশিল্প কেন্দ্রর ভবনটি ইতিমধ্যেই দোতালা করা হয়েছে।

নিজস্ব চিত্র

কুশমন্ডি মহিষবাথান গ্রামীণ হস্তশিল্পের সম্পাদক পরেশ চন্দ্র সরকারের বলেন “বর্তমানে মুখাশিল্পের ওপর ভিত্তি করেই শিল্পীদের জীবনযাত্রার মান পাল্টে গেছে। আমরা আশা করছি আগামীতে আরও উন্নতি হবে শিল্পীদের।”

জানা গেছে, ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ও দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণার প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক ২টি নামি সংস্থার সাথে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। জনপ্রিয় এই মুখা শিল্প সামগ্রী আরও ব্যাপক পরিসরে বিদেশে রপ্তানি হবে খুব শীঘ্রই। একটা সময় প্রত্যন্ত এই এলাকার মানুষজনের দুবেলা খাদ্য সংস্থান করতেই হিমশিম অবস্থা হতো। মানবিক রাজ্য সরকার পাশে থাকায় মুখাশিল্পের ওপর ভিত্তি করেই বিগত কয়েক বছরে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে এলাকার বহু মানুষের।