অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
জাদেজা-অশ্বিনের যুগলবন্দিতে তিন দিনেই ম্যাচ শেষ। মোহালীর প্রথম টেস্টে শ্রীলঙ্কাকে হেলায় হারিয়ে সিরিজে ১-০-এ এগিয়ে গেল টিম ইন্ডিয়া। মাত্র তিন দিনেই ১ ইনিংস ও ২২২ রানে ম্যাচ জিতে নিল রোহিত শর্মারা। টেস্ট অধিনায়ক হিসাবে অভিষেকটা বেশ ভালভাবেই হল রোহিত শর্মার। যদিও দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স করে ম্য়াচের সেরার শিরোপা কিন্তু একজনেরই মাথায়। আর তিনি হলেন রবীন্দ্র জাদেজা। মোহালীতে দুই ইনিংসে ৯ উইকেট এবং ১৭৫ রান করে ভারতকে ঘরের মাটিতে প্রথম জয়টা এনে দিলেন জাড্ডুই।
মোহালীতে বিরাট কোহলির শততম ম্যাচ। যা ঘিরে উত্তেজনার পারদ প্রথম থেকেই ছিল তুঙ্গে। আর ম্য়াচ শুরুর আগে বিরাটকে একটা সুন্দর জয় উপহার দিতে চেয়েছিল তাঁর টিম ইন্ডিয়া। সেটা যে এভাবে আসবে, তা হয়ত বিরাট কোহলি নিজেও ভাবতে পারেননি। একইসঙ্গে এই ম্যাচটাই ছিল আবার অধিনায়ক রোহিত শর্মার টেস্টে অভিষেক ম্যাচ।
সবকিছু মিলিয়ে ভারতীয় টেস্টের নতুন অধ্যায়টা অসাধারণ করল ভারত। আভাসটা শনিবারই পাওয়া গিয়েছিল। শ্রীলঙ্কা চার উইকেট খুইয়েছিল ১০৮ রানে। ভারতের সামনে জয়টা যে তখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা সেটা বেশ স্পষ্টই ছিল। আর সেইসঙ্গে যেমনভাবে পিচে স্পিন ধরেছিল। রবিবার সকাল থেকেই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দাপট ছিল রবীন্দ্র জাদেজার। দ্বিতীয় দিন একটি উইকেট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তৃতীয় দিনের শুরু থেকেই মাঠে ছিল জাদেজার তান্ডব। শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা তাঁর সামনে অসহায়ের মতো আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। একাই পাঁচ উইকেট নিয়ে ভারতের জয়ের ভিতটা মজবুত করে দিয়েছিলেন তখনই।
ভারতের পাহাড় সমান রানের সামনে মুখ থুবড়ে পরে শ্রীলঙ্কা। মাত্র ১৭৪ রানেই শেষ হয়ে যায় তাদের প্রথম ইনিংস। জয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে এতটুকু সময় নষ্ট করতে চাননি রোহিত শর্মা। হাতে রয়েছে ৪০০ রান। সঙ্গে সঙ্গে ফলোঅনের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পিচের প্রকৃতি দেখে তিন দিনেই ম্যাচ শেষ করতে চেয়েছিলেন রোহিতও। আর সেই লক্ষ্যেও নায়ক জাদেজা-অশ্বিন জুটিই। দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার সামনে সুযোগ ছিল মান বাঁচানোর। কিন্তু জাদেজা, অশ্বিনের মতো তারকারা যেদিন ছন্দে থাকে, সেদিন হয়ত কারোর পক্ষেই ম্যাচ বাঁচানো সম্ভব নয়। সাড়ে চার ঘন্টাতেই শ্রীলঙ্কাকে শেষ করে দেয় ভারতীয় দল।
শুরু থেকেই ভয়ঙ্কর ফর্মে ছিলেন অশ্বিন ও জাদেজা। যদিও শ্রীলঙ্কাকে দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম ধাক্কাটা দেন অশ্বিন। তিনি থিরিমানে এবং নিসাঙ্কাকে ফিরিয়ে দেন তিনি। মাঝে অধিনায়ক করুণারত্নেকে সাজঘরের রাস্তা দেখান মহম্মদ সামি। এরপরই মোহালীর বাইশগজ ফের একবার দেখল জাদেজা জাদু। শ্রীলঙ্কার যে মিডল অর্ডার লড়াই করে ফেরার চেষ্টা করছিল, সেই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও জি সিলভার উইকেট তুলে নিয়ে ভারতের জয়ের রাস্তাটা একেবারে পরিষ্কার করে দেন তিনি। তখন জয় পাওয়াটা ছিল সময়ের অপেক্ষা। শেষের দিকে আরও দুই উইকেট নেন লাকমল ও এমবুডেনিয়ার। তাঁর পাশে চার উইকেট শিকার করেন অশ্বিনও। ১৭৮ রানেই শেষ হয়ে যায় শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংস। ইনিংস ও ২২২ রানে মোহালী টেস্ট জিতে নতুন অধিনায়ক রোহিত শর্মার মুখে এখন চওড়া হাসি।