জুলাই 5, 2024
Latest:
ফিচারস্থানীয়

শারদ উৎসবের সূচনায় মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার কোলাঘাটে

এনএফবি,পূর্ব মেদিনীপুরঃ

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটের সংকেত এবং ছাত্র সংঘ আয়োজিত পঞ্চাশ তম শারদীয়া উৎসবের সূচনা হয়ে গেল রবিবার মহালয়ার পুণ্য লগ্নে। এলাকার বহু মানুষ পূর্ব পুরুষের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তর্পণ করে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন। কোলাঘাটের বাসিন্দা তথা মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায় চৌধুরী গৌরাঙ্গ ঘাটে তর্পণ করেই পঞ্চ প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজোর উদ্বোধন করেন। তার পরই শুরু হয় পঞ্চাশ জন শিল্পী সমন্বয়ে চিত্তাকর্ষক আগমনী অনুষ্ঠান।

এইদিন প্রায় একশো জন মানুষ মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করে সদ‍্য আবরণ উন্মোচিত দেবী দুর্গার উদ্দেশ্যে পঞ্চ প্রদীপ প্রদর্শন করেন। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করতে এবং সংস্কারের বেড়াজাল ভেঙে মরণোত্তর অঙ্গদানে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে এই ভাবনা বলে পুজো কমিটির সভাপতি অভিজিত সামন্ত জানিয়েছেন ৷ পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, সংকেত এবং ছাত্র সংঘ শুধু পুজোর সময় নয়, সারা বছরই বিভিন্ন সমাজ সেবা মূলক কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত ৷ তবে এই পুজোতেও নানান সমাজ সেবা মূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে ৷ এলাকায় যেসব ভবঘুরে রয়েছে, তাদেরকে পৌঁছে দেওয়া হবে নতুন বস্ত্র ৷ পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানের যোগ দিয়ে নৃত্যশিল্পী অন্তিকা মন্ডল বলেন, মহালয় বাঙালির কাছে এক বিশেষ দিন, আমরা ধন্য এই মহালগ্নে অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পেরে ৷

নিজস্ব চিত্র

এই দিন অতিথিদের সাথে মঙ্গলদ্বীপ প্রজ্জ্বলন করেন সাফাইকর্মী হরিজন পল্লীর বস্তিবাসী সদ‍্য স্বামী হারা সরস্বতী মাদরাজি। উল্লেখ্য মাস দুয়েক আগে সরস্বতীর স্বামী শুকদেব মাত্র ৫২ বছর বয়সে হঠাৎ মারা যান। ওরা দুজনেই ছিলেন সংকেতের সর্বক্ষণের কর্মী তথা সদস‍্য। সরস্বতী ওই শোকের মধ্যেই তার স্বামীর প্রাণহীন দেহের দুটি চোখের কর্ণিয়া দান করে হতদরিদ্র সাফাইকর্মী গৃহবধূ হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ছিলেন।মরণোত্তর অঙ্গদানে অংশ নিয়ে সরস্বতী মাদ্রাজি জানিয়েছেন কয়েক মাস আগে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে কিন্তু মৃত্যুর পরে তার চক্ষু যাতে কোন অন্ধ মানুষের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেয় তার জন্য তার চক্ষু দান করা হয়েছে, আজ নিজের শরীরের অঙ্গদান করলাম, স্বামী থাকাকালীন স্বামীর দিনমজুরিতে চলত সংসার ৷ স্বামীর মৃত্যুর পর এই ক্লাব সংগঠনের পক্ষ থেকে সমস্ত সুযোগ সুবিধা সহ পাশে দাঁড়িয়েছে ৷ এই মত অবস্থায় কোন অঙ্গহীন মানুষের টাকা দিয়ে না সাহায্য করতে পারি, অঙ্গ দিয়ে সাহায্য করতে পেরে খুব খুশি।