জুলাই 5, 2024
Latest:
জেলালেটেস্ট

এমএ পাশ চোর, চুরির সংখ্যা ১৭০

এনএফবি,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে বিদ্যুৎ দপ্তরে কর্মীর বাড়িতে চুরি, আর সেই চুরির তদন্তে নেমে চোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু চোরের বায়োডাটা শুনে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশ অফিসারদের। ঘটনায় জানা যায় চোরের নাম সৌমাল্য চৌধুরী, তিনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ পাস, সেই সঙ্গে তিনি নাকি আবার খড়্গপুরের দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের একজন কর্মী। জানা যায় সৌমাল্যর বাবা পূর্ত দপ্তরের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মী, তারা থাকতেন আসানসোলে। সেখান থেকেই তার বাবা বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে রেলওয়ের অস্থায়ী এক কর্মী হিসাবে তার কাজের জোগাড় করে দেন। কিন্তু সেই কাজ নাকি সৌমাল্যর ভালো লাগছিলো না। আর তারপরে সে আসানসোলে থাকার সময় চুরির প্রশিক্ষণ নেয় এলাকারই এক যুবকের কাছ থেকে, এখন পর্যন্ত সে ১৭০টি চুরি করেছে। এমনকি কয়েক মাস আগে হাওড়া আন্দুলের একটি ফ্ল্যাট থেকে ১০ লক্ষ টাকা সোনার গহনা চুরি করায় সৌমাল্যকে পাঁশকুড়া থেকে গ্রেপ্তার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর সৌমাল্যকে জিজ্ঞাসা করে তারা এও জানতে পারে যে সৌমাল্য এক মানসিক রোগে আক্রান্ত। রোগের কারণে সে চুরিকে মূল জীবিকা হিসাবে বেছে নিয়েছে। যদিও সৌমাল্যকে এইদিন ঘাটাল আদালতে তোলা হলে আদালত পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। ঘাটাল থানার পুলিশ সূত্রে খবর, জেরা করে জানতে চাওয়া হচ্ছে এই ঘটনায় আরও কে কে জড়িত আছে।

উল্লেখ্য দিনেরবেলা বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীর ভাড়া বাড়ির একাধিক চাবি ভেঙে লক্ষাধিক টাকার অলংকার চুরি যায়। চুরির অভিযোগ দায়ের করা হয় ঘাটাল থানায়, সি সি ক্যামেরার ছবি দেখে চুরির তদন্ত শুরু করে ঘাটাল থানার পুলিশ। ঘাটাল পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কোন্নগর এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন ঘাটাল বিদ্যুৎ দপ্তরের এক মহিলা কর্মী। অভিযোগ, বাড়িতে চাবি দিয়ে তিনি গিয়েছিলেন বিদ্যুৎ দপ্তরে। অফিস থেকে ফিরে দেখেন বাড়ির চাবি ভাঙা। রুমের ভিতর থাকা লক্ষাধিক টাকার গয়না খোয়া গিয়েছে। বিদ্যুৎ দপ্তরের ওই মহিলা কর্মীর নাম মহাশ্বেতা দে। মহাশ্বেতা দেবীর প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার গহনা চুরি গিয়েছে। ঘাটাল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন মহাশ্বেতা দেবী। মহিলার অভিযোগ ভিত্তিতে ঘাটাল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অগ্নিশ্বর চৌধুরী ও ঘাটাল থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার দেবাংশু ভৌমিক পৌঁছে যান মহিলার বাড়িতে। ওই বাড়ির সামনে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এবং রবিবার পূর্ব মেদিনীপুর মেচগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে সৌমাল্য চৌধুরীকে। এরপর তদন্তকারী অফিসারেরা সৌমাল্যকে নিয়ে ঘাটালের কোন্নগরের এলাকায় বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীর ফ্ল্যাটে গিয়ে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।

এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা সেই দিকও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এইদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে সৌমাল্য জানায় যে, তার বন্ধু প্রকাশ এই চুরির জন্য চাপ দিত, এমনকি বেশ কয়েকবার তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল বলে তিনি জানান। এমনকি এই বিষয়ে এর আগেও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে বলে এইদিন তিনি বলেন।