সুরজিৎ’র জন্য গঠন হলো মেডিক্যাল টিম

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

প্রাক্তন ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্তকে নিয়ে আতঙ্ক যেন কাটছেই না। মঙ্গলবার অবস্থা কিছুটা উন্নত হলেও বুধবার অবস্থা অনেকটাই সংকটজনক। তাই এবারে করোনা আক্রান্ত সুরজিৎ সেনগুপ্তর জন্য মেডিক্যাল টিম গঠন করছে রাজ্য সরকার। এদিন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি বৈঠক হয়। একটি মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বোর্ড সমস্ত রিপোর্ট দেবে ক্রীড়া দফতরকে। সুরজিৎকে দেখতে আসবেন করোনা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগীরাজ রায়।
এদিনের বৈঠকে সুরজিৎ যে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি সেখানকার চিকিৎসকরা ছাড়াও, প্রাক্তন ফুটবলার ও বিধায়ক মানস ভট্টাচার্য, বিদেশ বসু এবং সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন। এ ছাড়াও ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার এবং মোহনবাগানের অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ও ছিলেন। এছাড়া ছিলেন সুরজিৎ এর ছেলে স্নিগ্ধজিত সেনগুপ্ত। তিনি বলেছেন, “বাবার শরীর ও স্বাস্থ্যের এখনও কোনও উন্নতি হয়নি। আগের মতো একই রকম ক্রিটিকাল রয়েছে পরিস্থিতি। ডাক্তাররা আশানুরূপ কিছু এখনও শোনাননি। বাইপাপ সাপোর্টে রাখা হয়েছে বাবাকে। বাইপাপ সাপোর্টে রাখলে ৯৭ বা ৯৮ শতাংশ অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল মেনটেন হলেও বাইপাপ খুলে নিলে তা ৫৭ কিংবা ৫৮ শতাংশে নেমে আসছে। গতকাল রাত্রে হঠাৎ করেই সুরজিৎ সেনগুপ্তর অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল ড্রপ করে। ৫৩ শতাংশে নেমে গিয়েছিল অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল।”

সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করার। সেই সঙ্গে ঠিক হয় বেলেঘাটা আইডি-র করোনার বিশিষ্ট চিকিৎসক যোগীরাজ রায় দেখতে আসবেন সুরজিৎকে। চিকিৎসার কোনোরকম ত্রুটি রাখতে চায় না সরকার, জানিয়ে দিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী । প্রয়োজনে স্বাস্থসাথী কার্ডে চিকিৎসা করার কথাও বলা হয়। রবিবার (২৩ জানুয়ারি) তিন প্রধানে দাপিয়ে খেলা ৭১ বছর বয়সী সুরজিৎ সেনগুপ্তকে পিয়ারলেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তিন প্রধানের মধ্যে মোহনবাগানে তিনি প্রথম খেলেন। তারপর তাঁকে সই করানো হয় লাল-হলুদ শিবিরে। লাল-হলুদে এসে ঘরের ছেলে হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বিখ্যাত পাঁচ গোলের নায়কও তিনি। ১৯৭০ থেকে ১৯৭৫ এবং ১৯৭৭-এর কলকাতা ফুটবল লিগ, ছ’বার আইএফএ শিল্ড, তিন বার ডুরান্ড জয়ের মুকুট উঠেছিল ইস্টবেঙ্গলের মাথায়। স্বপ্নের দৌড়ে চলছিল লাল-হলুদ বাহিনী। ১৯৭৫ সালের ডার্বিতে (আইএফএ শিল্ডের ফাইনাল) ইস্টবেঙ্গল ৫-০ গোলে হারিয়েছিল মোহনবাগানকে। ঐতিহাসিক এই ম্যাচের পাঁচ মিনিটে গোল করেই দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত। ১৯৭৭-৭৯ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। দলের বহু জয়ের নায়ক ছিলেন। এরপর ১৯৮০ সালে মহামেডানে সই করেন তিনি।
তবে ফুটবলকে বিদায় জানানোর পরে তিনি আর ময়দানমুখী হননি। মানসিক ভাবে ফুটবল থেকে খানিকটা দূরে চলে গিয়েছিলেন। তবে তিনি নিয়মিত লাল-হলুদ ক্লাবের খবর রাখতেন। বিদেশী ফুটবল সহ ফুটবল ইতিহাস নিয়ে চর্চা করতেন বলে খবর।