কৃষ্ণর গোলে জিতলেও রবিবারের ফাইনাল খেলা হচ্ছে না মোহনবাগানের

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

হল না স্বপ্নপূরণ । ভালো খেলেও ১- ০ গোলে হায়দ্রাবাদ এফসি কে হারালেও রবিবারের মেগা আইএসএল ফাইনালে আর খেলা হচ্ছে না এটিকে মোহনবাগানের । বুধবার সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে প্রথম থেকেই খেলার গতি নিজেদের কাছেই রাখে সবুজ মেরুন ফুটবলাররা। কিন্তু এদিনের ম্যাচে একের পর এক গোল মিসের খেসারত দিতে হলো। প্রথম লেগের ম্যাচ থেকে দুটো বদল আনেন সবুজ মেরুন কোচ জুয়ান ফেরান্দ। ডেভিড উইলিয়ামসের জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে প্রথম একাদশে আনেন ডার্বির নায়ক কিয়ান নাসিরিকে। প্রবীর দাসকেও প্রথম একাদশে রাখেন বাগান কোচ। এদিকে অপরিবর্তিত দল রাখল হায়দ্রাবাদ।

ম্যাচের সাত মিনিটে কিয়ান নাসিরির পাস থেকে ডান দিকের উইং ধরে দুর্ধর্ষ রান নিয়েছিলেন প্রবীর। পেনাল্টি বক্সেও ঢুকে পড়েছিলেন। তবে তাঁর কাটব্যাক জনি কাউকোর পায়ে পৌঁছলেও, কাউকোর শট বাঁচিয়ে দেন হায়দ্রাবাদ গোলরক্ষক কাট্টিমানি। ফিরতি বল থেকে ভলি মারার চেষ্টা করলেও প্রবীরের শট গোলের অনেক উপর দিয়ে চলে যায়। এরপরেও বাগানের আক্রমণ জারি ছিল ম্যাচের ১৪ মিনিটে। প্রবীর দাসের ভাসানো ক্রস পেনাল্টি বক্সে চেজ করেছিলেন রয় কৃষ্ণ। তবে হায়দ্রাবাদের হুয়ানান ও সানার চাপে তা দখলে আনতে পারেননি । ম্যাচের ২০ মিনিটে কর্ণার থেকে বল পেয়ে পেনাল্টি বক্সের মধ্যেই ভাল ড্রিবল করে বাঁক খাওয়ানো শট নেন লিস্টন কোলাসো। একেবারে অল্পের জন্য দ্বিতীয় পোস্টের বাইরে দিয়ে তাঁর শট চলে যায়। এই কর্ণার ডিফেন্ড করতে গিয়েই বল ওগবেচের হাতে লাগে । এটিকে মোহনবাগান ফুটবলাররা দাবি করলেও পেনাল্টির দাবিতে রেফারি পাত্তা দেননি । যদিও এরপরেও গোল খেয়ে যেতে পারতো বাগান। ৩৪ মিনটে হায়দ্রাবাদের অনিকেত যাদব মোহনবাগান গোলরক্ষক অমরিন্দরের সামনে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন। তবে অদ্ভুতভাবে তিনি শট গোলেই রাখতে পারেননি । এর ঠিক দুই মিনিট পরে সবুজ মেরুনের প্রবীর দাসের ক্রসে সেকেন্ড পোস্টে বল পেয়েছিলেন বৌমাস । তবে তিনি শট বাইরে মারেন। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে মোহনবাগানের লিস্টন কোলাসোকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন হায়দ্রাবাদ গোলমেশিন ওগবেচে। প্রথমার্ধে একের পর এক গোলের সুযোগ মিস করায় মোহনবাগান ভক্তদের দ্বিতীয়াধে আশা ছিল তাঁদের দল কিছু ম্যাজিক দেখাবে!

তবে না দ্বিতীয়ার্ধেও প্রথমার্ধের পুনরাবৃত্তিই ঘটলো ।৫০ মিনিটে পেনাল্টি বক্সে বল পেয়ে গিয়েছিলেন রয় কৃষ্ণ। প্রায় নিশ্চিত ছিল গোল করার, সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করলেন । তবে দুর্ধর্ষ রিফ্লেক্স সেভে বল গোলে জড়ানো থেকে রুখে দেন হায়দ্রাবাদ গোলরক্ষক । এর ঠিক চার মিনিট পরে চোট পেয়ে স্টেচারে করে মাঠ ছাড়েন হায়দ্রাবাদ দলের বাংলার ফুটবলার সৌভিক চক্রবর্তী। তার বদলে আসেন সাহিল তোভারা । ম্যাচের ৫৯ মিনিটে মোহনবাগানের লিস্টন কোলাসোর ফ্রি-কিক থেকে শট নিলে তার শট হায়দ্রাবাদ গোলকিপার কাট্টিমানি বাঁচিয়ে দেন । এরপরে ম্যাচের ৭৯ মিনিটে লিস্টন কোলাসোর পাসে রয় কৃষ্ণ মোহনবাগানের হয়ে ম্যাচে গোলের খাতা খোলেন । কিন্তু ততক্ষণে খুব দেরি হয়ে গেছিল। ফাইনালে পৌঁছতে দরকার ছিল আরও দুই গোল। কিন্তু সেটা টিম জুয়ানের পক্ষে করা সম্ভব হয়নি। ম্যাচ জিতেও ফাইনালে যাওয়া হল না এটিকে মোহনবাগানের ।

প্রথম লেগের হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে ম্যাচে ১-৩ গোলে পিছিয়ে ছিল মোহনবাগান । বুধবার তিন গোলের ব্যবধানে জিততে হত। সেটা না হওয়ায় আর ফাইনাল খেলা হচ্ছে না এটিকে মোহনবাগানের।