জুলাই 3, 2024
Latest:
ক্রীড়া

করোনা সমস্যা কাটিয়ে রবিবার মাঠে নামবে এটিকে মোহনবাগান

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

কোভিড সমস্যা, চোট-আঘাত কাটিয়ে রবিবার প্রায় ১৭ দিন পরে ম্যাচ খেলতে নামার কথা তাঁর দলের। সমস্যা অনেকটা কাটলেও সদ্য সুস্থ হয়ে ওঠা খেলোয়াড়দের নিয়ে বেশ চিন্তায় রয়েছেন এটিকে মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দো। তাঁর মতে, খেলোয়াড়দের এখন ফিটনেসের থেকে মানসিকতা স্বাভাবিক করে তোলাটা বেশি কঠিন। প্রতিপক্ষকে বরাবরের মতোই শক্তিশালী মনে করছেন। ফেরান্দোর ধারণা, রবিবারের ম্যাচ বেশ কঠিন হবে। শনিবার সাংবাদিকদের যা বললেন, তার উল্লেখযোগ্য অংশ এখানে তুলে ধরা হল।

গত ম্যাচে ওডিশা এফসি নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ভাল জয় (২-০) পেয়েছে। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে আপনার কী মত?

উত্তরঃ এই অবস্থার মধ্যে প্রত্যেক দলের কাছেই ম্যাচগুলো কঠিন। দলের সঙ্গে, দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করা এই অবস্থায় বেশ কঠিন। আমাদের কাছে ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখা খুব জরুরি। কারণ, ওডিশা গত ম্যাচে ভাল জয় পেয়েছে। তাই যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। আমাদের এখন নিজেদের পরিকল্পনায় বেশি জোর দিতে হবে। নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ স্মরণসভা করবে দুই প্রধান, শ্রদ্ধা ফেডারেশনের

হুগো বুমৌস এই ম্যাচে যখন নেই, তখন রয় কৃষ্ণা-ডেভিড উইলিয়ামস জুটিকে কি আমরা প্রথম একাদশে পেতে পারি?

উত্তরঃ দেখছি। একটা পরিকল্পনা তো আমরা তৈরি করেছি। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী সেরা দলই নামাব।

৫ জানুয়ারির পর থেকে আপনার দল আর কোনও ম্যাচ খেলেনি। আপনার দলের ছেলেরা কি এখন তরতাজা, না কিছুটা জড়তা থাকবে ওদের মধ্যে?

উত্তরঃ তরতাজা রয়েছে, কারণ ওরা এখন স্বাভাবিক জীবনে রয়েছে। তবে বেশির ভাগ ক্লাবের মতোই আমাদের ছেলেরাও কিছুটা ক্লান্ত। শারীরিক কারণে নয়, মানসিক কারণে। সাধারণত, প্রচুর পরিশ্রম করে খেলোয়াড়রা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু যখন তারা মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে পারে না, তখনো প্রায় একই অবস্থা হয়। এটা বোঝানো কঠিন। তবে এখন ওদের ফিটনেস নিয়ে আলোচনা করার সময় নয়।

টানা তিনটি ম্যাচ না হওয়ায় ফুটবলারদের মানসিকতার ওপর প্রভাব পড়েছে বলছেন?

উত্তরঃ অবশ্যই। ম্যাচের প্রস্তুতি হয়ে যাওয়ার পরে যদি ম্যাচের দিন সকালে জানা যায় ম্যাচটা হচ্ছে না, তা হলে খুবই হতাশ লাগে। আমাদের ক্ষেত্রে এ রকম তিন-তিনবার হয়েছে। তবে এটা একটা কঠিন সময়। এই সময়ে ঝুঁকি নেওয়াটা ঠিক নয়। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য।

ওডিশা ম্যাচের পরেই কলকাতা ডার্বি। সে দিক থেকে এই ম্যাচটা আপনাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তরঃ সব ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। আপাতত ফোকাস ওডিশার ওপর। তার পরে এসসি ইস্টবেঙ্গল নিয়ে ভাবব। আমার কাছে এটা প্রথম বিগ ডার্বি। এই ম্যাচের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পারাটা আনন্দের। কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় এই কয়েকদিনে আমি আমাদের ক্লাবের ইতিহাস নিয়ে অনেক পড়াশোনা করেছি। কলকাতার ফুটবল নিয়ে অনেক জেনেছি। তাই এই ম্যাচে থাকতে পারাটা খুবই আনন্দের। তবে কলকাতায় ম্যাচটা না হওয়ায় একটু হতাশ। কারণ, ওখানকার আবেগ, সমর্থকদের মিস করব।

যে খেলোয়াড়রা কোভিড থেকে সেরে উঠেছে বা উঠছে, তাদের নিয়ে আপনি কতটা চিন্তিত?

উত্তরঃ খুবই চিন্তায় আছি। কারণ, কোভিড আক্রমণ করলে মানুষের শরীরের ক্ষতি করে। এতে খেলোয়াড়দের চোটের ঝুঁকি বাড়বে। ওদের পারফরম্যান্স খারাপ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। দ্বিতীয় সমস্যাটা অনেকটা মানসিক। কারণ, এতদিন ধরে বদ্ধ ঘরে থাকা, খাওয়া, ঘুমের সময় বদলানো, শরীরে অনেক পরিবর্তন আসা, মেজাজ ভাল না থাকা, এগুলো কাটিয়ে মাঠে ফেরা কঠিন। সে জন্যই আক্রান্ত খেলোয়াড়দের নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।

আরও পড়ুনঃবর্ণময় সুভাষ (১৯৫০ – ২০২২)

ওডিশা এফসি-র শক্তি কোথায় কোথায়?

উত্তরঃ ওদের ডিফেন্স, সেন্টার ব্যাক এবং জেরি, আরিদাই সুয়ারেজ, জোনাথাস ক্রিশ্চিয়ানের মতো ফরোয়ার্ড রয়েছে। এ দিক থেকে ওরা শক্তিশালী। ওদের আক্রমণ বেশ ধারালো এবং রক্ষণও শক্তিশালী। ম্যাচটা কঠিন হবে। তবে শুধু ওডিশা ভাল দল বলে নয়, পরিস্থিতির জন্যও।

অমরিন্দর কি কাল খেলার মতো ফিট রয়েছে? না অন্য কোনও গোলকিপার খেলবেন কাল?

উত্তরঃ আমরা নতুন গোলকিপারকে প্রস্তুত করছি। কারণ, অভিলাষের চোটটা গুরুতর। ক্লাবের সঙ্গে নতুন কিপারের ব্যাপারে কথা হয়েছে। তবে আপাতত আমরা অমরিন্দর ও অর্শকে তৈরি রাখছি। আমি খুশি যে দু’জনেই পরিশ্রম করছে। আমি খুশি যে, ওরা দু’জনেই ম্যাচে নামার জন্য তৈরি।

আরও পড়ুনঃসামাজিক প্রকল্পে মমতার প্রশংসা, হাজার কোটি ঋণ বিশ্ব ব্যংকের

অন্য সব দলই এটিকে মোহনবাগানের চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে। এটা কি আপনাদের বাড়তি সুবিধা দিতে চলেছে?

উত্তরঃ কতটা সুবিধা পাব জানি না। কারণ, পুরো দল যদি সুস্থ অবস্থায় আমার হাতে থাকত, তা হলে বলতাম সুবিধা পাব। এক্ষেত্রে ব্যাপারটা সে রকম নয়। দলের সবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আবার সকলে মিলে একসঙ্গে মাঠে নেমে পরিশ্রম করতে পারাটাই বেশি জরুরি।

শেষ প্রশ্ন, এই অবস্থায় শেষ চারে ওঠার ব্যাপারে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?

উত্তরঃ আমি আত্মবিশ্বাসী। কারণ, আমাদের দলটা খুব ভাল। আমার কাছে এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ, ওরা প্রত্যেকদিন উন্নতি করুক। সময়টা কঠিন। তবে গত দুদিন ধরে দল অনুশীলন করছে। সবাই পরিশ্রম করতে ইচ্ছুক। এটা খুবই ভাল ব্যাপার।