জুলাই 6, 2024
Latest:
ক্রীড়া

দল ঘুরে দাঁড়াবে বেঙ্গালুরু ম্যাচের আগে এখনও আশাবাদী স্টিফেন

স্পোর্টস ডেস্ক, এনএফবিঃ

ভাল খেলেও জয় অধরা থাকছে ইস্টবেঙ্গল এফসি-র। এমনটা হচ্ছে তাদের ভুলের জন্যই, মনে করেন দলের হেড কোচ স্টিফেন কনস্টান্টাইন। তাঁর মতে, তাঁরা যতক্ষণ না ভুল করছেন, ততক্ষণ তাঁদের হারানো কঠিন। সেই ভুলগুলোই প্রতি অনুশীলনে শোধরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান কোচ। শুক্রবার বেঙ্গালুরুতে সুনীল ছেত্রী, রয় কৃষ্ণাদের বিরুদ্ধে নামছে লাল-হলুদ শিবির।

এ দিন লাল হলুদ কোচ বেঙ্গালুরু দলকে নিয়ে জানালেন, “ওরা বড় বাজেটের দল। ওদের একটা সেট দল রয়েছে। ওদের কোচ নতুন। কিন্তু ওঁর ভাল অভিজ্ঞতা আছে। আইএসএলের সব দলের মতোই ওরাও যথেষ্ট ভাল দল। এই লিগে কোনও সহজ ম্যাচ হয় না। নর্থইস্টের বিরুদ্ধে ম্যাচটা মোটেই সোজা ছিল না। আমরা জেতার পরে সবাই আশ্বস্ত হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু প্রথমার্ধে ওদের একটা শট ক্রসবারে লাগে। কমলজিৎ দারুন সেভ করেছিল। কিন্তু সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেনি কেউ। ৩-১-এর স্কোর দেখে মনে হতে পারে, ম্যাচটা সহজেই জিতেছি আমরা। কিন্তু এর পিছনে অনেক পরিশ্রম আছে। আমাদের এই দলটার মধ্যে ফাইটিং স্পিরিট আছে। কোনও দলের পক্ষেই টানা কুড়িটা ম্যাচ জেতা সম্ভব না। আমাদের পক্ষেও নয়। কারণ, আমরা নতুন দল। আমরা ভবিষ্যতের কথা ভেবে এগোচ্ছি। দলের ছেলেরা প্রতি ম্যাচেই নিজেদের উজাড় করে দিয়েছে। সবার মতো আমরাও ভুল করেছি। তবে খেলোয়াড়দের মানসিকতা নিয়ে আমি খুশি। এর চেয়ে বেশি আর কী চাই? ভুলের সংখ্যা কমানো প্রয়োজন।”

বিপক্ষের সুনীল ছেত্রীকে নিয়ে স্টিফেন জানালেন, “প্রত্যেক দলের জন্যই আলাদা আলাদা পরিকল্পনা থাকে। প্রতিপক্ষকে নিয়ে আমরা চর্চা করেছি। ওরা কী কী করতে পারে, সেটাও আমরা জানি। কী করে ওদের আটকাব-সেটাই আসল প্রশ্ন। আমাদেরও ভাল খেলতে হবে। আমরা দলে বা খেলায় খুব বেশি কিছু পরিবর্তন আনার পক্ষপাতী নই। অন্যরা আমাদের জন্য নিজেদের পাল্টাক। পরের সপ্তাহে যেমন আমাদের ম্যাচ ওড়িশার বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচের জন্য প্রস্তুতির একটা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে।”

“আমরা তো সব মিলিয়ে দুটো ম্যাচ ঘরের মাঠে খেলেছি। তার মধ্যে একটাও জিততে পারিনি। নর্থইস্টের বিরুদ্ধে জেতার পরে হেডলাইন হয়, অবশেষে আমরা জয় পেলাম। সেটা ছিল আমাদের তৃতীয় ম্যাচ। এমন নয় যে, টানা দশটা বা পনেরোটা ম্যাচে আমরা জিততে পারিনি। মাত্র পাঁচটা ম্যাচের মধ্যে একটাতে জিতেছি আমরা। ঘরের মাঠ হোক বা বাইরের, আমার কাছে জয়-জয়ই। এত প্রস্তুতি, এত বিশ্লেষণ, আলোচনা- এ সব হারার জন্য নয়। আমরা জিততেই চাই। তাই বলে সব ম্যাচে জেতা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। হয়তো বছর দু’য়েক পরে সেটা সম্ভব হবে। আর্সেন ওয়েঙ্গারের মতো কোচও প্রথম মরসুমে সব ম্যাচ জিততে পারেনি। আমরা যতক্ষণ না নিজেরা ভুল করছি, ততক্ষণ আমাদের হারানো কঠিন। চেন্নাইনের বিরুদ্ধে আমরাই নিজেদের হারিয়েছি। এটা বন্ধ করতে হবে। আমাদের শিখতে হবে, কী করে জিততে হবে। কী করে হারতে হবে, তা নয়।”

এরপর স্টিফেন জানালেন,
“এ বারে দল থেকে শুরু করে সব কিছুই নতুন। গত মরশুমে সব মিলিয়ে একটা ম্যাচ জিতেছিল ক্লাব। এর পরে আর একটা ম্যাচ জিতলে কি সবাই খুশি হবে? গতবার একটা ম্যাচ জিতেছি বলে এ বার আর একটার বেশি ম্যাচ জেতার দরকার নেই, এটা কখনওই বলছি না আমি। হয়তো শুক্রবার, বা তার পরে। বা এমনও হতে পারে টানা ছ’টি ম্যাচে জিতলাম। এই লিগে সবরকম হতে পারে। কিন্তু সমর্থকেরা মনে করছে পাঁচটা ম্যাচেই আমরা দল তৈরি করে ফেলেছি। আসলে তা নয়। আমাদের এখনও ভিত শক্ত করতে হবে। অনেক ভাল জায়গায় যেতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। কিন্তু তার জন্য অনেক কাজ বাকি, যেটা রাতারাতি হওয়া সম্ভব নয়। সমর্থখদের এটাই বুঝতে হবে। তাঁদের শুধু দলকে সমর্থন দিলে হবে না, সময়ও দিতে হবে।
আমরা হেরেছি বটে, কিন্তু কেউ আমাদের কোণঠাসা করে হারাতে পারেনি। চার-পাঁচ গোলে কোনও ম্যাচেই হারিনি। সব ম্যাচেই দুই দললের মধ্যে ভাল লড়াই হয়েছে। তার মানেই আমরা ঠিক দিকে এগোচ্ছি। যদি আমরা কোনও গোলের সুযোগ তৈরি করতে না পারতাম বা গোলমুখী শট নিতে না পারতাম, তা হলে আমিই হয়তো দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে চলে যেতাম। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে আমরা যে পারফরম্যান্স দেখিয়েছি, প্রথম ম্যাচের তুলনায়, তা খুবই খারাপ। শুক্রবারের ম্যাচের আগে আমাদের সেই জায়গাটা ঠিক করে নিতে হবে।”

গোলের সামনে গিয়ে গোল করতে পারছেন না লাল হলুদ স্টাইকাররা। লাল হলুদের ব্রিটিশ কোচ জানাচ্ছেন, “আমরা অনুশীলনে নিয়মিত এটা করছি। দলের অনেক ছেলেই অনুশীলন শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও নিজেরাই অনুশীলন করতে থাকে। এটা আমার কাছে একটা ইতিবাচক ব্যাপার। দু’দিন আগেও দেখেছি অনুশীলনের পরে কেউ ক্রসিং, কেউ ফিনিশিং অনুশীলন করছিল, প্রায় আট-ন’জন। আশা করি, এর ফলে অনেক উপকার পাবে ওরা।”