পরিকল্পনা করে খেলেই সাফল্যঃ রিভেরা

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

পরিকল্পনা অনুযায়ী দলের ছেলেরা খেলতে পেরেছে বলেই অবশেষে জয় এল লাল-হলুদ শিবিরে, এমনই মনে করেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের নতুন স্প্যানিশ হেড কোচ মারিও রিভেরা। তাঁর মতে, দলের প্রত্যেকেই এ দিন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখানোয় দল জয়ের মুখ দেখতে পায়। তবে রিভেরা মনে করেন, এখনও অনেক কাজ বাকি এবং সেজন্য তাদের ধাপে ধাপে এগোতে হবে। বুধবার ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কী বললেন তিনি, জেনে নেওয়া যাক।

হিরো আইএসএল অভিষেকেই দলকে জয় এনে দেওয়াটা আপনার কাছে কতটা বড় ব্যাপার?

উত্তরঃ আমাদের প্রত্যেকের কাছে এটা দারুণ ব্যাপার। দারুণ মুহূর্ত, যে মুহূর্তটা দেখার জন্য দলকে ১১টা ম্যাচে লড়াই করতে হয়েছে। অবশেষে জয় আসার পরে দলের মেজাজ এখন খুবই ভাল। সবাই খুব খুশি। দলের ছেলেরা এই মুহূর্তটা উপভোগ করছে। ওদের এটা প্রাপ্য।

আরও পড়ুনঃ মরশুমের প্রথম জয় পেলো এসসি ইস্টবেঙ্গল

এগারো ম্যাচের পরে দলকে প্রথম জয় এনে দেওয়ার জন্য ঠিক কী করলেন?

উত্তরঃ আমাদের হাতে আজ বেশি খেলোয়াড় ছিল না। বেশি পরিবর্তনও করতে পারিনি যে জন্য। ভাল ডিফেন্স করার দিকেই তাকিয়ে ছিলাম আমরা। এমন স্তরের ফুটবলে শক্তিশালী রক্ষণের জন্য এমন মানসিকতাই প্রয়োজন। আমরা জানতাম ওরা কিছু না কিছু ভুল করবে। আমরা ওদের সেই ভুলগুলোই কাজে লাগিয়েছি। এটা না করতে পারলে ম্যাচটা জিততে পারতাম না। আসলে পরিকল্পনা অনুযায়ী সব কিছু ঠিকঠাক হলে, একজন কোচের পক্ষে সেটা খুবই ভাল।

আপনার দল দুটো শট লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে এবং দুটো গোল করেছে। একেই কি আপনি টোটাল ফুটবল বলবেন?

উত্তরঃ আজকে একেই আমার টোটাল ফুটবল মনে হয়েছে। আমরা পরবর্তীকালে এই চেষ্টা করে যাব। আমাদের আজ অর্ধেক খেলোয়াড় হাতে ছিল। তবে ক্লিয়ার চান্স তৈরি করাটা খুবই জরুরি এবং আজ আমরা বিপক্ষের গোলকিপারের সামনে একাধিক ক্লিয়ার চান্স পেয়েছি। এ রকমই পরিকল্পনা ছিল আমাদের। তা বাস্তবায়িত হওয়ায় আমরা খুশি।

মহেশ ছাড়া দলের আর কার খেলায় আজ খুশি আপনি?

উত্তরঃ সবাই ভাল খেলেছে আজ। কোনও একজনের কথা বলব না। কারণ, মাঠে খেলোয়াড়রা যে মানসিকতা নিয়ে খেলেছে, তা অসাধারণ। আমরা কোনও ভুল করিনি। নিখুঁত ভাবে ডিফেন্স করেছি। বিরতিতে ড্রেসিংরুমে ছেলেদের কৌশল বদলাতে বলি। ওদের যে রকম বলেছিলাম, ওরা ঠিক সেরকমই করেছে। প্রথমার্ধে ওরা (গোয়া) আমাদের বিরুদ্ধে অনেক সুযোগ তৈরি করেছিল। কৌশল বদলে সেটা অনেক কমানো গিয়েছে। প্রত্যেকেই কৃতিত্বের অধিকারী। যারা কোয়ারেন্টাইনে ঘরবন্দি, তারাও যথেষ্ট উৎসাহ জুগিয়েছে ছেলেদের। তাই প্রত্যেকের কৃতিত্ব রয়েছে। পুরো দলেরই আজ এই জয় উপভোগ করার দিন। দু-একজনের কথা আলাদা করে বলতে পারব না।

শেষ প্রশ্ন, এই দলকে আরও ধারাবাহিক করতে হলে আর কী কী দরকার বলে মনে করেন?

উত্তরঃ আমাদের ধাপে ধাপে এগোতে হবে। আবার একটা নতুন ম্যাচ রয়েছে। প্রত্যেক দিনই এখন দেখতে হচ্ছে কোন খেলোয়াড়কে পাব বা কাকে পাব না। তার পরে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী তৈরি করে তুলতে হবে। যাতে আজ যে রকম পরিকল্পনা অনুযায়ী ছেলেরা খেলতে পেরেছে, যেন সেরকমই পারে তারা। আমাদের আরও জয় পাওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। সে জন্য আমাদের লড়তে হবে। ধাপে ধাপে এগোতে হবে। প্রত্যেকটা ম্যাচই উপভোগ করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ স্থগিত মোহনবাগান-কেরালা ম্যাচ

‘রক্ষণে গা ছাড়া মনোভাবই ডোবাল’

অন্য দিকে, এফসি গোয়ার কোচ ডেরেক পেরেইরা স্বীকার করে নেন যে, দলের রক্ষণের ভুলেই দু-দুটো গোল খেতে হয়েছে তাদের। এই সমস্যাটা যে তাদের সারা মরশুম ধরেই চলছে, তাও মেনে নেন তিনি। ম্যাচের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে যা বললেন, তার উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হল এখানে।

এসসি ইস্টবেঙ্গলের শক্তিশালী ডিফেন্সেই কি আপনারা আটকে গেলেন?

উত্তরঃ আমার মনে হয়, আমরা ওদের রক্ষণে ভাঙন ধরাতে পারিনি। বিশেষ করে যখন পিছিয়ে ছিলাম। দুটো ভুলের জন্য গোল খাই। বিশেষ করে সমতা আনার পরে আমাদের রক্ষণ আরও মজবুত হওয়া উচিত ছিল। রক্ষণে আরও একটা ভুল করে গোল খাই। ওরা খুব গভীর পর্যন্ত ডিফেন্স করে। আমরা আমাদের সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করেছি। তবে আমাদের আকাঙ্খিত ফল পাওয়ার জন্য এটা যথেষ্ট ছিল না। ওদের কৃতিত্ব দিতে হবে, দারুণ ডিফেন্স করার জন্য।

মাঝে মাঝে কোচ বদলের প্রভাব দলের ওপর ইতিবাচক ভাবে পড়ে বলে মনে করেন? আজ কি সেটাই আবার প্রমাণ হল?

উত্তরঃ আমার মনে হয়, সারা ম্যাচে আমরাই আধিপত্য বিস্তার করেছি। দুটো গোল ছাড়া ওদের তেমন কোনও সুযোগই দিইনি। আসলে নিজেদের গোলের সামনে আমাদের আরও কড়া নিয়ন্ত্রণ দরকার ছিল। জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠায় একটু তাড়াহুড়ো করতে গিয়েছিলাম। ওরাও খুব ডিপ ডিফেন্স করছিল। সব মিলিয়ে অন্য দিনের মতো আজকের দিনটা আমাদের ছিল।