পরিত্যক্ত প্লাস্টিক থেকে জ্বালানি তৈরির নয়া ভাবনা মাথাভাঙার শিক্ষকের

এনএফবি, কোচবিহারঃ

পরিত্যক্ত প্লাস্টিক গলিয়ে পেট্রোল ডিজেলের বিকল্প জ্বালানি তৈরি করে দেখিয়ে তাক লাগালেন মাথাভাঙা হাই স্কুলের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক মনোজ দে। বিশ্বের কাছে সব থেকে বড় উদ্বেগ পরিত্যাক্ত প্লাস্টিক। যে প্লাস্টিক প্রকৃতিতে মিশে না, আবার পোড়ালে বায়ু দূষণ হয়। তবে এ বার এই প্লাস্টিক থেকেই পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের যে বিকল্প জ্বালানি উৎপাদন করা যেতে পারে তা বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের সামনে এদিন হাতে কলমে করে দেখালেন মাথাভাঙা হাইস্কুলের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক মনোজ দে।
এ বিষয়ে মাথাভাঙা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চৈতন্য পোদ্দার জানান, পরিত্যক্ত প্লাস্টিক থেকে পেট্রোল ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের বিকল্প জ্বালানি উৎপাদন হলে পরিবেশের ক্ষতি কম হবে। পাশাপাশি যদি ভবিষ্যতে ব্যাপক ভাবে উৎপাদন করা যায়, তবে মানব জীবনে গতি আসবে বলে তিনি আশাবাদী।
অক্সিজেনবিহীন আবদ্ধ পাত্রে প্লাস্টিক ভরে এমন ভাবে উত্তপ্ত করা হয় যে, ভিতরের প্লাস্টিক গলে গিয়ে সরাসরি গ্যাসীয় পদার্থে পরিণত হয়। কিন্তু কখনওই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে না। এই গ্যাসীয় পদার্থকে ঘনীভূত করলে তা থেকে পাওয়া যায় ডিজেল, পেট্রোলের মতো জ্বালানি।
শিক্ষক মনোজ দে বলেন, ‘ প্রেসার কুকারে পলিথিন ভরে এয়ারটাইট করে ঢাকনা লাগিয়ে দিই। তারপর সেখানে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তাপ প্রয়োগ করি। তাপের ফলে পলিথিন গলে কেমিক্যাল রিয়্যাকশনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের বাষ্প উৎপাদন হয়। সে তেল ও গ্যাসের বাষ্প একসাথে মিশ্রিত হয়ে সেখান জ্বালানি গ্যাসের বাষ্প ঠান্ডা হয়ে তরলে রূপ নেয়৷ আর গ্যাস ঠান্ডা হলেও উপর দিকে উঠে যায়৷ এটা নিয়ে বাড়িতে পরীক্ষা নিরিক্ষা করার পর স্কুলে ছাত্র ছাত্রীদের হাতে কলমে করে দেখালাম।
এ কথা বলাই যায় যে, প্লাস্টিক দূষণ বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলির একটি। তবে বিজ্ঞানীরাও ছাড়বার পাত্র নন। তাঁরাও বিভিন্ন পদ্ধতিতে এই দূষণ কমানের চেষ্টা করছেন। এক সময় প্লাস্টিক ছিল বিজ্ঞানের অন্যতম বড় দান। প্লাস্টিকের মাহাত্ম্যে মানুষ ছিল মুগ্ধ। তারপর প্লাস্টিক বজ্র নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে মানুষের মধ্যেই। এবার হয়ত মনোজ বাবুদের মতো গবেষকদের হাত ধরেই প্লাস্টিক উদ্বেগ থেকে মুক্তি পাবে মানুষ।