এনএফবি, কলকাতাঃ
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এসএসসি গ্রুপ ডি নিয়োগেরও তদন্তভার হাতে তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তদন্ত এগোতেই ধরা পড়েছে বহু বেনিয়ম। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তদন্তে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে নিযুক্ত ১ হাজার ৬৯৮ জনের নিয়োগের ক্ষেত্রে অস্বচ্ছ্বতা সামনে এসেছে।
ইতিমধ্যেই এসএসসি এই প্রার্থীদের নাম, তাঁরা কোন স্কুলে নিয়োগ পেয়েছেন তা জানিয়ে তালিকা প্রকাশ করেছে। হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, তালিকা খতিয়ে দেখে ওই চাকরিপ্রার্থীদের নোটিস ধরাতে হবে শিক্ষা দফতরকেই। সেইমতো নির্দেশ কার্যকর করতে শুরু করেছে শিক্ষা দফতর। এসএসসি-র প্রকাশিত তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের মধ্যে সব থেকে বেশি অস্বচ্ছতা ধরা পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। সেখানে ৩৬০ জন অযোগ্য প্রার্থীর নাম রয়েছে। এর ঠিক পরেই রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর, এই জেলা থেকে ২৯৮ জন অযোগ্য প্রার্থীর নামের তালিকা প্রকাশ করেছে এসএসসি। তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান ১২৩ জন অযোগ্য প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর বাঁকুড়া, কোচবিহার, উত্তর ২৪ পরগনার মতো জেলাগুলি। এই জেলাগুলিতে কোথাও ১২৩ জন, কোথাও ১০০ জন, কোথাও আবার ১০৬ জনের অযোগ্য প্রার্থীর নামের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই তালিকায় কলকাতা থেকে ২০ জন অযোগ্য প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন। তবে ঝাড়গ্রামে সেই সংখ্যাটা শূন্য।
আলিপুরদুয়ার-৯ জন, বাঁকুড়া-১০০ জন, বীরভূম-৪৪ জন, বর্ধমান ১২৩ জন, কোচবিহার-১০৯ জন, দক্ষিণ দিনাজপুর-৪২ জন, দার্জিলিং-১ জন, হুগলি-৬৩ জন, হাওড়া ৫৬ জন, জলপাইগুড়ি-১৪ জন, কলকাতা-২০জন, মালদা-৭৮ জন, মুর্শিদাবাদ-৬৩ জন, নদিয়া-৩৬ জন, উত্তর ২৪ পরগনা-১০৬ জন, পূর্ব মেদিনীপুর-৩৬০ জন, পশ্চিম মেদিনীপুর-২৯৮ জন, পুরুলিয়া-২৯ জন, শিলিগুড়ি (সাব ডিভিশন)-৬ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-৮৮ জন, উত্তর দিনাজপুর-৪৯জন, ঝাড়গ্রাম-০।
উল্লেখ্য, স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় তদন্ত করে সিবিআই ১ হাজার ৬৯৮ জন প্রার্থীর নাম জানতে পেরেছে, যাঁদের ওএমআর শিটের তথ্য বিকৃত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তাঁদের সবার নাম, ঠিকানা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সেই তালিকা জমা পড়ার পর সেইদিনই ওই কর্মীদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিতে চেয়েছিল আদালত। কিন্তু রাজ্যের তরফে আপত্তি জানানো হয়। রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়, এদিন কাজ থেকে বসিয়ে দিলে বহু স্কুলে ঘণ্টা বাজানো, স্কুলের তালা খোলার লোক পাওয়া যাবে না। এ কথা শোনার পর আদালতের তরফে কোনও কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়নি। আপাতত ডিআই-দের ওই তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।