অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
করোনা আক্রান্ত সুরজিৎ সেনগুপ্তকে নিয়ে আতঙ্ক যেন কাটছেই না। গত বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার অবস্থার কোনো উন্নতিই সেভাবে নেই। এদিন দুপুরে হাসপাতাল থেকে জারি করা মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে বাইপাপ সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাঁকে। বাইপাপের সাপোর্টে ৯৮ শতাংশ অক্সিজেন স্যাচুরেশন মেনটেন করছেন তিনি। যা বুধবারও একই ছিল। তবে বাইপাপ খুলে নিলে সেটা ষাট শতাংশ হচ্ছে।
সুরজিৎ সেনগুপ্তের ছেলে স্নিগ্ধজিত সেনগুপ্ত বলেছেন, “বাবার শরীর এখনও তেমন উন্নতি নেই। আগের মতো একই রকম ক্রিটিকাল রয়েছে পরিস্থিতি। এখনও কিছু উন্নতি হয়নি। বাইপাপ সাপোর্টে রাখা হয়েছে বাবাকে। বাইপাপ সাপোর্টে রাখলে ৯৭ বা ৯৮ শতাংশ অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল মেনটেন হলেও নেমে আসছে।” আগের দিনও সুরজিৎ সেনগুপ্তর অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল ড্রপ করে। ৫৩ শতাংশে নেমে যায়। তবে বর্তমানে কিছুটা বেড়েছে এটা স্বস্তি দিচ্ছে।
গত রবিবার রাত্রে করোনার মৃদু উপসর্গ নিয়ে বাইপাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সুরজিৎ সেনগুপ্তকে। কোমর্বিডিটি রয়েছে ২০১১ সালের আগস্ট মাসে চারটি স্টেন্ট বসানো হয়েছিল তাঁর হৃদযন্ত্রে। মঙ্গলবার সুরজিৎ সেনগুপ্তের চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে রাজ্য সরকার।ক্রীড়ামন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসের এক বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রাক্তন উইঙ্গারকে দেখতে আসবেন করোনার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগীরাজ রায়। অরূপ বিশ্বাস ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পিয়ারলেস হাসপাতালের সিইও, প্রাক্তন ফুটবলার ও বিধায়ক মানস ভট্টাচার্য, বিদেশ বসু, সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং সুরজিৎ সেনগুপ্তের ছেলে স্নিগ্ধজিত সেনগুপ্ত। এ ছাড়াও ইস্টবেঙ্গলের তরফে ছিলেন দেবব্রত সরকার এবং মোহনবাগানের তরফে ছিলেন দেবাশীষ দত্ত। আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মেডিকেল বোর্ড তৈরি করার। তিন প্রধানের মধ্যে মোহনবাগানে তিনি প্রথম খেলেন। তারপর তাঁকে সই করানো হয় লাল-হলুদ শিবিরে। লাল-হলুদে এসে ঘরের ছেলে হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কলকাতার তিন প্রধানে দাপটে খেলেন। তবে ইস্টবেঙ্গলের ঘরের ছেলে হিসেবেই পরিচিত। বিখ্যাত পাঁচ গোলের নায়কও তিনি১৯৭০ থেকে ১৯৭৫ এবং ১৯৭৭-এর কলকাতা ফুটবল লিগ, ছ’বার আইএফএ শিল্ড, তিন বার ডুরান্ড জয়ের মুকুট উঠেছিল ইস্টবেঙ্গলের মাথায়। স্বপ্নের দৌড়ে চলছিল লাল-হলুদ বাহিনীর। ১৯৭৫ সালের ডার্বিতে (আইএফএ শিল্ডের ফাইনাল) ইস্টবেঙ্গল ৫-০ গোলে হারিয়েছিল মোহনবাগানকে। ঐতিহাসিক এই ম্যাচের পাঁচ মিনিটে গোল করেই দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত। ১৯৭৭-৭৯ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। হাসপাতাল থেকে উনার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।