এনএফবি, কলকাতাঃ
বালিগঞ্জে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএম প্রার্থী সায়রা হালিম পরাজিত হয়েছেন। জয় পেলেও তুলনামূলক বিচারে ব্যবধান কাঁটায় বিদ্ধ রাজ্যের শাসক দল। পূর্ববর্তী নির্বাচনের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে জয়ের ব্যবধান। একুশের ভোটে ৭৫ হাজার ৩৩৯ ভোটে বিজেপিকে হারিয়েছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অকস্মাৎ প্রয়াণে বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রটি ফাঁকা হয়। ওই কেন্দ্রে পদ্ম শিবির থেকে ঘাসফুলে যোগ দেওয়া বাবুলকে প্রার্থী করে তৃণমূল। ২০২১ সালে এই বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি ভোট গিয়েছিল প্রয়াত সুব্রতর ঝুলিতে সেখানে বাবুলের জয়ের ব্যবধান ১৯ হাজার ৯০৪।
উপনির্বাচনে সাধারণভাবে ভোট কম পড়ে। একটা বিধানসভা কেন্দ্রের জয় পরাজয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক ক্ষমতায় কোন হেরফের না হওয়ায় মানুষের আগ্রহ থাকে না। এই বিষয়টি স্মরণে রেখেও প্রাথমিক অঙ্ক বলছে বালিগঞ্জের প্রায় ৫১ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটে বাগ বসিয়েছে সিপিআইএম। গত বিধানসভায় সিপিআইএম প্রার্থী ফুয়াদ হালিমের প্রাপ্ত ভোটের পরিসংখ্যান ছিল মাত্র ৫.৬১ শতাংশ, সেখানে এবারের নির্বাচনে ফুয়াদ জায়া সায়রার ভোট শতাংশও ৩০.১ শতাংশ। অর্থৎ বছর ঘুরতে না ঘুরতেই প্রায় ২৫ শতাংশ ভোট বৃদ্ধি বাম শিবিরের। দশম রাউন্ড পর্যন্ত চতুর্থ স্থানে শেষ পর্যন্ত ১২.৮ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান দখল করে মুখরক্ষা করেছে বিজেপি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন বাবুলের অতীত রাজনৈতিক কার্যকলাপের খেসারত দিল তৃণমূল। সংখ্যালঘুরা সিপিএমের পক্ষেই তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছে। তবে ব্যবধান কমার কারণ হিসাবে ভোটদানের হারকেই ভিলেন বানিয়েছেন জেলা তৃনমূল নেতৃত্ব। রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস কুমার সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, “ উপনির্বাচনে ভোট খুব কম পড়েছে। আগের নির্বাচনে যেখানে ভোট পড়েছিল ৬৪ শতাংশ সেখানে এবারের নির্বাচনে ভোট পড়েছে মাত্র ৪১ শতাংশ।“
বিজেপিতে থাকাকালীন বাবুলের মুসলিম বিদ্বেষী মন্তব্য নিয়ে প্রচার শুরু করেছিল বাম শিবির। বাবুলকে প্রার্থী করা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল ইমাম সংগঠনের প্রধান মহম্মদ ইয়াহিয়াও। চলেছিল ‘ নো ভোট টু বাবুল’ প্রচার। তার প্রভাব ইভিএমে পড়েছে বলেই মত অধিকাংশের। ভোটের ফল প্রকাশের পর ইয়াহিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “বালিগঞ্জের ভোটাররা আমাদের কথা শুনেছেন। ভোটারদের একটা অংশ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবার আত্মসমীক্ষা করা উচিৎ।“