জুলাই 8, 2024
Latest:
ক্রীড়া

ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে যেন আমার মৃতদেহ না ঢোকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানালেন তুলসীদাস বলরাম

এনএফবি, স্পোর্টস ডেস্কঃ

পিকে, চুনী,বলরাম ভারতীয় ফুটবলের তিনমূর্তি। পিকে বন্দোপাধ্যায়, চুনী গোস্বামী প্রয়াত হলেও তুলসীদাস বলরাম আছেন। তবে ফুটবল থেকে অনেক দূরে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন অনেক অভিমানে। কিন্তু বাংলার ফুটবল তাকে ভুলে যায়নি। আর ভোলেনি বলেই বলরাম ‘The Hero of Indian Football‘ নামে বলরামের আত্মজীবনী লিখেছেন সাংবাদিক শ্যামসুন্দর ঘোষ।

এদিন কলকাতা প্রেস ক্লাবে প্রকাশ পেলো সেই বই। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার সুকুমার সমাজপতি বিশ্বজিৎ ভট্টাচাৰ্য। শরীরিক অসুস্থতার জন্য বলরাম আসতে পারেননি। তিনি তার উত্তরপাড়ার বাড়ি থেকে অনলাইন সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন। আর এদিন ইস্টবেঙ্গল ক্লাব নিয়ে ক্ষোভ ফেটে পড়লো ভারতীয় ফুটবলের এই জাদুকরের। তিনি বললেন,আমি সারাজীবন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে ভালোবেসে খেলেছি। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ভালোবেসে খেলেছি। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। কিন্তু একটা বেনিফিট ম্যাচ আমার নামে হওয়ার কথা ছিল। ইস্টবেঙ্গল কর্তা পল্টু দাস তখন আমার নামের সঙ্গে প্রশান্ত সিনহার নাম যুক্ত করা হলো। বলা হলো বলরাম আগে ছিল এখন তো আর নেই। সেই বিষয়টা আমার কাছে খুব অপমানজনক ছিল। আমি জীবনে ভুলব না। তখনও বলেছিলাম এখনও বলছি আমার মৃতদেহ যেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে না ঢোকানো হয়।’ওরা একবারও বলল না বলরাম কত অবদান রেখেছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে। ভীষণ কষ্ট পেয়েছি।বর্তমানে বাংলা ফুটবল নিয়ে বলরাম জানালেন, বর্তমানে বাংলায় কোনো কর্তা ফুটবল জানেও না কেউ বোঝেও না কেউ দেখছেও না। ফুটবল বোঝে এমন লোক আনতে হবে প্রশাসনে।’ তুলসীদাস বলরাম হায়দরাবাদ থেকে এসে কলকাতায় একাত্ব হয়ে গিয়েছেন। ইস্টবেঙ্গলে ,ছবছর খেলায় পাশাপাশি সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার হয়েও খেলেন ।

বলরাম
নিজস্ব চিত্র

পিকে ব্যানার্জি ও তুলসীদাস বলরামের কলকাতা মাঠে সেরা সময় ১৯৫৭ থেকে ১৯৬২। ১৯৫৮ সালে সার্ভিসের বিরুদ্ধে বাংলা এক গোলে জিতেছিল। গোলটি করেছিলেন বলরাম। সেটা ছিল দু’বছর বাদে বাংলার সন্তোষ ট্রফি লাভ। বলরাম হায়দ্রাবাদের হয়ে ১৯৫৬ সালে ফাইনালে শুধু খেলেছিলেন তা নয় জীবনে প্রথম সন্তোষ ট্রফি ফাইনালে বোম্বের বিরুদ্ধে খেলা ভাঙ্গার দশ মিনিট আগে গোল শোধ করেছিলেন ।আর রিপ্লে ফাইনালে রহিম স্যারের প্রশিক্ষণে হায়দরাবাদের প্রথম সন্তোষ ট্রফি পাওয়ার ক্ষেত্রে দলের ৪-১ গোলে জয়লাভের ক্ষেত্রে বলরাম চারটি গোলের মধ্যে দুটি গোল করেছিলেন তাও রাইট ইন পজিশনে। ফাইনালের প্রথম দিন লেফট আউট খেলেছিলেন। কিন্তু ফিরতি ফাইনালে নারায়ণ খেলতে না পারায় রহিম সাহেবের নির্দেশে তাকে রাইট ইন পজিশনে খেলতে হয়েছিল।
১৯৫৭ সালে ইস্টবেঙ্গলে এসে প্রথম বছর সন্তোষ ট্রফি খেলা থেকে তিনি যে বঞ্চিত হয়েছিলেন, এম দত্ত রায়ের রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন সেটাও বইতে লেখা আছে। আর পরের বছর ১৯৫৮ সালে বাংলার হয়ে প্রথম সন্তোষ ট্রফি ফাইনালে দলের একমাত্র গোলটি করেছিলেন সার্ভিসের বিরুদ্ধে। পরের বছর ফাইনালে বোম্বের বিরুদ্ধে গোল করেছিলেন। তার অধিনায়কত্বে দু’বছর বাদে বাংলা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ১৯৬২,৬৩ সালে। সেবার পিকে ব্যানার্জি ,চুনি গোস্বামী, জার্নাল সিং ও সুকুমার সমাজপতি দলে ছিলেন না।

দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে অধিনায়ক ধাওয়ান – NF Bangla Private Limited (newsfrontbangla.com)

লেখক শ্যামসুন্দর ঘোষ জানালেন,বলরামের আত্মজীবনি লেখার মূল লক্ষ্য ছিল তার জীবনের কথা সবার সামনে তুলে ধরা । পিকে চুনি গোস্বামী বলরামের চেয়ে এগিয়ে এটা মিথ না রিয়ালিটি। এতদিন মানুষটাকে কেউ মনে রাখেনি কিন্তু নতুন প্রজন্মর জানার দরকার তুলসীদাস বলরামকে।’ ক্রীড়া প্রশাসক শ্রেনিক শেঠ জানালেন, এটা বড় পাওনা আমরা যারা ফুটবল ভালোবাসি তাঁদের জন্য। উনি শুধু বড় ফুটবলার না খুব বড় মানুষও। অনেকেই উনার সম্পর্কে জানে না উনার লড়াই জানে না। সেটা এই বইতে পাওয়া যাবে। উনাকে অনেক সম্মান পাওয়া উচিত ছিল। আশা করছি এই বইয়ের মাধ্যমে যথাযথ সম্মান জানানো যাবে।’