পয়লা বৈশাখে উদ্বোধন পুড়ে যাওয়া উয়াড়ী ক্লাবের

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

খুশির খবর কলকাতা ময়দানে। নতুন করে ঝাঁ চকচকভাবে সেজে উঠছে ১২২ বছরের প্রাচীন ক্লাব উয়াড়ী অ্যাথলেটিক ক্লাব।
২০১৯ সালের ১ এপ্রিল ভোর রাতে ভয়ঙ্কর আগুনে উয়াড়ী ক্লাব তাঁবুর পুরোটাই পুড়ে গিয়েছিল। পুড়ে যাওয়ার পর প্রায় তিন বছর তাঁবুটি কঙ্কাল হয়ে পড়েছিল। কর্তারা লড়াই করেছেন এতদিন। নানাভাবে অনেক কষ্টে টাকার জোগাড় করেন। নিজেরাই টাকার ব্যবস্থা করে নিজেদের ক্লাব তাঁবু গড়ার কাজ শুরু করেন।সবুজ ও সাদা রংয়ের ঝকঝকে তাঁবুর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। পয়লা বৈশাখে উদ্বোধন হবে নতুন তাঁবুর। ক্লাবে ঢুকলেই লাল রঙের উয়াড়ী লেখা। তাঁবুর ভেতর এক নজরে ঢুকলে মনে হবে কোনো বড় ক্লাবে ঢুকেছেন। রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু অনেকটা সাহায্য করেছেন এই ক্লাব নতুনভাবে গড়ে তুলতে। পয়লা বৈশাখের তিনিও আমন্ত্রণ পেয়েছেন। এছাড়া এই ক্লাবে খেলে যাওয়া নানা প্লেয়াররাও থাকবেন।ক্লাবের ফুটবল সচিব ইন্দ্রনাথ পাল জানাচ্ছেন, “সেদিনের সেই আগুন লাগার দিন আমরা স্বপ্নতেও ভুলতে পারবো না। ভোর রাতে খবর পেলাম, ক্লাবে এসে দেখি সব শেষ। আমরা এবার নতুন করে এগোতে চাইছি। ক্লাবকে সবাই আধুনিকতার মোড়কে দেখতে পারবেন।ক্লাবে এসির ব্যবস্থা থাকছে। কর্পোরেটভাবে আমরা চলতে চাইছি।সবার সাহায্য প্রয়োজন।” তবে ক্লাবে নতুন তাঁবু ফিরে পেলেও পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে উয়াড়ীর পুরনো ছবি ও নথি। ক্লাবে প্রশাসনিক সমস্যা এখনও আছে। তবে আপাতত সেই সব সমস্যা ভুলে ক্লাব সদস্যরা এখন নতুন তাঁবু ঘিরেই মেতে আছেন। উল্লেখ্য, উয়াড়ী অ্যাথলেটিক ক্লাব আসলে বাংলাদেশের। পরবর্তীকালে পাখী সেন,পঙ্কজ গুপ্ত, দীণেশ দত্ত সহ বেশ কিছু কর্তারা কলকাতার ময়দানে উয়াড়ী শুরু করেছিলেন। একটা সময় এপার বাংলায় এই ক্লাবটি বাংলাদেশের উয়াড়ীর শাখা হিসেবেই দেখা হত। শুধু তাই নয়, ক্লাবটি বাংলাদেশের বলেই একটা সময় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মাঠে কিছু দিনের জন্য উয়াড়ীর নামে একটা গ্যালারিও ছিল। অতীতে কলকাতা ফুটবল লিগে তিন প্রধান ক্লাবের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিত এই উয়াড়ী। ১৯৪৭ এর ২১ মে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ময়দানে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল উয়াড়ী। এই ক্লাব থেকে বহু ফুটবলার উঠে এসেছেন।এখন দেখার কর্পোরেট নির্ভর ক্রীড়াক্ষেত্রে নতুন সাজের ক্লাব কীভাবে নিজেদের মেলে ধরে!